Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
arjun kapoor

মন্থর গতিতে ফেরার থ্রিল

রাতের দিল্লির রাস্তা ধরে ছুটে চলা ফরচুনারের পাশ বেয়ে ওঠা টাইটেল কার্ড আর স্তব্ধতা ভাঙা ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর ছবির মুড তৈরি করে দেয়।

সায়নী ঘটক
শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২১ ০৬:৫৬
Share: Save:

সন্দীপ অওর পিঙ্কি ফরার
পরিচালক: দিবাকর বন্দ্যোপাধ্যায়
অভিনয়: পরিণীতি, অর্জুন, রঘুবীর, নীনা, জয়দীপ
৫.৫/১০

অনেক দিন পরে বড় পর্দায় দিবাকর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি। তায় থ্রিলার। বিলম্বশেষে ‘সন্দীপ অওর পিঙ্কি ফরার’ মুক্তির পরে চেনা দিবাকর-ম্যাজিক প্রত্যাশিত ছিল। উপাদানও মজুত ছিল। শুধু কাহিনির ধীর গতি চোনা ফেলে দিল একটি সম্ভাবনাময় জমাট থ্রিলারে।

সন্দীপ ওয়ালিয়া, ওরফে স্যান্ডি (পরিণীতি চোপড়া) একজন সফল ব্যাঙ্কার। তার প্রাণহানির আশঙ্কা নিজের বসের কাছ থেকেই। বহিষ্কৃত হরিয়ানভি পুলিশ সতীন্দর, ওরফে পিঙ্কি ঘটনাচক্রে প্রাণ বাঁচিয়ে ফেলে সন্দীপের আর দু’জনেই জড়িয়ে পড়ে পালিয়ে বেড়ানোর খেলায়। সমাজের ভিন্ন অবস্থানের সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী দুই মানুষ একসঙ্গে ফেরার হয়ে পৌঁছয় ভারত-নেপাল সীমান্তের এক ছোট শহরে। ঠাঁই হয় এক বৃদ্ধ দম্পতির (রঘুবীর যাদব এবং নীনা গুপ্ত) বাড়িতে। নিজেদের অজান্তেই ব্যাঙ্ক স্ক্যামের শিকার সেই দম্পতির টাকা উদ্ধারের চেষ্টা করে সন্দীপ। প্রতি মুহূর্তে ধরা পড়ে যাওয়ার ভয় নিয়ে অনিশ্চিতের পথে ভেসে পড়া দু’জনের জার্নি নিয়েই গল্প। কিন্তু সেই জার্নি আরও টানটান হতে পারত।

ছবির শুরুর মিনিট দশেক গতিময়। রাতের দিল্লির রাস্তা ধরে ছুটে চলা ফরচুনারের পাশ বেয়ে ওঠা টাইটেল কার্ড আর স্তব্ধতা ভাঙা ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর ছবির মুড তৈরি করে দেয়। কিন্তু সেই মেজাজ বেশিক্ষণ ধরে রাখা যায় না। ছবি যত এগিয়েছে, কাহিনির ভাঁজ খুলেছে ধীরে ধীরে। কিন্তু সেই উন্মোচনে কোনও ধাক্কা নেই, বরং আছে সন্দীপ-পিঙ্কির একে অন্যের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পারার পুনরাবৃত্তি। ছবিতে ব্যাঙ্ক স্ক্যামের মতো বিষয় নিয়ে এসেছেন পরিচালক, সাধারণ নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার যার শিকার। রয়েছে সরষের মধ্যে ভূত খোঁজার গল্প। কিন্তু তার অভিঘাত তেমন জোরালো হল কই? যে দৃশ্যে পিঙ্কি তার বস ত্যাগীর (জয়দীপ অহলাওয়ত) সঙ্গে ফোনে ক্রমাগত কথা বলে, সেখানে স্ক্রিনে ভেসে ওঠা কল ডিউরেশন ১২ সেকেন্ডের অঙ্ক পেরোয় না! দিবাকর ও বরুণ গ্রোভারের কলম থেকে আরও বেশি প্রত্যাশা থাকে। তবে দীর্ঘায়িত হলেও ছুঁয়ে যায় ক্লাইম্যাক্স।

পারফরম্যান্সের দিক থেকে বলতে গেলে এ ছবি পরিণীতি চোপড়ার। স্বাধীনচেতা, বুদ্ধিদীপ্ত, উচ্চবিত্ত জীবনযাপনে অভ্যস্ত সন্দীপ যখন ভেঙে পড়ে, বিপন্নতার সেই সব মুহূর্তে পরিণীতির সৌজন্যে জীবন্ত হয়ে ওঠে চরিত্রটি। অভিব্যক্তিতে তাঁর পাশে তুলনায় ফিকে লাগে অর্জুন কপূরকে। যদিও মঞ্চের উপরে উদ্দাম নাচ থেকে ছদ্মবেশ— ছবিতে অর্জুনকেও চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছেন পরিচালক। ‘ইশকজ়াদে’র জুটিকে ফিরিয়ে এনে ভুল করেননি দিবাকর। যেমন ‘পঞ্চায়েত’ ওয়েব সিরিজ়ের পরে আরও একবার নীনা-রঘুবীরের জুটি ম্যাজিক করেছে পর্দায়। নায়ক-নায়িকার পাশে তাঁদের উপস্থিতি ‘সিন কেড়ে নেওয়া’র জন্য যথেষ্ট। জয়দীপের চরিত্রটি হয়তো আরও যত্ন নিয়ে লেখা যেত। উত্তরাখণ্ডের পীথোরাগড়কে জীবন্ত করে তুলেছে অনিল মেহতার ক্যামেরা। তবে সন্দীপ-পিঙ্কির ফেরারি যাত্রা আরও বিশদে দেখালে ভাল লাগত। দিবাকরের এই ছবিতে আবহসঙ্গীত ন্যূনতম। কিছু জায়গায় তা দমবন্ধ করা, কোথাও আবার লাগসই।

বড় পর্দায় দীর্ঘ বিরতির পরে ফিরলেন দিবাকর। এ দিনই ঘোষণা হয়েছে তাঁর আগামী ছবির। সেখানে অন্তত পরিচালকের চেনা ম্যাজিকের অপেক্ষায় থাকবেন দর্শক।

অন্য বিষয়গুলি:

Bollywood arjun kapoor Movies
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy