সালটা ২০১২। কর্ণ জোহরের ছবির দৌলতে নতুন প্রজন্ম জেনেছিল ‘ইশকওয়ালা লাভ’ শব্দবন্ধনী। প্রায় এক দশক হতে চলা অতিমারি আক্রান্ত পৃথিবীতে এখনও বোধহয় ‘মিলেনিয়াল লাভ’-এর বিশেষণ এর চেয়ে ভাল কিছু নেই। ওই শব্দবন্ধনীকে ভেঙে নানা তর্জমা করে চলছে ওয়েব সিরিজ় বা ছবি। নেটফ্লিক্সের নতুন অ্যান্থলজি সিরিজ় ‘ফিলস লাইক ইশক’ দেখতে দেখতে এ কথাই মনে হয়।
তিরিশ মিনিটের ছ’টি গল্প। ছ’জন পরিচালক। তিন-চার জন চেনা মুখ ছাড়া অধিকাংশ শিল্পী স্বল্প পরিচিত বা শুধু ওয়েব সিরিজ়খ্যাত। এই গল্পগুলিতে প্রেমের যে ভাষা দেখানো হয়েছে, তার সঙ্গে রিলেট করতে পারবে শুধুমাত্র জেনারেশন জ়েড। তবে সেই ভাষায় আর নতুনত্ব নেই। গত কয়েক বছরে ছবি-সিরিজ়ের দৌলতে সেই ভাষা গতে বাঁধা হয়ে গিয়েছে।
প্রথম গল্প রুচির অরুণের ‘সেভ দ্য ডেট’। মুখ্য চরিত্রে রাধিকা মদন এবং অমল পরাশর। বিয়ের দিনে বৌ পালায়—প্রচলিত এই আপ্তবাক্যের ‘ভার্শন ২০২১’ এই গল্প। তবে সেই পালানোর নেপথ্যে অন্য প্রেম নয়। বরং বিয়ে নিয়ে মিলেনিয়াল প্রজন্মের কিন্তু-কিন্তু ভাব। চেনা থিম। রাধিকা এবং অমলের ভাল অভিনয়ের গুণে দেখতে মন্দ লাগে না।
দ্বিতীয় গল্প তাহিরা কাশ্যপ খুরানার ‘কোয়রান্টাইন লাভ’। মুখ্য চরিত্রে মিহির আহুজা এবং কাজল চুঘ। অতিমারির প্রেক্ষাপটে টিনএজ প্রেম। কিন্তু লুকিয়ে ছবি তোলা যে অপরাধযোগ্য হতে পারে, সেই বার্তা দিতে গিয়ে পথ হারায় ছবি।
তৃতীয় গল্প আনন্দ তিওয়ারির ‘স্টার হোস্ট’। মুখ্য চরিত্রে রোহিত শরাফ এবং সিমরন জেহানি। প্রেমিকের সঙ্গে ঝগড়া করে নায়িকার সোলো ট্রিপ, আত্মনির্ভর হয়ে ওঠার চেষ্টা, নিজেকে চেনা এবং অভিজাত হোমস্টের হোস্টের সঙ্গে স্মরণীয় কিছু মুহূর্ত। এ ক্ষেত্রেও গল্প বলা দাগ কাটে না।
এর পরে খানিক জিরিয়ে নিতে পারেন দর্শক। কারণ শেষ তিনটি গল্পে তুলনামূলক ভাবে নতুন আঙ্গিক তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। চতুর্থ গল্পটি পরিচালক দানিশ ইসলামের ‘শি লাভস মি, শি লাভস মি নট’। ওটিটির দৌলতে সমকামিতা এবং উভকামিতা এখন চর্চিত বিষয়। এই গল্পের একজন উভকামী, এবং অন্যজন সমকামী। দু’জনেই নারী। নতুন প্রজন্মের ভাষা, তাদের চাওয়া-পাওয়া। চেনা পরিসর। তবু দুই নারীর প্রেমের আবিষ্কার মনে এক অদ্ভুত ভাল লাগার আবহ তৈরি করে। সঞ্জীতা ভট্টাচার্য এবং সাবা আজ়াদের রসায়ন দেখতে ভাল লাগে।
ষষ্ঠ গল্প জয়দীপ সরকারের ‘ইশক মাস্তানা’। তানিয়া মানেকতলা ও স্কন্দ ঠাকুরের প্রেমকাহিনির প্রেক্ষাপট হয়তো সবচেয়ে অভিনব। নায়িকা প্রথম ডেটে নায়ককে ডেকেছে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনে শামিল হতে। সেখান থেকে সোজা পুলিশের গাড়িতে। চলার পথেই চাহনিদের একরাশ কথা। তবে গল্প ভাল হলেও, অভিনেতারা তত দড় নন।
সিরিজ়ের পঞ্চম গল্প ‘দ্য ইন্টারভিউ’। সব প্রজন্মের কাছেই প্রেমের হাওয়া হয়তো বয়ে আনতে পারে সচিন কুন্দলকার পরিচালিত এই গল্প। কারণ এই প্রেম কোনও একটি যুগের ভাষায় আবদ্ধ নয়। এক মুসলিম তনয়া এবং এক মালয়ালি তনয়ের দেখা হয় সেলসের চাকরির ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে। গল্পটি ভারী সুন্দর করে বলা হয়েছে। বাকি গল্পগুলি শুধুই মুহূর্ত-নির্ভর। কিন্তু এই গল্পে ফ্ল্যাশব্যাকও রয়েছে। তিরিশ মিনিটে গল্পের ভিতরের গল্পকেও তুলে ধরা সহজ নয়। পরিচালকের ভাবনাকে যথাযথ রূপ দান করেছেন নীরজ মাধব এবং জ়ায়ান মারি খান।
মোটের উপরে এই সিরিজ়ে প্রেম প্রেম ভাব, ছন্দের অভাব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy