রানি মুখোপাধ্যায়, অশোক মুখোপাধ্যায় এবং আয়ুষ্মান খুরানা।
সব হিসেব পাল্টে দিয়েছেন অশোক মুখোপাধ্যায়। যশ চোপড়া নন! তিনিই রানি মুখোপাধ্যায়ের ‘শ্বশুরমশাই’। আবার আয়ুষ্মান খুরানার ‘বাবা’! মুম্বইয়ের অনেকেই তাঁকে চেনেন। সুজিত সরকার, অমিত শর্মার সঙ্গে ওঠা বসা তাঁর। খুব শিগগিরি রানির সঙ্গে এক ফ্রেমেও দেখা যাবে তাঁকে। শুধু কি এই? কলকাতায় তাঁর আরও এক ছেলে থাকেন। তিনি অনির্বাণ ভট্টাচার্য! মঙ্গলবারই তিনি মুম্বই ছেড়ে কলকাতায় পা রেখেছেন। কাস্টিং ডিরেক্টর অনিমেষ বাপুলিও এঁকে চেনেন।
আসল ঘটনা কী? অশোক মুখোপাধ্যায় তখন বিমানে। তাই তাঁর হয়ে আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেছেন অনিমেষ। ৭০ ছুঁইছুঁই এই বর্ষীয়ান অভিনেতা বলিউডের চেনা মুখ। একাধিক বিজ্ঞাপনী ছবিতে অভিনয় করেছেন। সম্প্রতি তিনি কাজ করেছেন রানি মুখোপাধ্যায়-অনির্বাণ ভট্টাচার্য অভিনীত ‘মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে’ ছবিতে। পর্দায় তিনি অনির্বাণের বাবা। সেই সূত্রে রানির শ্বশুরমশাই! বড় পর্দার ‘টিনা’র সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?
তত ক্ষণে কলকাতার মাটি ছুঁয়েছে বিমান। বিমানবন্দর থেকে অশোক মুখোপাধ্যায় সরাসরি বলেছেন, ‘‘রানি আমার ভীষণ যত্নআত্তি করেছেন। একটা সময়ের পরে ওঁকে নাম ধরেই ডাকতাম। চা চেয়ে কফি পেয়েছিলাম। তখন হাসতে হাসতে রানি বলেছিলেন, ‘‘এঁরা কলকাতার মানুষ। কফি নয় চা খেতে ভালবাসেন।’’ আমার কাছে দুঃখও করে বলেছেন, ভাল বাংলা বলতে পারেন না! পঞ্জাবি ঘরে বিয়ে হয়েছে। মা ছাড়া বাংলায় কথা বলার আর কেউ নেই তাঁর। মেয়ে আদিরার ছবিও দেখিয়েছেন আমায়।’’
মোট ছয় দিন তিনি রানির সঙ্গে অভিনয় করেছেন। দু’দিন মুম্বইয়ে। চার দিন ইওরোপে। ছবির প্রযোজক-পরিচালক নিখিল আডবানি দরাজ গলায় তাঁর প্রশংসা করেছেন।
সদ্য অশোক মুখোপাধ্যায় বিজ্ঞাপনী ছবির শ্যুট শেষ করলেন। সেখানেই তিনি আয়ুষ্মানের ‘বাবা’! এই চরিত্রের জন্য কলকাতা থেকে অডিশন দিয়েছিলেন বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, প্রদীপ মিত্রের মতো অভিনেতা। কিন্তু শেষ হাসি হাসেন অশোকবাবু। তাঁর সঙ্গে কাজ করে এতটাই খুশি আয়ুষ্মান যে নিজে এসে বর্ষীয়ান অভিনেতার সঙ্গে সেলফি তুলেছেন! আড্ডাও দিয়েছেন অনেক। কী করে সবাইকে ছাপিয়ে গেলেন বর্ষীয়ান অভিনেতা? অশোকবাবুর কথায়, তিনি শুনেছেন তাঁর চেহারায় পিতৃত্বের ছাপ বেশি। খাঁটি বনেদি বাঙালিয়ানাও রয়েছে। তাই তাঁকেই পছন্দ করেছে বিজ্ঞাপনের সংস্থা। কারণ, এই ধরনের কাজে অভিনয়ের থেকেও চেহারায় বেশি জোর দেওয়া হয়।
কে এই অশোক মুখোপাধ্যায়? অভিনেতার অতীত জানলেও তাক লাগবে। অভিনয়ে আসার আগে তিনি ইস্টবেঙ্গল হকি দলের চ্যাম্পিয়ন ছিলেন। ১৯৭১ সালে ওই দলের হয়েই জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। আটের দশকে প্রথম অভিনয়ে আসেন তিনি। পর্দা এবং মঞ্চাভিনেতা উৎপল দত্তের নাট্যদল ‘লিটল থিয়েটার গ্রুপ’-এর সদস্য ছিলেন। সেই সূত্রে একাধিক নাটকেও অভিনয় করেছেন। দেবশঙ্কর হালদারের সঙ্গে তাঁকে দেখা গিয়েছে ‘নিঃসঙ্গ সম্রাট’-এ। পাশাপাশি, বড় এবং ছোট পর্দাতেও তাঁকে দেখা গিয়েছে। তালিকায় সন্দীপ রায়ের ‘হিট লিস্ট’, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘শব্দ’, ‘ল্যাপটপ’, ‘দৃষ্টিকোণ’, চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘নির্বাসিত’ রয়েছে। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, জিৎ, ঋত্বিক চক্রবর্তী, টোটা রায়চৌধুরীর সঙ্গে পর্দা ভাগ করেছেন তিনি। তাঁর সাম্প্রতিক ধারাবাহিক জি বাংলার ‘পিলু’। ধারাবাহিকে তিনি পিলুর দাদু ‘সনাতন মিত্র’। খুব শিগগিরিই তাঁকে দেখা যাবে বড় পর্দায়, সিরিজেও।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy