Advertisement
২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
lata mangeshkar

Lata Mangeshkar Death: ক্যামেরাতেও জাদুকর, বন্দি কত মায়া-মুহূর্ত!

পণ্ডিত রামনারায়ণজি আমার গুরু। শুনেছি, আমার জন্মের আগে বাড়িতে একটি বড় অনুষ্ঠান হয়েছিল।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

v
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৮:২০
Share: Save:

আমার যখন কার্যত চোখ ফোটেনি, তারও আগে থেকে আমাদের বাড়িতে যাতায়াত লতাজির। তাই স্মৃতির ভান্ডারে যে কত কিছু জমে রয়েছে! আজ সেই সব স্মৃতি ভিড় করে এসে চোখ ঝাপসা করে দিচ্ছে বারবার।

মুম্বইয়ের খার অঞ্চলের গীতাঞ্জলি ছিল আমাদের বাংলো। লতাজি, আশাজি (আশা ভোঁসলে), গীতা মাসি (দত্ত) নিয়মিত আসতেন। অনেক গান-বাজনা হত। সুবীরকাকু (সেন) আসতেন সপরিবারে। আসলে, বাবাকে (হেমন্ত মুখোপাধ্য়ায়) এঁরা প্রত্যেকে খুব ভালবাসতেন। তাই ডাকলে, এমনকি অনেক সময়ে না ডাকলেও, বাড়িতে চলে আসতেন।

পণ্ডিত রামনারায়ণজি আমার গুরু। শুনেছি, আমার জন্মের আগে বাড়িতে একটি বড় অনুষ্ঠান হয়েছিল। পন্ডিতজি ছিলেন সেখানে। রাজ কপূর ছিলেন মুখ্য অতিথিদের মধ্যে। সেখানে লতাজি বাবা-মায়ের ঘরে এসে মাটিতে বসে গান গেয়েছিলেন। বাবা সঙ্গে বাজিয়েছিলেন হারমোনিয়াম। ‘এহসান তেরা হোগা মুঝ পর/ দিল চাহতা হ্যায় উয়ো কহনে দো’ — জংলি ছবির এই গানটি ছিল লতাজির খুব প্রিয়। এই গান মেঝেতে বসে উনি গাইছেন। আর তার সঙ্গে হারমোনিয়ামে সঙ্গত করছেন বাবা—এই দৃশ্য চোখের সামনে ভেসে উঠলে, আমার গায়ে এখনও কাঁটা দেয়।

অনেকে জানেন না, লতাজি ‘আনন্দঘন’ ছদ্মনামে চারটি মরাঠি ছবির গানে সুর দিয়েছিলেন। সেই সময়ে বাবাকে গান গাইয়েছিলেন তাঁর দেওয়া সুরে। আরও একটি বিষয় সম্পর্কেও মানুষ হয়তো সে ভাবে অবগত নন, তা হল, লতাজি ছিলেন খুব ভাল এক জন ফটোগ্রাফার। যাঁরা ওঁর তোলা ছবি না দেখেছেন, তাঁরা বিশ্বাস করতে পারবেন না যে, ক্যামেরা হাতে পেলে, সাদা-কালোয় কি ম্যাজিক তৈরি করতে পারতেন লতাজি! আমার বোধহয় তখন বছর তিনেক বয়স। মাসিরা আমায় শাড়ি পরিয়ে দিয়েছিল। লতাজি এসেছিলেন সে দিন। বেশ কয়েকটি ছবি তুলে দিয়েছিলেন আমার, যা অমূল্য সম্পদ।

আর এক বার, আমি তখন কলেজে। বাবা কোনও কাজে লতাজির বাড়ি গিয়েছেন, আমাকেও সঙ্গে নিয়ে গিয়েছেন। আমাকে দেখে উনি একটি গয়নার বাক্স নিয়ে এলেন। তার থেকে বেছে একটি বিশেষ ডিজ়াইনের নবরত্ন হার আমার জন্য। বাবার হাতে
তা দিলেন।

বাবাকে এতটাই শ্রদ্ধা করতেন লতাজি যে, বাবার ‘হোম প্রোডাকশনের’ রেকর্ডিংয়ে কোনও দিন একটা পয়সা নেননি। এক বার বাবার প্রযোজনায় এবং হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় ‘বিবি অউর মকান’ গানের রেকর্ডিংয়ে সত্যজিৎ রায় এসেছিলেন। সৌমেন্দু রায় ছিলেন ছবির ক্যামেরায়, সেই সূত্রেই সম্ভবত। সে দিন রেকর্ডিংয়ে ছিল লতাজি আর আশাজির ডুয়েট। সত্যজিৎ আগ্রহ নিয়ে রেকর্ডিং শুনলেন তো বটেই, একই রকম উৎসাহ নিয়ে লতাজির
সঙ্গে ছবিও তুললেন। আরও ছবি তোলা হয়েছিল সবাই মিলে। অপূর্ব সে সব ছবি।

বাড়ি বদলের কারণে পরে অনেক ছবি হারিয়ে গিয়েছে। এই ক্ষতি সত্যিই পূরণ হওয়ার নয়। তবে ছবি হারালেও, আরও কোটি কোটি ভারতবাসীর মতো আমার হৃদয়েও লতাজি থেকে যাবেন। আজীবন।

অনুলিখন: অগ্নি রায়

অন্য বিষয়গুলি:

lata mangeshkar Celebrity
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy