Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
James Bond

No Time To Die: শেষ হয়েও, রেশ রয়ে যায়

বন্ড ছবির ইতিহাসে ‘নো টাইম টু ডাই’ ব্যতিক্রমী হয়ে রয়ে যাবে একাধিক কারণে। নিছক এজেন্ট-ভিলেন দ্বৈরথের বন্ধনীতে ছবিকে আটকে রাখা যাবে না।

দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২১ ০৬:৫৬
Share: Save:

অভিনেতা ড্যানিয়েল ক্রেগের শেষ বন্ড ফিল্ম—কিন্তু তাঁকে বিদায় জানানো যে এতটা কঠিন হবে, সেই বোধটা ছিল না। এর চেয়ে ভাল ফেয়ারওয়েল সম্ভবত হয় না। কোনও বন্ড মুভির শেষে মন এতটা ভারাক্রান্ত হয়নি।

বন্ড ছবির ইতিহাসে ‘নো টাইম টু ডাই’ ব্যতিক্রমী হয়ে রয়ে যাবে একাধিক কারণে। নিছক এজেন্ট-ভিলেন দ্বৈরথের বন্ধনীতে ছবিকে আটকে রাখা যাবে না। অ্যাকশন সিকোয়েন্সের ঊর্ধ্বে উঠে এই ছবি অনেক বেশি মানবিক। ‘নো টাইম টু ডাই’-এ জেমস বন্ডের প্রতিপক্ষ এক নয়, দু’জন। ‘স্পেক্টর’-এর রেশ টেনেই ছবির কাহিনির সূত্রপাত। ক্রিমিনাল সিন্ডিকেট স্পেক্টরের মাথা ব্লোফেল্ডের (ক্রিস্টফ ওয়াল্টজ়) কার্যকলাপ জারি রয়েছে। ম্যাডেলিন সোয়ানের (লেয়া সেদু) চরিত্রটাও এই ছবির অন্যতম অংশ। ব্লোফেল্ডের পাশাপাশি বন্ডকে লড়তে হয় সাফিনের সঙ্গে (রামি মালেক)। ক্রমশ সাফিনের চরিত্রটাই বন্ডের প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে ওঠে। বন্ডকে লড়তে হয় নিজের সঙ্গেও। ঘাড়ের কাছে শ্বাস ফেলতে থাকে আর এক ডাবল ও সেভেন নোমি (লাশানা লিঞ্চ)। অবসর আসন্ন বুঝেও শেষ বারের মতো ভেল্কি দেখাতে চায় বন্ড। নিজেকে প্রবোধ দেয় ‘ইট’স জাস্ট আ নাম্বার’ বলে।

২৫তম বন্ড মুভি বলেই হয়তো আয়োজনের ত্রুটি রাখেননি নির্মাতারা। ২০১৭ সাল থেকে ছবির প্রস্তুতি চলছে। বারবার বদলেছে পরিচালক-চিত্রনাট্যকার। ছবি তৈরির সময়েও এসেছে অনেক বাধা। কথাতেই আছে, যা হয় ভালর জন্য হয়। দু’ঘণ্টা চল্লিশ মিনিট দর্শককে বসিয়ে রাখার দুরূহ কাজটা করেছেন পরিচালক ক্যারি ফুকুনাগা, যার বায়োডেটায় ‘ট্রু ডিটেক্টিভ’, ‘ম্যানিয়াক’-এর মতো হিট সিরিজ় রয়েছে। নিজের শেষ বন্ড ছবি বলেই হয়তো ড্যানিয়েলও খামতি রাখতে চাননি। কাহিনির নির্মাণে তিনি সাহায্য চেয়েছিলেন ফিবি ওয়েলার ব্রিজের (‘ফ্লিব্যাগ’ খ্যাত) কাছে। ফিবি দ্বিতীয় মহিলা, যিনি বন্ড ছবির চিত্রনাট্য লিখেছেন।

নো টাইম টু ডাই
পরিচালক: ক্যারি ফুকুনাগা
অভিনয়: ড্যানিয়েল, রামি, ক্রিস্টফ, লাশানা, লেয়া
৭.৫/১০

বন্ড মুভির যাবতীয় আকর্ষণ এখানেও মজুত। দুর্দান্ত সব লোকেশনে শুটিং, চমকপ্রদ গ্যাজেটস, শ্বাসরোধ করা অ্যাকশন দৃশ্য এবং বন্ডের সেই পরিচিত ম্যানারিজ়ম... জেমসের পরে নোমি যে জ়িরো জ়িরো সেভেন হতে চলেছে, তা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে ছবিতে। কৃষ্ণাঙ্গ মহিলা এজেন্ট নিয়োগ করে হয়তো ‘সেক্সিস্ট’ বদনাম ঘোচাতে পারবে বন্ড ছবির নির্মাতারা।

শন কনরির কথা মাথায় রেখেও বলা যায়, আধুনিক প্রজন্মের কাছে ড্যানিয়েল ক্রেগ বন্ড হিসেবে আলাদা মর্যাদা রাখেন। তাঁর সময় থেকেই জেমস বন্ডের ছবির ধাঁচও বদলেছে। ‘স্কাইফল’ থেকে বন্ড অনেক বেশি মানবিক। ক্যাসানোভা এজেন্টের ইমেজ ছেড়ে যথার্থ প্রেমিক বন্ডকে তুলে ধরেছিলেন ড্যানিয়েলই। ভেসপার, ম্যাডেলিনের প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই বোঝা যায়, কতটা বদলেছে বন্ডের চরিত্র। ড্যানিয়েলের মুখে আর কোনও দিন ‘মাই নেম ইজ় বন্ড, জেমস বন্ড’ শুনতে না পাওয়াটা খারাপ লাগা তৈরি করবে বইকি।

এম (রেফ ফাইন্স), কিউ (বেন উইশ), ইভ (নেওমি হ্যারিস) বন্ড ছবির পরিচিত চরিত্ররা রয়েছে ছবিতে। লাশানা লিঞ্চ আগামী দিনে তাঁর চরিত্রের গুরুভার কী ভাবে সামলান, সে দিকে নজর থাকবে। নেহাতই আইক্যান্ডি চরিত্র হলেও আনা ডে আর্মসকে বেশ ভাল লাগে। তবে রামি মালেকের চরিত্রের দৈর্ঘ্য একটু বেশি হলে ভাল হত। বিশেষত, যেখানে সাফিনকে বন্ডের অন্যতম কঠিন প্রতিপক্ষ বলছেন পরিচালক।

এই ছবির বড় সম্পদ, হান্স জ়িমারের আবহ মিউজ়িক। বিলি আইলিশের কণ্ঠে ছবির থিম সং ‘নো টাইম টু ডাই’ আলাদা আবেগ তৈরি করে দেয়। সেই আবেগের রেশ থেকে যায় শেষ পর্যন্ত। ‘...বন্ড, জেমস বন্ড’— এই সংলাপ ছবিতে দু’বার রয়েছে। একবার খোদ এজেন্টের মুখে। আর একবার শেষ দৃশ্যে সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিস্থিতিতে। সেটা কী, সেই স্পয়লারের উন্মোচন সিনেমা হলে গিয়ে করাই ভাল।

অন্য বিষয়গুলি:

James Bond Daniel Craig
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy