Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Rajesh Khanna

অমিতাভ-জয়ার প্রেম বিয়ে পর্যন্ত গড়ানোয় ভীষণ অসন্তুষ্ট হন রাজেশ খন্না

সাল ১৯৭৩। পরিচালক প্রকাশ মেহরার ‘জঞ্জির’ ছবি ব্লকবাস্টার হিট। এরও নায়ক-নায়িকা অমিত-জয়া। মাঝেরদু’টো বছর অনেকটা বদলে দিয়েছে তাঁদের পর্দার কেমিস্ট্রি।

অমিতাভ-জয়ার বিয়ে। ফাইল চিত্র।

অমিতাভ-জয়ার বিয়ে। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২০ ১৪:৪৮
Share: Save:

এক দিকে করোনা আবহ, অন্য দিকে ঘূর্ণিঝড় নিসর্গ-এর আশঙ্কা, তার মাঝেও বুধবার সকাল থেকে বলিউডে বিশাল হইচই। অমিতাভ বচ্চন-জয়া ভাদুড়ি আজকের দিনে ৪৭ বছর আগে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন। কর্ণ জোহর, বিপাশা বসু হয়ে বলিউডের সমস্ত তারকা, বচ্চন-অনুরাগীদের শুভেচ্ছায় ভাসছে বিগ বি-র সোশ্যাল হ্যান্ডেল। তিনি নিজেও বিবাহবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সামনে এনেছেন তাঁদের বিয়ের অজানা গল্প। বাবা হরিবংশ রাই বচ্চন না হুকুম করলে বিয়েই নাকি হত না অমিত-জয়ার!

সত্যি? জানতে গেলে পিছু হাঁটতে হবে ডাউন মেমরি লেন ধরে...

সাল ১৯৭১। হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়ের ‘গুড্ডি’ সুপারহিট। নায়ক-নায়িকা সমীর ভঞ্জ-জয়া ভাদুড়ি। সাল ১৯৭৩। পরিচালক প্রকাশ মেহরার ‘জঞ্জির’ ছবি ব্লকবাস্টার হিট। এরও নায়ক-নায়িকা অমিত-জয়া। মাঝেরদু’টো বছর অনেকটা বদলে দিয়েছে তাঁদের পর্দার কেমিস্ট্রি। রিল রোম্যান্স ধীরে ধীরে পাখা মেলছে বাস্তবেও। ‘গুড্ডি’-র সেটের ভাললাগা ততদিনে গভীর ভালবাসায়। আরবসাগরের তখনকার ‘বম্বে’-তে ফিসফিস, কানাকানি অমিত-জয়ার প্রেম নিয়ে। অমিতের বাবা কবি হরিবংশ রাই বচ্চনের কানে হালকা খবর পৌঁছলেও কতটা গাঢ় ছেলে-হবু বউমার রসায়ন, তখনও জানেন না।

রাজেশ খান্না, অমিতাভ, জয়া। ফাইল চিত্র।

‘জঞ্জির’ প্রথমে হিট, তারপর সুপারহিট। এবং তখনকার বেশ কিছু ছবির রেকর্ড ভেঙে ব্লকবাস্টার তকমা ছুঁইছুঁই। এর তো সেলিব্রেশন চাই! সঙ্গে রয়েছে প্রেমের দু’বছর পূর্তি। সব মিলিয়ে হাওয়ায় উড়ছেন অমিত-জয়া। গোপনে ঠিক করে ফেলেছেন, দুই পর্ব মিলিয়ে জমাটি সেলিব্রেশন হবে। তবে এখানে নয়, লন্ডনে। সেই খবর কানে পৌঁছল হরিবংশ রাইয়ের, ছেলে লন্ডনে উড়ে যাওয়ার আগের দিন। সত্যি যাচাই করতে তিনি ডেকে পাঠালেন অমিতকে। স্পষ্ট করে জানতে চাইলেন, ‘‘কোথায় যাচ্ছ? কাকে সঙ্গে নিয়ে?’’

