কেরিয়ারের প্রথম ওয়েব সিরিজ়ে গোয়েন্দার চরিত্রে অঙ্কুশ। ছবি: সংগৃহীত।
অঙ্কুশের প্রথম ওয়েব সিরিজ়। সেখানে তিনি আবার গোয়েন্দা। তাই সব মিলিয়ে ওটিটিতে মুক্তি পাওয়া নির্ঝর মিত্র পরিচালিত ‘শিকারপুর’ নিয়ে কৌতূহল থাকাটা স্বাভাবিক। শুক্রবার মুক্তির আগেই আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে সিরিজ়টি দেখার সুবর্ণসুযোগ উপস্থিত। তাই আর দেরি নয়।
উত্তরবঙ্গের পাহাড়ের কোলে ছোট্ট জনপদ শিকারপুর। বেশ ছিল। হঠাৎ এক দিন শান্ত মানুষগুলির জীবনে নেমে আসে আতঙ্কের পাহাড়। একে একে ‘শিকার’ হতে থাকে মানুষ। মৃতদের পদবি আবার ঘোষ। স্থানীয়দের বিশ্বাস, ‘এ পিছলা ভূতের কাজ’! ভূত না কি মানুষ? দেবী চৌধুরাণীর অভিশাপের সঙ্গে তার কী সম্পর্ক? প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে মাঠে নামে তরুণ গোয়েন্দা কেষ্ট (অঙ্কুশ)। সঙ্গে তাঁর পথপ্রদর্শক ‘ওস্তাদ’ দীনদয়াল বিশ্বাস (কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়)। শুরু হয় এক দুর্ধর্ষ সাপ-সিঁড়ির খেলা।
অঙ্কুশকে দিয়েই শুরু করা যাক। কমিক চরিত্র ছেড়ে নিজেকে নতুন ভাবে আবিষ্কার করার চেষ্টা তিনি বহু দিন শুরু করেছেন। এ বারে ওয়েব সিরিজ়। কেষ্ট একটি ছোট্ট স্টুডিয়ো চালায়। দীনদয়ালের বাড়িতে ভাড়া থাকে। আর প্রেম করে তার মেয়ে চুমকির (সন্দীপ্তা সেন) সঙ্গে। বড় গোয়ন্দা হওয়ার স্বপ্ন দেখা কেষ্টর চরিত্রে অঙ্কুশকে মানিয়েছে ভাল। স্লিং ব্যাগ। চেক শার্ট। কালো রোদচশমা। বাহন সাইকেল। কমেডি অঙ্কুশের হস্তগত। ফলে চরিত্রটিকে গড়েপিটে নিতে তাঁর অসুবিধা হয়নি। থানার ছোটবাবু বিমানের চরিত্রে দেবাশিস মণ্ডল বা জাদুকরের চরিত্রে সায়ন ঘোষকে ভাল লাগে। সন্দীপ্তা যথাযথ। আলাদা করে মনে জায়গা করে নেন কোরক সামন্ত। তিনি কেষ্টর সহকারী বোল্টুর চরিত্রে। শেষ নয়, এখনও রয়েছে।
ওস্তাদের মার যদি শেষ রাতে হয়, তা হলে এই সিরিজ়ের ‘ওস্তাদ’ অবশ্যই কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। এই সিরিজ়ের তিনি সৃজনশীল নিবেদকও বটে। তাঁর অভিনয় নিয়ে নতুন কিছু বলার নেই। পর্দায় তাঁর অভিনয় এতটাই ‘বড়’, তুলনায় বাকিদের অতি ক্ষুদ্র মনে হয়। প্রত্যাশা মতোই চমকে দিয়েছেন তিনি। ছোট ছোট চরিত্রে বাকিরা চিত্রনাট্যকে যোগ্য সঙ্গত করেছেন।
এ বারে কয়েকটি কথা। পরিচালকের সঙ্গে চিত্রনাট্য লিখেছেন সায়ক রায় এবং নীলাঞ্জন চক্রবর্তী। ন’টি এপিসোড। কিন্তু তুলনায় দর্শককে ধরে রাখার মতো আগ্রহ কিন্তু সব এপিসোডে চোখে পড়ে না। বরং শেষের দিকে গল্পের প্লটকে অহেতুক দীর্ঘায়িত করা হয়েছে। সম্পাদক শুভজিৎ সিংহ কোথাও কোথাও উদার হস্তে কাঁচি চালাতেই পারতেন। নির্মেদ থ্রিলার কার না পছন্দ? কিছু সাবপ্লট না রাখলেও ক্ষতি ছিল না। আবার কয়েকটি দৃশ্যে যৌক্তিকতার অভাব রয়েছে। যেমন ভূতের পিছু নিয়ে কেষ্টর পুকুর পেরোনো! বাড়ির মধ্যে পর পর খুন এবং খুনির গায়েব হয়ে যাওয়াকেও সরলীকরণ করা হয়েছে। সিরিজ় জুড়ে আলো-আঁধারির খেলায় রহস্য জমেছে ভাল। শিকারপুরকে চেনাতে শৌভিক বসুর ক্যামেরা বেশ ভাল কিছু টপ শট উপহার দিয়েছে। আবহসঙ্গীত মানানসই।
ইদানীং ওয়েব সিরিজ়ে নতুন গোয়েন্দাদের ছড়াছড়ি। সাম্প্রতিক অতীতে গোরাকে দর্শক পছন্দ করেছিলেন। রয়েছে ‘ড্যানি আইএনসি’র সুব্রত শর্মা। সেই তালিকায় নতুন সংযোজন কেষ্ট। ছোটখাটো ত্রুটি এড়িয়ে সিক্যুয়েলের আশা করাই যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy