দ্য ফ্যালকন অ্যান্ড দ্য উইন্টার সোলজার
দ্য ফ্যালকন অ্যান্ড দ্য উইন্টার সোলজার (ওয়েব সিরিজ়)
পরিচালনা: ম্যালকম স্পেলম্যান
অভিনয়: অ্যান্টনি ম্যাকি, স্টেবাস্টিয়ান স্ট্যান, এরিন কেলিম্যান
৬.৫/১০
দু’বছর আগে ‘অ্যাভেঞ্জার্স এন্ডগেম’ রিলিজ়ের পরে মনে হয়েছিল এ বার কী হবে? সব মহারথী তো মহাপ্রস্থানের পথে। তা হলে কি নতুন অ্যাভেঞ্জার টিম তৈরি হবে? কিন্তু কাদের নিয়ে? এমসিইউ (মার্ভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্স) যথারীতি চুপিসারে নিজেদের ঘুঁটি সাজাচ্ছিল। কিছু দিন আগেই তাদের টেলিভিশন সিরিজ় ‘ওয়ান্ডা ভিশন’ রিলিজ় করেছে। সেখানে ‘এন্ডগেম’-এর রেফারেন্স থাকলেও নতুন মহারথীদের বিষয়টি উহ্যই ছিল। ‘দ্য ফ্যালকন অ্যান্ড দ্য উইন্টার সোলজার’ সেই দিশা দেখাল।
ছ’এপিসোডের সিরিজ়ের শুরু থেকেই স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল নতুন ক্যাপ্টেন আমেরিকা খোঁজার পর্ব শুরু হয়ে গিয়েছে। ‘এন্ডগেম’-এ ইঙ্গিত ছিল স্টিভ রজার বা ক্যাপ্টেন আমেরিকা তার উত্তরসূরি হিসেবে ফ্যালকনকে পছন্দ করলেও, স্যাম উইলসন (ফ্যালকন) রাজি হয়নি। আমেরিকান লেজেন্ডের শিল্ডের দায়ভার বহন করতে ইচ্ছুক ছিল না ফ্যালকন। শেষ পর্যন্ত কার হাতে শিল্ড শোভা পাবে, স্রেফ তা নিয়ে এই সিরিজ় নয়। আর সেখানেই সিরিজ়ের সার্থকতা। পূর্ব-মধ্য ইউরোপ জুড়ে যে অভিবাসী সমস্যা চলছে, সিরিজ়ের মূল নির্যাস সেটাই। বাসস্থান নিয়ে মানুষের অধিকারের লড়াইয়ের কথা উঠে এসেছে। সেই লড়াইয়ে শামিল হওয়া উগ্রবিপ্লবী সংগঠনকে সন্ত্রাসবাদী বলে কি এক কথায় দেগে দেওয়া যায়? এই সিরিজ় নেহাতই শুভ-অশুভের লড়াই দর্শায় না। তার চেয়েও গভীরে ঢুকে কিছু প্রশ্ন তুলে দেয়। যেমন প্রশ্ন তোলে একজন কালো মানুষ কি আদৌ ক্যাপ্টেন আমেরিকা হতে পারবে?
অ্যাভেঞ্জার্স আর ক্যাপ্টেন আমেরিকার অন্যান্য ছবি দেখা থাকলে, এই সিরিজ় দেখতে সুবিধে হবে। কারণ পুরনো ছবিগুলো থেকে বারবারই রেফারেন্স এসেছে। উইন্টার সোলজার জেমস বাকি বার্নসের চরিত্রের তল পেতে গেলে পুরনো ছবিগুলো দেখা থাকলে ভাল। তবে একেবারে নতুন দর্শকেরও খুব একটা অসুবিধে হবে না। ছোট ছোট সূত্রে অনেকটা বুঝিয়েই দেওয়া হয়েছে।
যে কোনও সিরিজ়ের ক্ষেত্রে এপিসোড ব্রেকে দর্শকের আগ্রহ ধরে রাখা একটা বড় ব্যাপার। এই সিরিজ়ের ক্ষেত্রে সে জায়গায় খামতি রয়েছে। যেহেতু এখানে প্রতি সপ্তাহে একটা করে এপিসোড এসেছে, তাই আরও একটু টানটান হওয়ার প্রয়োজন ছিল বইকি।
ইউরোপ জুড়ে তাণ্ডব চালাচ্ছে ফ্ল্যাগ স্ম্যাশার, যার নেত্রী কার্লি মরগেনথু। এদের একটাই কথা ‘ওয়ান ওয়র্ল্ড, ওয়ান পিপল’। এই গোষ্ঠীকেই বাগে আনার কাজে লেগে পড়ে স্যাম এবং বাকি। যোগ দেয় আমেরিকার সরকার নিযুক্ত নতুন ক্যাপ্টেন আমেরিকা জন ওয়াকার। লড়াইয়ে নেমে বোঝা যায় কার্লির দলবল কোনও সাদামাঠা বিপ্লবী নয়, তারা প্রত্যেকেই সুপার সোলজার। যে সেরাম বাকি এবং স্টিভ রজারের শরীরে ছিল, কার্লির শরীরেও তা বইছে। ফলে দু’পক্ষের লড়াই হয় ধুন্ধুমার। সেই লড়াইয়ে কোথাও কার্লিদের দাবিকে অন্যায্য বলা হয়নি। আপত্তি তাদের পন্থা নিয়ে।
ফ্যালকন আর উইন্টার সোলজারের বন্ধুত্ব-ঠোকাঠুকির মাঝে, নজর কেড়ে নেয় কার্লি মরগেনথুর লড়াই। সিরিজ় যত এগিয়েছে, ফ্যালকনের চরিত্রে অ্যান্টনি ম্যাকি তত আকর্ষক হয়ে উঠেছেন। উইন্টার সোলজারের চরিত্রে স্টেবাস্টিয়ান স্ট্যান এর আগেও নিজেকে প্রমাণ করেছেন। বরং এই ছবিতে তাঁকে আরও পরিণত লেগেছে। ভাল লাগে কার্লির ভূমিকায় এরিন কেলিম্যানকে। এমসিইউ-এর স্টাইল অনুযায়ী এন্ড ক্রেডিটে চমক রয়েছে। জ়িমো, শ্যারন কার্টার এবং জন ওয়াকারের চরিত্রের সুতো ছেড়ে রেখেছেন নির্মাতারা। পরবর্তী কোনও সিরিজ় বা সিনেমায় এদের দেখার অপেক্ষা থাকবে।
ফ্যালকনই যে পরবর্তী ক্যাপ্টেন আমেরিকা, এই স্পয়লারে দোষ নেই। কারণ সিরিজ়ের শুরু থেকেই বিষয়টা চর্চিত। ক্যাপ্টেন আমেরিকা হতে হলে সাদা চামড়া নয়, মানুষের প্রতি ভালবাসা আর সাহসের প্রয়োজন। সেটাই এখানে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। সুপারহিরো সিরিজ় মানেই যে গ্যাজেট আর অ্যাকশনের আতিশয্য নয়, তার প্রমাণ ‘দ্য ফ্যালকন অ্যান্ড দ্য উইন্টার সোলজার।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy