তাজপুরের সমুদ্রসৈকতে ভূপাল-গদাধর-রানিমা
শ্যুটিংয়ে ছুটির ঘণ্টা কখন বাজবে? ‘প্যাক আপ’ বললেই দে দৌড়! শাড়ির আঁচল, ধুতির কোঁচা, পাঞ্জাবির দড়ি হাতে নিয়ে ‘রেডি স্টেডি গো’-এর ভঙ্গিতে প্রস্তুত। ঘণ্টা বাজতেই ছুট্টে মেকআপ রুম! পোশাক বদলে গাড়িতে উঠেই গান ‘আমাদের ছুটি ছুটি, চল নেব লুটি…’!
সে রকমই পরিস্থিতি ছিল শুক্রবার সন্ধেবেলা। টালিগঞ্জের ইন্দ্রপুরীতে সে দিন রানিমা, গদাধর ও ভূপালের মন হু হু করছিল। সমুদ্র ডাকছিল যে! সারা রাত ধরে হাইওয়ের হাওয়া খেতে খেতে সমুদ্রের বাধা না মানা হাওয়ার দিকে যেতে হবে যে! শ্যুটিংয়ে কার মন থাকে?
কেমন ছুটি কাটালেন ৩ টেলি-তারকা? খাওয়া দাওয়া কেমন ছিল? কী কী করলেন সেখানে? বেড়ানোর গল্প শুনতে অভিনেত্রী দিতিপ্রিয়া রায়, সৌরভ সাহা ও বিশ্বাবসু বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করল আনন্দবাজার ডিজিটাল।
মোট ২২ জন মিলে তাজপুরে ঘুরতে গিয়েছিলেন তাঁরা। দিতিপ্রিয়ার বাবা-মায়ের বন্ধু, সৌরভের পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে বিশ্বাবসুও। অনেকের সঙ্গেই প্রথম আলাপ। তাতেও আনন্দে খামতি পড়েনি কোথাও। ২২ জন মিলেই আড্ডা, নাচ-গানে মেতেছিলেন।
প্রথম দিন রাত ১২টায় গিয়ে রিসর্টে ঢুকলেন দিতিপ্রিয়া, বিশ্বাবসু ও সৌরভ অ্যান্ড কোং। সারা দিন শ্যুট করার পরে হোটেলে ঢুকেই বিছানায় ধপাস! নাক ডাকিয়ে ঘুম না দিলে হয় নাকি! কিন্তু, এ ক্ষেত্রে গল্পটা একটু অন্য রকম। শহরের কলকাকলি থেকে একটু দূরে যেতেই ক্লান্তি যেন ভ্যানিশ! ঘুম ছিল না তাঁদের চোখে। মধ্যরাতে হোটেলে ঢুকে হাতমুখ ধুয়ে পরের দিন ভোর পর্যন্ত আড্ডা চলল প্রায় ২২ জন মিলেই। সৌরভের কথায়, ‘‘শহর ছেড়ে সমু্দ্রের সামনে বসে থাকার আনন্দটাই অন্য। মন্দারমণি, দীঘার চাইতে তাজপুরের সৈকত আমার একটু বেশিই পছন্দ। ভীষণ শান্ত। তাই শুক্রবার সন্ধ্যে থেকেই সেটে প্রচন্ড উত্তেজিত ছিলাম আমরা ৩ জনই।’’
একটু ঘুমিয়ে বেলা বাড়তেই সকলে মিলে সমুদ্রসৈকতে গেলেন তাঁরা। সৌরভের সূত্রে একটি ছাউনি বুক করা ছিল। সেখানে বসে সামুদ্রিক মাছে পেটপুজো। পমফ্রেট, আমোদি, ভেটকি…কী না ছিল! ৩ অভিনেতা-অভিনেত্রী অবশ্য সমুদ্রে স্নান করেননি। কিন্তু জলে পা ভিজিয়ে সারা সপ্তাহের ক্লান্তি মুছে ফেলেছিলেন। ও দিকে বালি-খেলায় মত্ত ছিল কচিকাঁচারা। বিশ্বাবসুর কথায়, ‘‘জুনিয়র গদাধর (সৌরভ সাহার ছেলে) কত কী বানানোর চেষ্টা করছিল। বড্ড ব্যস্ত ছিল সে। কখনও দুর্গ, কখনও আবার ছোট বাড়ি। ওরা নিজেদের দুনিয়ায় মেতে ছিল। আমরাও আমাদের দুনিয়ায়। এত দিন বাদে বেড়াতে গিয়েছি বলে আমার কাছে এই ছোট্ট ট্রিপটা যেন স্বর্গীয়!’’ তবে তাদের সঙ্গে আর এক জনও ছিলেন বটে। সবেমাত্র অষ্টাদশী হয়েছেন বলে কি ছেলেমানুষি উধাও হয়ে যাবে? ‘রাণী রাসমণি’র বৃদ্ধা রানিমাও বালি দিয়ে নাম লিখতে, দুর্গ বানাতে বসে পড়েছিলেন।
আর সন্ধে হতেই আগুন জ্বালিয়ে, গান চালিয়ে নাচ! এমন ভাবেই দেড় দিন বড্ড ভাল কেটেছে ‘রাণী রাসমণি’ পরিবারের ৩ সদস্যের। তবে চমক অন্যখানে! স্থানীয় মানুষ থেকে শুরু করে অন্যন্য পর্যটকরা কেউ প্রথমে চিনতেই পারেননি সেই ৩ জনকে! এ দিকে ধারাবাহিক তো রোজই প্রায় দেখা হয়। তবে এমন কী পরিবর্তন হয়েছিল দিতিপ্রিয়া-সৌরভ-বিশ্বাবসুর?
সমুদ্রসৈকতে বেড়াতে গিয়েছেন বলে কথা! একটু কেতাদুরস্ত তো হতেই হবে। এমনই ভোল বদলে গিয়েছিল যে প্রথম প্রথম চেনাই যায়নি রামকৃষ্ণ, রানিমা ও ভূপালচন্দ্রকে। কখনও তাঁরা রোদচশমা পরে রং-বেরঙের পোশাকে ছবি তুলছেন, কখনও বা সুইমিং পুলে জলকেলি করছেন। তবে বেশ খানিকক্ষণ তাকিয়ে থাকার পর বাকি পর্যটকরা তাঁদের চিনতে পেরে ভিড় জমিয়েছিলেন। ছবি তোলা, কথা বলা— অনুরাগীদের বঞ্চিত করেননি টেলি-তারকারা।
দিতিপ্রিয়ার কথায়, ‘‘তবে শুধু চিনতে পারার সমস্যা হয়নি। ২২ জনের ভিড়ের মধ্যে আমাদের খুঁজে পাওয়াটাও বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আর আমরা যেখানেই যাই, এমনই হুল্লোড় করে থাকি।’’
ফিরে আসার পরে ছবি দেওয়ার ব্যাপারে বিলম্ব হয়নি। নেটমাধ্যমে ছবি পড়তেই অনুরাগীরা হতবাক! তাঁদের ‘বিচ লুক’ দেখে মুগ্ধ নেটাগরিকরা। কেউ লিখলেন, ‘আধুনিক ভূপাল ও আধুনিক রামকৃষ্ণ’, কেউ লিখেছেন, ‘ভূপাল, গদাধর ও রানিমার চেহারায় একবিংশ শতাব্দীর ছোঁয়া!’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy