Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

জীবনের পাঠে বাকি রয়ে গেল সিনেমা

লুজ়ারদের গল্প। আন্নি, ডেরেক, সেক্সা, মাম্মি, বেওড়া, অ্যাসিড— ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হস্টেলের ছয় মার্কামারা দামাল। গার্লস হস্টেলের মায়াকে (শ্রদ্ধা কপূর) মন দিয়েছে গল্পের হিরো আন্নি অর্থাৎ অনিরুদ্ধ (সুশান্ত সিংহ রাজপুত)।

ছিছোরে।

ছিছোরে।

সায়নী ঘটক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:০৯
Share: Save:

ছিছোরে
পরিচালনা: নীতেশ তিওয়ারি
অভিনয়: সুশান্ত, শ্রদ্ধা, প্রতীক, তাহির, বরুণ
৫/১০

কলেজের দিন বলতেই চোখের সামনে কী ভেসে ওঠে? আড্ডা দেওয়ার সিঁড়ি, কমন রুমের ক্যারাম বোর্ড, হস্টেলের ছাদ ইত্যাদি। আর বন্ধুরা। যে বন্ধুরা জীবনের অনেক জরুরি পাঠ শিখিয়েছে। সারভাইভালের জাঁতাকলে পিষে যেতে যেতে সেই শিক্ষাগুলোই ঘুরে দাঁড় করিয়ে দেয় জীবনে— নীতেশ তিওয়ারির ‘ছিছোরে’ সেই কথাটা মনে করিয়ে দিল আর একবার। তবে ছবি থেকে প্রাপ্তি বলতে শুধু এটুকুই।

লুজ়ারদের গল্প। আন্নি, ডেরেক, সেক্সা, মাম্মি, বেওড়া, অ্যাসিড— ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হস্টেলের ছয় মার্কামারা দামাল। গার্লস হস্টেলের মায়াকে (শ্রদ্ধা কপূর) মন দিয়েছে গল্পের হিরো আন্নি অর্থাৎ অনিরুদ্ধ (সুশান্ত সিংহ রাজপুত)। কলেজে হইহই করে কেটে যাওয়া দিনগুলোর মজা, প্রেম, বন্ধুত্ব, হারজিতের গল্প স্মৃতির ঝাঁপি হাতড়ে অনিরুদ্ধ আর মায়া শোনাচ্ছে ছেলে রাঘবকে, যে তখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। এন্ট্রান্স পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়ে জীবনের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে সে। তাকে ফেরাতেই ফের একজোট হয় টিম লুজ়ার।

ছবিটা বানাতে গিয়ে পরিচালক নিজেই কলেজের ফেলে আসা দিনগুলোয় ফিরে গিয়েছেন, সেটা দিব্যি বোঝা গিয়েছে। সেই জায়গাগুলোতেই ছবিটা প্রাণবন্ত লেগেছে। ব্যর্থতা মেনে নিতে না পারা প্রজন্মের প্রতি বার্তাও শিক্ষণীয়। তবে সুশান্ত-শ্রদ্ধার সম্পর্ক আর একটু তলিয়ে দেখানো যেত। তাদের ডিভোর্সের কারণও যেমন স্পষ্ট নয়, তেমনই হস্টেল জীবনও শুধুই প্রেমে পড়া, র‌্যাগিং, কমন রুম আর অ্যাডাল্ট ছবি দেখাতেই সীমাবদ্ধ থেকেছে। ‘ছিছোরে’ দেখতে গিয়ে ‘থ্রি ইডিয়টস’ মনে না পড়াই বাঞ্ছনীয় ছিল। মৃত্যুমুখী রোগীকে ঘিরে হাসপাতালের সিরিয়াস দৃশ্যগুলো বড্ড ক্লিশে। সবক’টা চরিত্রেরই পরিণত বয়স ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা চোখে পড়ে। মেকআপও তেমন সঙ্গত করতে পারেনি সেখানে। মধ্যবয়সি সুশান্ত খানিক নড়বড়ে। শ্রদ্ধার অভিনয়েও বৈচিত্রের অভাব। তুলনায় তাহির রাজ ভাসিন, সহর্ষ শুক্ল, তুষার পাণ্ডেরা নজর কাড়েন। বরুণ শর্মার কমিক টাইমিং প্রশংসনীয়।

‘দঙ্গল’-এর পরিচালক যখন, তখন নীতেশের কাছ থেকে প্রত্যাশার পারদ স্বাভাবিক ভাবেই বেশি। ‘বরেলী কী বরফি’র গল্প-স্ক্রিন প্লে-সংলাপ লিখেছিলেন যিনি, তাঁর সাম্প্রতিক ছবিটা কিন্তু ‘মাস্ট ওয়াচ’এর বদলে ‘ওয়ান ওয়াচ’ হয়েই রয়ে গেল। বাঁচার গল্প বলতে চেয়েছেন পরিচালক। ইঁদুর দৌড়ে হাঁপিয়ে ওঠা তরুণ তুর্কিদের জিরিয়ে নেওয়ার, প্রেরণা পাওয়ার গল্প। কিন্তু সবটাই যে বড্ড একপেশে হয়ে গেল। কাহিনিটা বহুমাত্রিক হলে হয়তো মনে রাখার মতো একটা ছবি হয়ে উঠতে পারত ‘ছিছোরে’।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy