দুর্গামতী: দ্য মিথ
পরিচালনা: অশোক
অভিনয়: ভূমি, আরশাদ, যিশু, মাহি, কর্ণ
৪.৫/১০
ইদানীং অধিকাংশ দক্ষিণী ছবির হিন্দি রিমেকের দায়িত্বে থাকছেন সংশ্লিষ্ট দক্ষিণী পরিচালক। তামিল-তেলুগু ‘ভাগ্যমতী’ (২০১৮) ছবির অফিশিয়াল রিমেক অ্যামাজ়ন প্রাইমে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘দুর্গামতী: দ্য মিথ’। দু’টি ছবির পরিচালক অশোক। তাই হিন্দি রিমেকেও ক্ষেত্রবিশেষে দক্ষিণী প্রভাব স্পষ্ট, কোথাও কোথাও প্রকট।
‘দুর্গামতী...’র ট্রেলার দেখে দর্শকের মনে হতে পারে, হরর জ়ঁরে এটি নতুন কিছু দেখাবে। ট্রেলারে সেই সম্ভাবনা ছিল। তবে ছবির দুর্বলতম অংশ, এই ‘হরর’ উপাদান। গতে বাঁধা থ্রিলারকে নতুন রূপদানের জন্য হরর সাব-প্লটের ব্যবহার করা হয়। কিন্তু সম্ভাবনাময় থ্রিলারকে পুরোপুরি গ্রাস করেছে হাস্যকর ভৌতিক উপাদান। যার কারণে শেষ আধ ঘণ্টা টলমল ছবির হাল ধরলেও, শেষরক্ষা হয়নি! যুক্তি দিয়ে সব ঘটনার বিশ্লেষণ এখানে সম্ভব নয়।
ছবির প্রথম এক ঘণ্টা বেশ ঝকঝকে। আগ্রহ তৈরি হতে বাধ্য। মধ্যপ্রদেশের বেশ কয়েকটি গ্রাম থেকে ক্রমাগত প্রাচীন কয়েকটি মূর্তি-বিগ্রহ চুরি হচ্ছে। জবাব নেই সরকারের কাছে। এ অবস্থায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ঈশ্বর প্রসাদকে (আরশাদ ওয়ারসি) মিথ্যে অভিযোগে ফাঁসানোর জন্য সরকারি নির্দেশ দেওয়া হয় সিবিআইকে। ঈশ্বরকে ফাঁসানোর জন্য ঘুঁটি করা হয় খুনের দায়ে জেলে বন্দি আইএএস অফিসার চঞ্চল চৌহানকে (ভূমি পেডনেকর)। কারণ দশ বছর সে ছিল মন্ত্রীর পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট। সিবিআই জয়েন্ট ডিরেক্টর শতাক্ষী গঙ্গোপাধ্যায় (মাহি গিল) এই অপারেশনের দায়িত্বে। তাকে সাহায্য করছে এসিপি অভয় সিংহ (যিশু সেনগুপ্ত)। অভয়ের ভাই শক্তিকে (কর্ণ কাপাডিয়া) খুনের দায়ে শাস্তি ভোগ করছে চঞ্চল। মিডিয়া ও মানুষের নজর এড়িয়ে তাকে জেরা করার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় দুর্গামতী মহলে। সাধারণ মানুষের কাছে এই প্রাসাদ ‘ভূতুড়ে’। তাদের বিশ্বাস, সেখানে থাকে রক্তপিশাচ দুর্গামতী।
এর পরেই ছবির মুখ্য আকর্ষণ হয়ে ওঠে এই মহল এবং সেখানে চঞ্চলের বদলে যাওয়া রূপ। প্রোডাকশন ডিজ়াইন যে ভাবে করা হয়েছে, তাতে ভূতুড়ে মহলের ধুলোমাখা লুণ্ঠিত আভিজাত্য পরতে পরতে ফুটে উঠেছে। কিন্তু ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোরের জোরালো মূর্ছনাতেও ভয়ের আবহ তৈরি হয় না। এমন একটিও দৃশ্য নেই, যা বুকের ভিতরে নাড়া দেবে। এর মাঝে গুঁজে দেওয়া হয়েছে কমিক দৃশ্য, যা অসহ্য। এবং এই কমেডির ধারাও মূলত দক্ষিণী মেজাজের।
ভূমির কাঁধে ছিল গুরুদায়িত্ব। তবে চড়া দাগের নাটকীয় ভঙ্গিতে ‘ম্যায় হুঁ দুর্গামতী’ বলায় তাঁর প্রাণপণ চেষ্টা থাকলেও, তা স্বতঃস্ফূর্ত মনে হয়নি। চঞ্চলের চরিত্রে বরং ভূমি নজর কেড়েছেন। ‘অসুর’-এর পরে আরও এক বার অভিনয় দেখানোর সুযোগ পেয়েছেন আরশাদ। অভয়ের চরিত্রে যিশু দারুণ। সুন্দর রপ্ত করেছেন চরিত্রের খুঁটিনাটি। মাহির অভিনয় বেশ আড়ষ্ট লেগেছে। বিশেষত, তাঁর চিবিয়ে চিবিয়ে কথা বলার ধরন এবং এক শব্দবিশিষ্ট বাংলা বলা বেশ মেকি। কর্ণ কাপাডিয়া (টুইঙ্কল খন্নার মাসতুতো ভাই) চেষ্টা করেছেন তাঁর চরিত্রে।
ছবির ট্রিটমেন্টে দুর্গামতী মিথ, হাভেলি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সত্যি-মিথ্যের যে খেলা ওই মিথে রয়েছে, ছবির আক্ষরিক কাহিনিতেও সেই দোলাচল ছিল। কিন্তু পরিচালকের অপটু হাতে সব সম্ভাবনা অচিরেই নষ্ট হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy