‘হোমস্টে মার্ডার্স’ সিরিজ়ে রয়েছেন একাধিক পরিচিত মুখ। ছবি: সংগৃহীত।
নিঃস্তব্ধ পাহাড়ি জনপদে একটি হোমস্টে। কলকাতা থেকে সেখানে হাজির হয়েছে কয়েক জন অতিথি। ধীরে ধীরে একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হয় তারা। এরই মধ্যে হঠাৎ খুন হয় এক জন অতিথি। খুনের কারণ কী? আততায়ী কি উপস্থিত অতিথিদের মধ্যেই কেউ? শুরু হয় একে অপরকে সন্দেহ এবং দোষারোপের পালা। এই প্রেক্ষাপটেই তাঁর সাম্প্রতিক ওয়েব সিরিজ়টি তৈরি করেছেন সায়ন্তন ঘোষাল।
থ্রিলার, তাই এর বেশি গল্প বলে দিলে সিরিজ় দেখার মজা নষ্ট হতে পারে। কিন্তু এই সিরিজ়ের প্লট বড্ড চেনা। সিরিজ় দেখতে বসে আগাথা ক্রিস্টির বিখ্যাত ‘দ্য মাউস ট্র্যাপ’ নাটকটির সঙ্গে মিল খুঁজে পাওয়া অস্বাভাবিক নয়। হালের ‘নাইভ্স আউট’ ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির ছবির কথাও মনে পড়তে পারে। একটি নির্দিষ্ট স্থানে কয়েক জন অপরিচিত মানুষ মিলিত হচ্ছেন। তার পর সেখানে একটি অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে। বহুলচর্চিত এই মোটিভ নিয়ে সিরিজ় তৈরির জন্য চিত্রনাট্যে যে বাড়তি চমকের প্রয়োজন ছিল, তা এখানে অনুপস্থিত।
এখনকার অধিকাংশ ওয়েব সিরিজ়ের পর্বের দৈর্ঘ্য বেশি হয়। সে দিক থেকে এই সিরিজ়কে ছ’টি এপিসোডে বাঁধা হয়েছে বলে চট করে দেখে নেওয়া যায়। কিন্তু সোহিনী মুখোপাধ্যায়ের কাহিনিতে থ্রিলার সুলভ ‘সাসপেন্স’ সেই ভাবে দানা বাঁধেনি। চরিত্রগুলিকে সমান গুরুত্ব দিয়ে লেখা হয়নি বলেই দর্শকমনে প্রতিটি চরিত্র সন্দেহভাজন হয়ে উঠতে পারেনি। কিছু চরিত্রের অতীতের উপর যেমন জোর দেওয়া হয়েছে চিত্রনাট্যের খাতিরে, বাকিদের ক্ষেত্রে সেটা করা হয়নি। ফলে জানার আগ্রহ থেকেই যায়। খুনের সময় চরিত্রদের উপস্থিতি বা গতিবিধিকে বিভিন্ন আঙ্গিক থেকে তুলে ধরলে ধাঁধা হয়তো কিছুটা কাটত। সিরিজ়ের সম্পাদনার দিকেও একটু জোর দেওয়া যেত। একাধিক দৃশ্যের পুনরাবৃত্তিরও প্রয়োজন ছিল না।
এই সিরিজ়ে পরিচিত মুখেদের ভিড়। কিঞ্জল চরিত্রে সৌরভ দাসের তদন্তের স্টাইল গল্পের আমেজ তৈরি করে দিয়েছে। দামিনীর চরিত্রে সোহিনী সরকার বা লেখক অনিমেষের চরিত্রে অর্জুন অনেকটাই জায়গা পেয়েছেন। তাঁদের থেকে প্রত্যাশা ছিল আরও বেশি। দু’জনের প্রেমের ইঙ্গিতও বড্ড ক্লিশে! অন্য দিকে, পার্নো মিত্র সেই ভাবে জায়গাই পেলেন না। এই প্রথম অপরাজিতা ঘোষ দাস ওয়েব সিরিজ়ে। এখানে তিনি বেশ কিছু ভাল মুহূর্ত তৈরি করেছেন। দেবচন্দ্রিমা সিংহ রায়ের অভিনয় একটু উঁচু তারে বাঁধা। সবুজ বর্ধন এবং যুধাজিৎ সরকার যতটা জায়গা পেয়েছেন, তার সদ্ব্যবহার করেছেন।
সায়ন্তন থ্রিলার বিষয়টা ভালই বোঝেন। তাঁর আলাদা অনুরাগী বৃত্তও রয়েছে। তবে এক-দু’বার ছক্কা মিস্ হতেই পারে। ভবিষ্যতে এই সিরিজ়ের সিক্যুয়েল তৈরি করবেন কি না, তা নিয়ে একটু ভাল করে ভাবনাচিন্তা করতে পারেন পরিচালক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy