১৯৬২: দ্য ওয়ার ইন দ্য হিলস
(ওয়েব সিরিজ়)
পরিচালনা: মহেশ মঞ্জরেকর
অভিনয়: অভয়, মাহি, সুমিত, অনুপ, আকাশ, হেমল
৪/১০
ভারত-চিন যুদ্ধ (১৯৬২)। দেশপ্রেম দেখানোর একটি সুবর্ণ সুযোগ। কিন্তু হটস্টারের সিরিজ় ‘১৯৬২: দ্য ওয়ার ইন দ্য হিলস’ যুদ্ধের মোড়কে দেখাল একটি প্রেমের গল্প। সেলুলয়েড, ছোট পর্দায় এমন প্রেম অনেক বার দেখেছেন দর্শক। দশটি পর্বের সিরিজ়ে লাভ স্টোরিকে মুখ্য রাখতে গিয়ে, পুরোদস্তুর যুদ্ধ স্থান পেয়েছে শেষের মাত্র তিন-চারটি পর্বেই!
হিন্দি ইন্ডাস্ট্রির অনেক পরিচালকই ইদানীং ওয়েব সিরিজ়ের নির্দেশনা দিচ্ছেন। কিন্তু দু’টি মাধ্যমের ভাষায় যে আকাশ-পাতাল তফাত, গল্প বলায় সেই বিভাজন স্পষ্ট নয়। মহেশ মঞ্জরেকর পরিচালিত এই সিরিজ়ের প্রথম দু’টি পর্ব দেখলে মনে হতে পারে, এটি ‘দবং’ ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির কোনও গল্প। অথচ ভারত-চিন যুদ্ধের মতো বিতর্কিত পর্ব নিয়ে দেখানোর উপাদান কম ছিল না। কিন্তু যুদ্ধ, রাজনীতি বা ইতিহাস কোনওটাই এই সিরিজ়ের পাখির চোখ নয়। রিয়্যালিজ়ম বর্জিত সিরিজ়ে নেহাত বালখিল্যের মতো যুদ্ধ এসেছে ত্রিকোণ প্রেম, জওয়ানদের গ্রাম্য-সরল জীবনযাপনের ফাঁকে।
মেজর সুরজ সিংহ (অভয় দেওল) এবং তার সি-কোম্পানির জওয়ানরা এই যুদ্ধের নায়ক। ১৯৬২-র কিছুটা সময় আগে থেকেই হিমালয়ের সীমান্ত বরাবর কয়েকটি অঞ্চল নিয়ে উত্তপ্ত ছিল ভারত ও চিনের তরজা। তারই ফলস্বরূপ কখনও ভারতের ‘ফরোয়ার্ড পলিসি’, কখনও বা চিনের আগ্রাসন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সিরিজ়ের সবটাই ফিকশন। সেই সময়ের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুকে দেখানো হলেও আগাগোড়া তাকে ‘দ্য প্রাইমমিনিস্টার’ বলে সম্বোধন করা হয়েছে।
সেই সি কোম্পানির জওয়ান কিষণ (আকাশ তোসার) এবং কর্ণ (রোহন গানদোত্রা) এবং তাদের দু’জনের প্রেম রাধা (হেমল ইঙ্গল)। এই ত্রিকোণ প্রেম, তাদের ভুল বোঝাবুঝি, জাতপাতের কারণে বিয়েতে বাধা...সিরিজ়ের সিংহভাগ জুড়ে স্থান পেয়েছে। অন্য আর এক জওয়ান রাম কুমার (সুমিত ব্যাস)। চিনা সেনাদের সামনে তার মেজাজ হারানোর খেসারতে বেঘোরে প্রাণ যায় আর এক জওয়ান গোপালের। প্লট আবর্তিত হয়েছে এমন নানা ঘটনাকে কেন্দ্র করে।
সিরিজ়ের প্রাপ্তি বলতে অভয় দেওল এবং মাহি গিল। ‘দেব ডি’র পরে তাঁদের জুটি উস্কে দেয় দর্শকের নস্ট্যালজিয়া। অনুপ সোনি পার্শ্বচরিত্র হিসেবেই রয়ে যান। মরাঠি ছবি ‘সাইরাট’খ্যাত অভিনেতা আকাশের পেশিবহুল শরীর দেখাতে পরিচালক কোনও ত্রুটি রাখেননি। সাধারণত কৌতুক চরিত্রের অভিনেতা সুমিতকেও জওয়ানের ভূমিকায় বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়।
আসলে কয়েকজনকে বাদ দিয়ে স্বল্প বা অল্প পরিচিত মেগা-কাস্টের এই সিরিজ়ে অভিনয় কারও মন্দ নয়। চিনা মেজরের চরিত্রে ময়াং চ্যাং-ও ভাল। কিন্তু চারুদত্ত আচার্যের লেখা সারবত্তাহীন চিত্রনাট্য, দুর্বল সিজিআই, নাটুকে সংলাপ এবং একাধিক গান এই সিরিজ়ের আবহ তৈরিই করতে পারে না।
জওয়ানদের ট্র্যাজেডিতে নিহিত থাকে চিরন্তন আবেগের ফল্গুধারা। তা দেখানোর জন্য আলাদা করে নাটকীয়তার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু গোটা সিরিজ় সেই ভরসায় বানিয়ে ফেললে, দর্শকের জন্য তা নেহাত ট্র্যাজেডির নামান্তর!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy