একাধিক নায়িকার সঙ্গে প্রেম, ক্ষণস্থায়ী দাম্পত্য, ব্যর্থ নায়ক রাজীব কপূর ছিলেন নিঃসঙ্গ
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১১:২১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
অভিনয়ের পাশাপাশি সুযোগ পেয়েছিলেন পরিচালনা, প্রযোজনা-সহ চলচ্চিত্রের অন্য শাখাতেও। কিন্তু প্রতি ক্ষেত্রেই প্রত্যাশিত সাফল্য ছিল অধরা। কপূর পরিবারের অন্য সদস্যদের খ্যাতি ও জনপ্রিয়তার ছায়াতেই ঢাকা থেকে গিয়েছেন রাজীব কপূর। পরিবারের সকলের আদরের ‘চিম্পু’।
০২১৮
রাজ ও কৃষ্ণা কপূরের ছোট ছেলে রাজীবের জন্ম ১৯৬২ সালের ২৫ অগস্ট। ছবিতে আত্মপ্রকাশ ২১ বছর বয়সে। তাঁর প্রথম ছবি ‘এক জান হ্যায়ঁ হম’ মুক্তি পেয়েছিল ১৯৮৩ সালে। তার আগে কয়েকটি ছবিতে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছিলেন রাজীব।
০৩১৮
এর পর আটের দশকের শুরুতে বেশ কিছু ছবিতে নায়কের ভূমিকায় ছিলেন রাজীব। ‘আসমান’ ছবিতে টিনা মুনিমের বিপরীতে তিনি অভিনয় করেন দ্বৈত ভূমিকায়। পাশাপাশি, ‘মেরা সাথি’, ‘লাভা’, ‘জবরদস্ত’-সহ বেশ কিছু ছবিতে তাঁকে দেখা গিয়েছিল।
০৪১৮
বেশ কিছু ছবির পরেও ছেলে নায়ক হিসেবে জনপ্রিয়তা পেলেন না দেখে আসরে অবতীর্ণ হন স্বয়ং রাজ কপূর। তিনি ১৯৮৫ সালে পরিচালনা করেন ‘রাম তেরী গঙ্গা মৈলী’। ছবিতে নবাগতা মন্দাকিনীর বিপরীতে নায়ক ছিলেন রাজীব।
০৫১৮
ছবিটি বক্স অফিসে ছিল সুপারহিট। ছবির গানগুলিও জনপ্রিয় হয়। একইসঙ্গে সাহসী ও খোলামেলা দৃশ্যের জন্য ছবিটি যথেষ্ট সমালোচিতও হয়েছিল। কিন্তু ব্লকবাস্টার ছবির নায়ক হয়েও রাজীবের কেরিয়ারে পালে বাড়তি কোনও বাতাস যোগ হল না।
০৬১৮
বরং, রাজীবের তুলনায় মন্দাকিনী এই ছবির সুবাদে চলে আসেন প্রচারের বৃত্তে। হলে ছবিটির মুক্তির পরে রাজীবের মনে হয়েছিল, তাঁর থেকে ছবিতে অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে নায়িকা মন্দাকিনীকেই।
০৭১৮
এর পর ‘লাভার বয়’, ‘জবরদস্ত’, ‘হম তো চলে পরদেশ’, ‘নাগ নাগিন’, ‘জ্বলজ্বলা’-সহ আরও কিছু ছবিতে অভিনয় করেন রাজীব। কিন্তু কোনও ছবিই সাফল্যের নিরিখে পৌঁছতে পারেনি ‘রাম তেরী গঙ্গা মৈলী’-র ধারেকাছে।
০৮১৮
দিলীপকুমার এবং রেখার সঙ্গে রাজীব অভিনয় করেছিলেন ‘আগ কা দরিয়া’ ছবিতে। কিন্তু ছবিটি কোনও দিন দিনের আলোর মুখ দেখতে পায়নি। ১৯৯০ সালে ‘জিম্মেদার’ ছবিতে শেষ বার অভিনয় করেন রাজীব। এর পর তাঁকে আর কোনও দিন অভিনেতা হিসেবে পাওয়া যায়নি।
০৯১৮
অভিনয় থেকে সরে আসার পরে রাজীবকে প্রযোজক হিসেবে পেয়েছিল বলিউড। ১৯৯১ সালে তিনি প্রযোজনা করেন সুপারহিট ‘হীনা’ ছবিটির। পরিচালক ছিলেন তাঁর দাদা রণধীর কপূর। ঋষি কপূর এবং পাকিস্তানের নায়িকা জেবা বখতিয়ারের জুটিতে এই ছবির গানও ছিল জনপ্রিয়।
১০১৮
প্রযোজক রাজীবের পরবর্তী ছবিগুলি অবশ্য সাফল্য পায়নি। ১৯৯৬ সালে মুক্তি পেয়েছিল ‘প্রেম গ্রন্থ’। ঋষি কপূর এবং মাধুরী দীক্ষিত ছিলেন নায়ক নায়িকা। এই ছবির পরিচালক এবং প্রযোজক ছিলেন রাজীব। কিন্তু ঋষি কপূর, মাধুরী দীক্ষিত, শাম্মি কপূর, অনুপম খের, ওম পুরী, প্রেম চোপড়ার মতো কুশীলবের অভিনয়ও ছবিটিকে সাফল্যের মুখ দেখাতে পারেনি।
১১১৮
এর পর বলিউড থেকেই কার্যত সরে যান রাজীব। অভিনয়, পরিচালনা, প্রযোজনা— কোনও শাখাতেই তাঁকে আর দেখা যায়নি। ১৯৯৯ সালে আরও এক বার তাঁকে ফিরে পায় বলিউড। প্রযোজনা করেন ‘আ অব লওট চলে’। ছবির পরিচালক ছিলেন তাঁর দাদা ঋষি কপূর।
১২১৮
অক্ষয় খন্না, ঐশ্বর্যা রাই অভিনীত ‘আ অব লওট চলে’ বক্স অফিসে ব্যর্থ হয়। এর পর রাজীব কপূর আর কোনও ছবি পরিচালনা বা প্রযোজনা করেননি।
১৩১৮
রাজীবের প্রথম ছবি ‘এক জান হ্যায় হম’-তে নায়িকা ছিলেন দিব্যা রানা। তাঁর সঙ্গে রাজীবের সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল। পরবর্তী কালে অভিনেত্রী তথা রাজনীতিক নাগমার সঙ্গেও রাজীবের সম্পর্ক ছিল বলে শোনা যায়।
১৪১৮
তবে এর কোনওটাই শেষ অবধি বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। রাজীব বহু দিন অবধি অকৃতদার ছিলেন। শেষে ২০০১ সালে তিনি আরতি সবরওয়ালকে বিয়ে করেন ৩৯ বছর বয়সে।
১৫১৮
পেশায় স্থপতি আরতি চাকরি করতেন কানাডায়। তাঁর সঙ্গে রাজীবের দাম্পত্য স্থায়ী হয়েছিল মাত্র ২ বছর। ২০০৩ সালে তাঁদের বিয়ে ভেঙে যায়। বিচ্ছেদের কারণ নিয়ে মুখ খোলেননি দু’জনের কেউই।
১৬১৮
রাজীবের প্রিয় ছবি ছিল ‘মেরা নাম জোকার’। ছবিটি তিনি দেড়শো বারেরও বেশি দেখেছিলেন। শোনা যায়, রাজীবকে নিয়ে ‘বাস কন্ডাক্টর’ বলে একটি ছবি করার ইচ্ছে ছিল রাজ কপূরের। কিন্তু শেষ অবধি ছবিটির কাজ শেষ হয়নি।
১৭১৮
১৯৯৬ সালে ‘শাদি কা সিজন’ নামে একটি টিভি ধারাবাহিক প্রযোজনা করার কথা ছিল রাজীবের। কিন্তু শেষ অবধি সেই কাজও অসমাপ্তই থেকে যায়। ফলে টেলিভিশনে রাজ কপূরের ছোট ছেলের অভিযান অধরাই থেকে যায়।
১৮১৮
শেষ বয়সে রাজীব ছিলেন নিঃসঙ্গ এবং একা। দাদা ঋষি কপূরের প্রয়াণের এক বছরও হয়নি। নিজের বাড়িতে ৫৮ বছর বয়সে হৃদরোগে চলে গেলেন ভাই, রাজীব।