Reema Lagoo, have a look at the colourful life of Bollywood’s favourite mother dgtl
Reema Lagoo
৩০ বছরে মায়ের চরিত্র, কুলভূষণের সঙ্গে শয্যাদৃশ্য, শুটিংয়ের মাঝেই হার্ট অ্যাটাক হয় ‘বলিউডের মা’য়ের
তিনি বলিউডের মা। মাত্র ৩০ বছর বয়স থেকে মায়ের চরিত্রে অভিনয় করা রিমা লাগুর চার দশকের কেরিয়ার যেন এক রঙিন অধ্যায়। শুটিং করতে করতেই হার্ট অ্যাটাক, কুলভূষণ খারবান্দার সঙ্গে অন্তরঙ্গ শয্যাদৃশ্য, বয়সে এক বছরের ছোট সঞ্জয় দত্তের অনস্ক্রিন মা... রিল লাইফের মতো অভিনেত্রীর ব্যক্তিগত জীবনেও বর্ণময়।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ৩০ মে ২০২০ ০৯:০০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
তিনি বলিউডের মা। মাত্র ৩০ বছর বয়স থেকে মায়ের চরিত্রে অভিনয় করা রিমা লাগুর চার দশকের কেরিয়ার যেন এক রঙিন অধ্যায়। শুটিং করতে করতেই হার্ট অ্যাটাক, কুলভূষণ খারবান্দার সঙ্গে অন্তরঙ্গ শয্যাদৃশ্য, বয়সে এক বছরের ছোট সঞ্জয় দত্তের অনস্ক্রিন মা... রিল লাইফের মতো অভিনেত্রীর ব্যক্তিগত জীবনেও বর্ণময়।
০২১৭
রিমার আসল নাম নয়ন ভাড়গড়ে। ১৯৫৮ সালের ২১ জুন মহারাষ্ট্রে জন্ম নয়নের। মা ছিলেন মরাঠি সিনেমা এবং নাট্য জগতের পরিচিত মুখ। তাই অভিনয়ে আসার ইচ্ছে ছিল ছোটথেকেই।
০৩১৭
অভিনয় শুরু করেন অনেক ছোটবেলায়। না সিনেমায় নয়। নাটকেই তাঁর অভিনয় জীবনের হাতেখড়ি। সময়টা আশির দশক। মরাঠি থিয়েটার কাঁপাচ্ছেন তিনি। কিন্তু সিনেমা তখন দূর অস্ত্। নাটক করে যা রোজগার হচ্ছিল তাতে আর যাই হোক জীবনে সচ্ছলতা আসছিল না। তাই অভিনয়ের পাশাপাশি ব্যাঙ্কে চাকরি নেন রিমা।
০৪১৭
ঠিক সেই সময়েই তাঁর সহকর্মী বিবেক লাগুর সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। বিবেক নিজেও নাটকের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। নাটকের প্রতি প্রেমই কাছাকাছি নিয়ে আসে দু’জনকে। দু’বছর প্রেম করার পর ১৯৭৮ সালে বিয়ে করেন তাঁরা।
০৫১৭
রিমার ফিল্মি কেরিয়ার কিন্তু শুরু হয় বিয়ের পরেই। বিয়ের ঠিক এক বছর পর মারাঠি ছবি ‘সিংহাসন’-এ ব্রেক মেলে রিমার। অভিনয় প্রশংসিত হলেও খ্যাতি কিন্তু তখনও দূর অস্ত্।
০৬১৭
ছবিতে সুযোগ না পেলেও তাঁর নাটকের প্রতি ভালবাসা কিন্তু এতটুকুও কমেনি। কে জানত এই থিয়েটারই তাঁকে এনে দেবে বলিউড ব্রেক? মুম্বইয়ের পৃথ্বী থিয়েটারে লেখক পিএল দেশপাণ্ডের ‘মাই ফেয়ার লেডি’ নাটকে অভিনয় করছিলেন রিমা। পৃথ্বীর মালিক ছিলেন শশী কপূর। রিমার অভিনয় নজর কাড়ে তাঁর।
০৭১৭
শশীর হাত ধরেই ‘কলিযুগ’ ছবিতে ব্রেক মেলে রিমার। যদিও সেই ছবিতে বিশেষ কিছুই করার ছিল না তাঁর। ওই একই সময়ে পরিচালক গোবিন্দ নিহলানিরও পছন্দ হয়ে যায় রিমার অভিনয়। নিজের ছবি ‘আক্রোশ’-এ তাঁকে অভিনয়ের সুযোগ করে দেন গোবিন্দ।
০৮১৭
তবে মায়ের চরিত্রে নয়। ওই ছবিতে রিমার চরিত্রটি ছিল একজন নর্তকীর। সেই ছবিতেই কুলভূষণ খারবান্দার সঙ্গে রিমাকে একটি শয্যাদৃশ্যে অভিনয় করতে হয়েছিল। ওই রকম ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে এর আগে কোনওদিনও অভিনয় করেননি তিনি।
০৯১৭
সে সময় রিমা বিবাহিতও। অসুবিধে হয়েছিল তাঁর। অস্বস্তিও হয়েছিল। সে কথা পরবর্তীকালে বিভিন্ন সাক্ষাৎকারেও বলেছেন অভিনেত্রী।কিন্তু সমস্ত অসুবিধেকে উপেক্ষা করে সিনেমার প্রয়োজনে সেই দৃশ্যে অভিনয় করেছিলেন রিমা। বলাই বাহুল্য বেশ দক্ষতার সঙ্গেই অভিনয় করেছিলেন রিমা।
১০১৭
হিন্দি ছবিতে হাতেখড়ি তো হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু তখনও খ্যাতি ছিল অধরা। সাল ১৯৮৮। আমির খান বলিউডে ডেবিউ করছেন। ছবির নাম ‘কয়ামত সে কয়ামত তক’। আমিরের বিপরীতে রয়েছেন জুহি চাওলা। সেই ছবিতে রিমাকে অফার দেওয়া হয় জুহির মায়ের চরিত্রে অভিনয় করার। রিমার বয়স তখন মাত্র ৩০।
১১১৭
রাজি হয়ে যান রিমা। অভিনয় করেন জুহির মা’র চরিত্রে। মাত্র ৩০ বছরেও মধ্যবয়স্ক এক মায়ের চরিত্রে অভিনয় করতে কোনও অসুবিধেই হয়নি তাঁর। তবে রিমার অভিযোগ ছিল, ওই ছবিতে তাঁর অনেক অংশ বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। অভিমানি রিমা ঠিক করেন, হিন্দি ছবি ছেড়ে দিয়ে মারাঠি ছবি-থিয়েটারেই ফিরে যাবেন।
১২১৭
কিন্তু হঠাৎ করেই তাঁর কাছে সলমন খান অভিনীত ‘ম্যয়নে প্যায়ার কিয়া’-র অফার আসে। এখানেও সেই মায়ের চরিত্র। অনস্ক্রিন ছেলে সলমন তাঁর থেকে মোটে সাত বছরের ছোট। একটু অনিচ্ছা নিয়েই সেই ছবিতে অভিনয় করেন রিমা। ব্যাস, এরপর আর তাঁকে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি।
১৩১৭
তাঁর কেরিয়ারগ্রাফ ক্রমশ উপরে উঠতে থাকে। বক্সঅফিসে অভাবনীয় সাফল্য পায় ওই ছবি। নতুন মা পেয়ে যায় বলিউড। এর পর মা মানেই রিমা লাগু। শাহরুখ, সলমন, কাজল এমনকি বয়সে মাত্র একবছরের ছোট সঞ্জয় দত্তের মায়ের চরিত্রেও অভিনয় করেছেন তিনি।
১৪১৭
অভিনয় করেছেন হিন্দি ধারাবাহিকেও। নব্বইয়ের দশকের দু’টি জনপ্রিয় হিন্দি ধারাবাহিক ‘শ্রীমান শ্রীমতী’ আর ‘তু তু ম্যায় ম্যায়’-তে রিমাই ছিলেন অন্যতম মুখ্য চরিত্রে। সেখানেও খিটখিটে শাশুড়ির চরিত্রে তাঁর অভিনয় নজর কেড়েছিল সবার।
১৫১৭
২০১৭-র ১৭ মে। রিমা মহেশ ভট্টের ধারাবাহিক ‘নামকরণ’-এর জন্য শুটিং করছিলেন। হঠাৎ করেই বুকে ব্যথা হয় তাঁর। সবাই ভেবেছিল অ্যাসিডিটি বুঝি। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় ভর্তি করা হয় মুম্বইয়ের এক বেসরকারি হাসপাতালে। জানা যায়, হার্ট অ্যাটাক হয়েছে তাঁর।
১৬১৭
সেই রাতে হাসপাতালেই মারা যান রিমা। বয়স হয়েছিল মাত্র ৫৯ বছর। বলিউডের মায়ের মৃত্যুতে শোকে পাথর হয়ে গিয়েছিল ইন্ডাস্ট্রি।
১৭১৭
সঞ্জয় দত্ত লিখেছিলেন, আরেকবার মা’কে হারালাম। শোকপ্রকাশ করেছিলেন সলমন খান-শাহরুখরাও। স্নেহময়ী মায়ের চরিত্রে যে মাইলস্টোন তৈরি করেছিলেন রিমা লাগু, তা আজও সিনেমাপ্রেমীদের মনে ভাস্বর।