আরও পড়ুন: ফের ত্রাতার ভূমিকায় সোনু, এ বার বিবাদমান দম্পতিকে গোয়া পাঠাতে চাইলেন

বাবাকে সেদিন সত্যি উত্তর দিয়েছিলেন অমিত—জয়া আর তিনি যাচ্ছেন। আর কেউ নয়। শোনার পরেই হরিবংশ রাইয়ের হুকুম, ‘‘লন্ডন সেলিব্রেশন পরে। আগে বিয়ে কর। বিয়ে না করে এভাবে সেলিব্রেশন আমি মেনে নেব না!’’ হরিবংশ হুকুম দিয়ে খালাস। কিন্তু এক রাতের মধ্যে বিয়ের ব্যবস্থা হয় কী করে? নিরুপায় অমিত না ফেলতে পারেন বাবার নির্দেশ না সরাতে পারেন জয়ার আকর্ষণ। ফলে, বাবার কাছে থেকে বিয়ের গ্রিন সিগন্যাল পাওয়ার পরেই তিনি ছুটলেন জয়ার বাড়ি। রাজি করালেন সাংবাদিক-লেখক তরুণ ভাদুড়ি-ইন্দিরা ভাদুড়িকে। তাঁদের মত নিয়ে১৯৭৩-এর ৩ জুনরাতারাতি বিয়ে সেরেছিলেন অমিত-জয়া। সেই রাতেই উড়ে গিয়েছিলেন ডেস্টিনেশন লন্ডনে। অনেকেই বলেন, বাবার কড়া হুকুম না থাকলে গাঢ় প্রেম থাকলেও বিয়ে হত কিনা সন্দেহ!

আরও পড়ুন: নতুন ট্রেন্ড ‘বয়কট চায়না অ্যাপ’, বিকল্প নিয়ে কী বলছেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা?

এই বিয়ে নিয়ে আর একটি মজার গপ্পোও আছে। অমিত-জয়ার প্রেমের শুরুতে জয়া বলিউডের মস্ত সেলেব। অমিতাভ তখন এ দিক-সে দিক জুতো ঘষটাচ্ছেন। এমন অসম প্রেম নিয়ে নাকি ভয়ানক আপত্তি ছিল রাজেশ খন্নার! হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়ের ‘বাবুর্চি’ ছবির সেটে ঘনঘন দেখা যাচ্ছিল অমিতকে। আর তাঁকে দেখলেই রেগে লাল হতেন রাজেশ খন্না। তার আগে অবশ্য জয়াও পাত্তা দিতে চাননি অমিতকে। যখন শুনলেন, তিনি হরিবংশ রাই বচ্চনের ছেলে, তখন আর নিজেকে সামলাতে পারেননি! তাই দু’জনের প্রেম যখন বিয়ে পর্যন্ত গড়াল ভীষণ অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন রাজেশ।

জয়া, অমিতাভ। ফাইল চিত্র।

আর এক বিপরীত ছবি বলিউড দেখেছিল হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে। কাজের প্রথম দিন থেকেই তাঁর সঙ্গে ভীষণ ভাল বন্ডিং তৈরি হয়েছিল জয়ার। জয়া তাঁকে বাবার সম্মান দিতেন। কিন্তু লজ্জায় অমিতের সঙ্গে প্রেমের কোনও কথাই জানাতে পারেননি। এদিকে জয়ার মাধ্যমে পরিচালকের সঙ্গে আলাপ-ঘনিষ্ঠতা অমিতের। তাই বিয়ে ঠিক হতেই সবার আগে তিনি প্রিয় হৃষিদাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেন, বরপক্ষের হয়ে বিয়েতে থাকতে হবে তাঁকে। প্রবীণ পরিচালক এককথায় রাজি। অমিতের পর জয়া কথা বলেন হৃষিকেশের সঙ্গে। পুরো ঘটনা জানিয়ে অনুরোধ করেন, জয়ার কন্যাদান তাঁকেই করতে হবে। কারণ, তাঁর কাছে পরিচালক পিতৃসম।

শুনেই এককথায় জয়ার প্রস্তাব নাকি নাকচ করে দিয়েছিলেন হৃষিকেশ। গম্ভীর হয়ে জানিয়েছিলেন, আগেই বরকর্তা হিসেবে একই দিনে একই সময়ে তাঁকে উপস্থিত থাকতে হবে আর একটি বিয়েতে। তিনি কথা দিয়েছেন। শুনেই কেঁদে ফেলেন জয়া! বলেন, ‘‘আমার ভরসা ছিল, আপনি কন্যাদান করবেন। সেই ভরসাতেই বিয়েতে রাজি হয়েছিলাম। এবার আপনিই থাকবেন না! কী করে বিয়ে হবে আমার?’’ তখন হাসতে হাসতে মাথায় হাত বুলিয়ে তিনি জয়াকে আশ্বস্ত করেন, ‘‘আরে পাগলি! তোর বিয়েতে আমি থাকব না, হয় নাকি? আমি থাকব বরপক্ষের হয়ে। কারণ, অমিত আমায় আগে বুক করেছে!’’

অন্য বিষয়গুলি:

Marriage Rajesh Khanna Amitabh Bachchan Jaya Bachchan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy