পরিচালক হনসল মেহতার ছবির সুবাদেই অভিনেতা রাজকুমার রাওয়ের উত্থান বললে অত্যুক্তি হয় না। ‘শাহিদ’, ‘সিটিলাইটস’, ‘ওমের্তা’র মতো ছবির পরে এই জুটির কাছ থেকে প্রত্যাশা একটু বেশি দর্শকের। ভাল ছবি মানেই সিরিয়াস ছবি, তা কিন্তু নয়। তবে যে বিষয়ে নতুন কিছু দেখানোর নেই, সেই বিষয়ের ছবিতে এই পরিচালক-অভিনেতা কেন, তা সত্যিই কৌতূহল জাগায়। হনসল পরিচালিত অ্যামাজ়ন প্রাইমের ছবি ‘ছলাং’ শুধু বাঁধা গতের নয়, গল্প বলাতেও নতুন দিক উন্মোচন করার চেষ্টা করা হয়নি।
ছবির মুখ্য চরিত্রে মন্টু, (রাজকুমার) যে হরিয়ানার একটি সাধারণ মানের স্কুলের ব্রতচারীর শিক্ষক। কাজটা যে সে খুব ভালবেসে করে, তা কিন্তু নয়। সেই স্কুলেই কম্পিউটার শেখাতে আসে নীলিমা (নুসরত ভারুচা)। তাকে দেখার পরেই মন্টুর জীবন ও যৌবন প্রেমের গন্ধে সুবাসিত! ছবির প্রথমার্ধ মন্টুর পরিবার ও প্রেমকেন্দ্রিক। কিন্তু তা দিয়ে দ্বিতীয়ার্ধ তো টানা যায় না। তাই প্রেমের ময়দানে তৃতীয় কোণের আবির্ভাব। তবে ইন্দ্রমোহন সিংহের (মহম্মদ জ়িশান আয়ুব) নজর শুধু মন্টুর প্রেমের উপরে নয়, চাকরিতেও। চাকরি ও প্রেম বাঁচাতে মন্টু দেয় লম্বা-চওড়া ছলাং (ঝাঁপ)। বইয়ে মুখ গুঁজে থাকা ছাত্র-ছাত্রীদের গড়ে-পিটে কবাডি, বাস্কেট বল ও রিলে রেসের ট্র্যাকে দাঁড় করায় মন্টু। বাকিটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
স্পোর্টস মুভি বলিউডে এখন জলভাত। তার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গি ভাবে জুড়ে থাকে নারী ক্ষমতায়নের বার্তা। এই ছবির মুখ্য চরিত্রাভিনেতা পুরুষ হলেও, হরিয়ানার মেয়েদের উজ্জীবিত করার ফর্মুলা ভুলে যাননি পরিচালক। আবার নায়িকার চরিত্রটিও স্পষ্টবক্তা। তাই সে সব উপাদান নিয়মমাফিক ছবিতে রয়েছে। তবে ছবির শুরু থেকেই খেলাধুলো ফোকাসে ছিল না। প্রেম, খুনসুটি, হালকা চালের আলাপ-আলোচনায় স্পোর্টস মুভির বাইরের খোলসটুকু যা বদলানো হয়েছে!
ছলাং
পরিচালনা: হনসল মেহতা
অভিনয়: রাজকুমার, নুসরত, সৌরভ, মহম্মদ জ়িশান, সতীশ
৫/১০
রাজকুমারের এই ছবিতে আলাদা করে প্রতিভা স্ফুরণের সুযোগ ছিল না। তিনি বাঁধা গতে ভালই। নায়কপ্রধান ছবিতেও নুসরতের পর্দায় উপস্থিতি ভালমতো। তাঁকে দেওয়া হয়েছে শাণিত সংলাপও। মহম্মদ জিশান আয়ুব তাঁর চরিত্রে জুতসই। পার্শ্বচরিত্রে সতীশ কৌশিক, সৌরভ শুক্ল, ইলা অরুণ, যতীন সর্না ভাল।
বছরের গোড়ায় মুক্তি পেয়েছিল কঙ্গনা রানাউত অভিনীত ‘পঙ্গা’। সেই ছবিতে লাল পোশাকে কঙ্গনার কবাডি খেলার দৃশ্য যদি ‘ছলাং’-এর কবাডির ময়দান দেখতে গিয়ে মনে পড়ে, তবে দর্শককে দোষ দেওয়া যায় না। কারণ সমসাময়িক একটি ছবির দৃশ্যকল্প যে নতুন ছবির ইমেজে বাধা হতে পারে, তা নির্মাতাদের মনেও হয় না। মনে হবেও বা কী করে? হরিয়ানা, মেয়েদের খেলার কথা বলতে যে ছবিতে ‘দঙ্গল’-এর উপমা টানতে হয়, সে ছবিতে দৌড়-ঝাঁপই সার!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy