Advertisement
E-Paper

রহস্য আর আবেগের হাত-ধরাধরি

ফিলাডেলফিয়ার ছোট্ট সাবআর্ব ইস্টটাউন হঠাৎই ত্রস্ত হয়ে ওঠে একের পর এক তরুণী নিখোঁজ হয়ে যাওয়ায়।

সায়নী ঘটক

শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০২১ ০৬:০২
Share
Save

টানটান রহস্য উন্মোচনের চেয়েও যেখানে বড় হয়ে ওঠে তার নেপথ্যে থাকা চরিত্রদের জার্নি, অতর্কিত ধাক্কা যখন উঠে আসে পরিবারের অন্দর থেকেই... সেটা শুধু আর একটা সাধারণ ক্রাইম ড্রামা হয়ে রয়ে যায় না। অপরাধকে ছাপিয়ে যায় তার কেন্দ্রে থাকা যন্ত্রণা। আর তা খুঁড়ে বার করার মধ্য দিয়ে এক নারী খুঁজে পায় নিজেকে। এই উত্তরণের গল্পই বলে সাত পর্বের এইচবিও সিরিজ় ‘মেয়ার অফ ইস্টটাউন’। ডিজ়নি প্লাস হটস্টারে স্ট্রিমিং হওয়া এই সিরিজ়ে আরও একবার স্বমহিমায় চোখ-মন-মাথা ধাঁধিয়ে দিলেন কেট উইন্সলেট। জমাট চিত্রনাট্যকে পূর্ণতা দিয়েছে তাঁর অনবদ্য অভিনয়।

ফিলাডেলফিয়ার ছোট্ট সাবআর্ব ইস্টটাউন হঠাৎই ত্রস্ত হয়ে ওঠে একের পর এক তরুণী নিখোঁজ হয়ে যাওয়ায়। রহস্যের সুরাহা করতে ব্যর্থ স্থানীয় পুলিশ, গোয়েন্দা বিভাগ। ডিটেকটিভ মেয়ারও (কেট) বছরভর চেষ্টা করেও নিরুদ্দিষ্টদের সন্ধান পায় না। এরই মধ্যে শহরে ঘটে যায় আরও এক তরুণীর রহস্যমৃত্যু। তদন্তে নেমে একের পর এক অপ্রিয় সত্যির পর্দা খুলে যেতে থাকে। পাশাপাশি নিজের সঙ্গেও লড়াই জারি থাকে মেয়ারের। মানসিক ভাবে অসুস্থ, নেশাসক্ত ছেলের আত্মহত্যার জন্য নিজেকে ক্ষমা করতে পারেনি সে। নাতিকে নিয়ে কাস্টডি ব্যাটলেও ক্লান্ত। উপরন্তু ভেঙে গিয়েছে তার নিজের বিয়ে। স্বামী নতুন সংসার পেতেছে প্রায় তার পাশের বাড়িতেই। প্রতি মুহূর্তে ব্যর্থতা, প্রত্যাখ্যান, দোষারোপের সম্মুখীন হতে থাকা মেয়ার নিজেকে টেনে নিয়ে এগিয়ে চলে। সত্যিটা খুঁজে বার করার জেদ তাকে থামাতে পারে না। রহস্যের পর্দা শেষে সরে যায়, বলাই বাহুল্য। তবে সেখানেই শেষ হয়ে যায় না গল্প। মেয়ারের জন্য শেষ পর্বে অপেক্ষা করে থাকে একটা ধাক্কা। যার অভিঘাত চমকে দেয় দর্শককেও।

মেয়ার অফ ইস্টটাউন (ওয়েব সিরিজ়)

পরিচালনা: ক্রেগ জ়োবেল

অভিনয়: কেট উইন্সলেট, জুলিয়েন নিকলসন, গাই পিয়ার্স, জিন স্মার্ট

৮/১০

কেট উইন্সলেট স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, পোস্টার বা অন্য কোথাও তাঁর বলিরেখা যেন ঢাকা দেওয়া না হয়। সিরিজ় জুড়ে তাঁর অসংখ্য ক্লোজ়-আপই বলে দেয়, ‘এজিং গ্রেসফুলি’ কাকে বলে! ‘দ্য রিডার’-এ যেমন নিজেকে ছাপিয়ে গিয়েছিলেন অভিনেত্রী, এই সিরিজ়ে কেটের অভিনয় তা মনে করিয়ে দিতে পারে আরও একবার। সর্বস্ব দিয়ে তিনি মেয়ার অফ ইস্টটাউন হয়ে উঠেছেন। ঘরে-বাইরে প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারা, ‘ভাল মা’ হয়ে উঠতে না পারার গ্লানি বয়ে বেড়ানো এক ডিটেকটিভ হয়েও আপস করে না সে। সিরিজ় জুড়ে কেটের অভিব্যক্তিকে গ্রাস করে থাকে এক অদ্ভুত বিষাদ। শেষ দৃশ্যে নিজের মুখোমুখি দাঁড়ায় মেয়ার। তবে সে দৃশ্যে দর্শককে মেয়ারের মুখোমুখি দাঁড় করানো হয়নি, ইচ্ছে করেই।

দর্শকের জন্য সুতো যেমন ছাড়া হয়েছে, রহস্য গোটানোর সময়ে এসেছে একের পর এক চমক। তদন্তের প্রকৃতি একটু ওল্ড স্কুল। স্মার্ট ফোনের যুগে বয়ান রেকর্ডের সময়ে ডিটেকটিভরা নোট নেয় কাগজ-কলমে! ক্ষুরধার বিশ্লেষণ নয়, বরং কতকটা কার্য-কারণ সন্ধানের মধ্য দিয়েই জট ছাড়ায় মেয়ার। তার সঙ্গে সঙ্গে দর্শকও।

মায়ের (জিন স্মার্ট) সঙ্গে মেয়ারের দৃশ্যগুলি যতটা খুনসুটির ও রাগারাগির, ক্ষেত্রবিশেষে ততটাই গভীর ও মর্মস্পর্শী। মেয়ারের প্রেমিকের চরিত্রে গাই পিয়ার্সের উপস্থিতি ভাল লাগে। মেয়ারের প্রিয় বন্ধু লরির ভূমিকায় অনবদ্য জুলিয়ান নিকলসন। ডিটেকটিভ কলিন জ়েবেল ও মেয়ারের ছোট্ট কেমিস্ট্রিও খাসা বুনেছেন সিরিজ়ের লেখক ব্র্যাড ইঙ্গলসবি। তিনিই এই শোয়ের ক্রিয়েটর। মুক্তির আগে নির্মাতারা বলেছিলেন, ‘মেয়ার অফ ইস্টটাউন’ শুধুই একটি হুডানইট থ্রিলার নয়। কেন বলেছিলেন, তার জবাব খোদ সিরিজ়টিই।

Web Series review Kate Winslet

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।