Advertisement
E-Paper

চমৎকার জাহ্নবী, জমল না ছবি

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২১ ০৭:৩১
Share
Save

তিন বছর আগে ‘স্ত্রী’ ছবি দিয়ে বলিউডে হরর-কমেডি জ়ঁরটিকে জনপ্রিয় করে তুলেছিল দীনেশ ভিজানের প্রযোজনা সংস্থা। সেই সংস্থার দ্বিতীয় হরর কমেডি ‘রুহি’। আগেরটির মতো এই ছবিরও মুখ্য চরিত্রে রাজকুমার রাও। ছবির পরিচালক হার্দিক মেহতা, যিনি ওয়েব সিরিজ় ‘পাতাললোক’ , ‘ট্র্যাপড’-এর মতো ছবির চিত্রনাট্যে সহ-লেখক ছিলেন। হরর কমেডির সাফল্য নির্ভর করে তার লেখনীর উপরে। তবে ‘রুহি’র গল্প ও চিত্রনাট্য এর মূল খামতির জায়গা। হরর এবং কমেডির মেলবন্ধনও পোক্ত নয়।

ছবিটি শুরু হয় ভঁওরা (রাজকুমার রাও) এবং কটন্নিকে (বরুণ শর্মা) দিয়ে। এক বিদেশি তথ্যচিত্র নির্মাতার ক্যামেরায় বন্দি হচ্ছে ‘বধূ অপহরণ’, যা খানিক রেওয়াজের মতো দেশের এক প্রত্যন্ত কাল্পনিক শহরে। পাত্রের নজর পড়লে সেই মেয়েকে অপহরণ করে বিয়ের পিঁড়িতে বসিয়ে দেওয়া হয়। পাত্রের পরিবার সেই বিয়ে দেয় ধুমধাম করে। কিন্তু বিয়ের রাতে কনের উপরে ভর করতে পারে এক ডাইনি, যার লক্ষ্য বিয়ে করা। রুহি (জাহ্নবী কপূর) এমনই এক বিবাহযোগ্যা নারী, যাকে মালিক গুজিয়ার (মানব ভিজ) কথামতো অপহরণ করে ভঁওরা ও কটন্নি। কিন্তু অনিবার্য কারণে সেই বিয়ে পিছিয়ে যায়। তখন এক পোড়ো বাড়িতে বন্দি করে রাখতে হয় রুহিকে। তার পরে শুরু হয় ডাইনির নৃত্য। এর সঙ্গে আছে ত্রিকোণ প্রেমের জগঝম্পও।

ছবিতে এমন একটিও দৃশ্য নেই, যেখানে বুকটা ছ্যাঁৎ করে উঠবে। ছবির প্রথম অন্তরায় সেখানে। হরর কমেডির সংলাপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কয়েকটি সংলাপে হাসি পাবে, তবে বেশির ভাগেই না। ছবিতে বলতে চাওয়া হয়েছে অনেক কিছু। যেমন, বিয়ের মতো পিতৃতান্ত্রিক প্রাতিষ্ঠানিকতাকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। ডাইনি-পিশাচ তাড়ানো যে দেশের ছোট শহরে রীতিমতো ব্যবসার মতো রমরমিয়ে চলে, সেটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখানো হয়েছে। বিয়েতেই যে নারীর মোক্ষ নয়, সেই নারীবাদী বার্তা দেওয়ারও চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু ছবির ক্লাইম্যাক্স ও শেষ বেশ হতাশাজনক। অর্থাৎ অনেক কিছু বলতে গিয়ে শেষটা যেন জোর করে মিলিয়ে দেওয়ার মতো।

রুহি
পরিচালনা: হার্দিক মেহতা
অভিনয়: রাজকুমার, জাহ্নবী, বরুণ, মানব
৫/১০

মৃগদীপ সিংহ লাম্বা এবং গৌতম মেহরার লেখা চিত্রনাট্য দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই ঝিমিয়ে পড়ে। গল্প যে ক্রমশ খেই হারাচ্ছে, তা দর্শক স্পষ্ট বুঝতে পারবেন। এ ছাড়া ছোট শহরের যে কথ্য ভাষা এখন বলিউডে ‘ইন’, সেই ভাষাও সব ক্ষেত্রে বোধগম্য নয়। যে ডাইনির কথা বলা হয়েছে ছবিতে, তার অনুষঙ্গ নেটফ্লিক্স ছবি ‘বুলবুল’-এও ছিল।

কিন্তু শত অভিযোগের পরেও এই ছবির আবিষ্কার জাহ্নবী কপূর। প্রথম ছবি ‘ধড়ক’-এর পর থেকে তিনি ক্রমাগত নিজেকে ঘষামাজা করছেন। এর আগে নেটফ্লিক্সের ‘গোস্ট স্টোরিজ়’-এ তাঁকে ভাল লেগেছিল। কিন্তু এই ছবির মতো প্রস্থেটিক মেকআপ সেখানে সামলাতে হয়নি। ছবিতে খুবই কম তাঁর সংলাপ। তবে মেকআপ সামলে দ্বৈত সত্তায় অভিনয় করা তিন-চারটি ছবির অভিজ্ঞতাসম্পন্ন জাহ্নবীর জন্য সহজ ছিল না। সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শ্রীদেবী-তনয়া। রাজকুমারকে এমন চরিত্রে আগেও দেখা গিয়েছে। সে ক্ষেত্রে তাঁকে টাইপকাস্ট মনে হয়। বরুণ শর্মাও ভাল কিন্তু তিনিও নতুন নন এই চরিত্রে। এ ছাড়া পার্শ্বচরিত্রে মানব এবং সরিতা জোশী (বুড়িয়া) ভাল। ছবির ব্র্যাকগ্রাউন্ড স্কোরেও কমেডির পাল্লা ভারী, ভৌতিক আবহ তৈরি হয় না।

ছবিতে কয়েকটি বিষয়ের ব্যাখ্যাও খুঁজে পাওয়া যায় না। যেমন, ভঁওরা কী ভাবে বুড়িয়াকে খুঁজে পেল, তার ব্যাখ্যা মেলে না। ছবির শেষে রুহি তার ভয়ের কথা বলে, কিন্তু ছবি জুড়ে তার কোনও চিহ্ন নেই। আসলে হরর-কমেডি ভাল জমাতে পারলে, সে ছবির ত্রুটিও আড়াল হয়ে যায় আপনিই। কিন্তু ছবি না জমলে যে সবটাই ঘেঁটে ঘ!

review cinema jahnvi Kapoor rajkumar rao

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}