তিন দশক কেটে গিয়েছে অভিনয়েই। থিয়েটারের মঞ্চ, ছোট পর্দা থেকে বড় পর্দা, কিংবা এখনকার ওটিটি প্ল্যাটফর্ম— সবেতেই সমান সাবলীল। বাংলা ছবি-সিরিজের চেনা খলনায়ক বাস্তবে কেমন? আনন্দবাজার অনলাইনের মুখোমুখি বাংলা চলচ্চিত্র জগতের উচ্চপ্রশংসিত অভিনেতা রজতাভ দত্ত।
রজতাভ দত্ত
তিন দশক কেটে গিয়েছে অভিনয়েই। থিয়েটারের মঞ্চ, ছোট পর্দা থেকে বড় পর্দা, কিংবা এখনকার ওটিটি— সবেতেই সমান সাবলীল। বাংলা ছবি-সিরিজের চেনা খলনায়ক বাস্তবে কেমন? আনন্দবাজার অনলাইনের মুখোমুখি রজতাভ দত্ত।
প্রশ্ন: নতুন ছবি ‘ইকির মিকির’-এও আপনি নেতিবাচক ভূমিকায়। এত দিনের খল চরিত্রগুলোর চেয়ে আলাদা?
রজতাভ: প্রতিটা চরিত্রই একে অন্যের চেয়ে আলাদা হয়। তবে ‘ইকির মিকির’-এ একটা বাড়তি ফারাক গড়ে দিয়েছে গল্প বলার অন্য রকম ভঙ্গি। তিনটি চরিত্রের চোখ দিয়ে একই খুনের ঘটনাকে দেখা হচ্ছে। আততায়ী হিসেবে আমি মূল সন্দেহভাজন। কিন্তু তিন জনের চোখে আমার চরিত্রটা তিন রকম হয়ে দেখা দিচ্ছে। কোথাও কালো, কোথাও সাদা, কোথাও ধূসর। এই ধরনের চরিত্র যে কোনও অভিনেতার কাছেই খুব আকর্ষণীয়। কারণ একই ছবি, একই কাহিনি বা সংলাপের মধ্যে থেকেও চরিত্রের বিশ্লেষণ ক্রমাগত বদলে যাচ্ছে।
প্রশ্ন: রাতুল মুখোপাধ্যায়ের এটাই প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্যের ছবি। পরিচালক হিসেবে কেমন লাগল?
রজতাভ: রাতুল বয়সে ছোট হলেও, এটা ওর প্রথম বড় ছবি হলেও সেটে তা বোঝার সুযোগ হয়নি। ওর কাজ, বোঝানো— সবটাই খুব গোছানো। ঠান্ডা মাথায় নিজের কাজটা করে। কোভিড পরিস্থিতিতে নানা রকম প্রতিবন্ধকতার মধ্যে শ্যুট। কম আউটডোর, বেশিটাই চার দেওয়ালের মধ্যে। কিন্তু ছবিতে কোথাও তা বেমানান মনে হতে দেয়নি ও। আর আমি এমনিতেই নতুন নতুন পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করতে ভালবাসি। এতে নতুন প্রজন্মের পাল্টে যাওয়া ভাবনার সঙ্গে যেমন পরিচিত হওয়া যায়, তেমনই সেই নতুন ভাবনার সঙ্গে, এখনকার দর্শকের পছন্দের সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেওয়ারও সুযোগ মেলে। এ পর্যন্ত নতুন কোনও পরিচালকের সঙ্গে কাজ করে আমি ঠকিওনি।
প্রশ্ন: রূপাঞ্জনা মিত্র আপনার বহু দিনের পরিচিত। তাঁর সঙ্গে কাজ করাটা কি বাড়তি আরামের?
রজতাভ: রূপাঞ্জনা বয়সে ছোট হলেও কর্মসূত্রে আমরা অনেক দিনের বন্ধু। অনেক দিন পরে ফের একসঙ্গে কাজের সুযোগ হলে এমনিতেই ভাল লাগে। তা ছাড়া, মাঝের সময়টায় বন্ধু আরও ভাল করে নিজেকে তৈরি করেছে, আরও পরিণত হয়েছে— এই অনুভূতিটাও আনন্দের। সৌরভকেও আমি অনেক দিন চিনি। দু’জনেই নিজের কাজটা খুব ভাল করেছে। ওঁদের অভিনয়ও আমার খুব পছন্দের।
প্রশ্ন: ‘ধানবাদ ব্লুজ’-এ ওটিটি-তে পথচলা শুরু করে পরপর থ্রিলারে কাজ। সচেতন ভাবেই?
রজতাভ: এখন তো বাঙালি থ্রিলারেই ঝুঁকে। আমি এমনিই ধূসর চরিত্রে কাজ করতে ভালবাসি। অন্য গল্পের তুলনায় থ্রিলারে সেই চরিত্রগুলোয় অনেক মোচড় থাকে, চরিত্রগুলো গল্পের মধ্যেই নানা ভাবে পাল্টে যায়, তার অনেক রকম স্তর থাকে। তাতে অভিনয়ের স্বাদটা আমার ভাল লাগে। আমি বরাবরই থিয়েটার করি। এই কোভিডের আগেও পাঁচটা নাটকে কাজ করেছি। সক্রেটিস, তুঘলকের মতো চরিত্রের ব্যাপ্তি আমার যেমন ভাল লাগে, তেমনই ওটিটি থ্রিলারের এই ধূসর চরিত্রগুলোও আকর্ষণীয় মনে হয়। আবার বাণিজ্যিক ছবিতে খল চরিত্র অন্য রকম। এখন তো বিষয়-নির্ভর ছবি হয় বেশি। অভিনেতাদের কাছে এটা বড় প্রাপ্তি। শুধু নায়ক-নায়িকা নয়, পার্শ্বচরিত্র বা খল চরিত্রও আলাদা করে দাগ কাটে, শুধু খারাপ লোক হিসেবেই নয়, গল্পেও যে তার একটা নির্দিষ্ট অবদান আছে, এটা বড় পাওনা। ওটিটি-র থ্রিলারগুলো এ রকম অভিনয়ের পথ খুলে দিয়েছে অনেকখানি।
প্রশ্ন: এ পর্যন্ত খল চরিত্রেই কাজ করেছেন সবচেয়ে বেশি। সেটাও কি স্বেচ্ছায়?
রজতাভ: খল চরিত্রে দেখা যেত বলা ভাল। কারণ ২০০২ থেকে ২০১৪ আমি বাণিজ্যিক ছবিতে ভিলেনের চরিত্র করেছি। এখনও তা-ই করছি। কিন্তু এখনকার চরিত্রগুলো নেতিবাচক হলেও তাতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা অনেক বেশি। আগের মতো সরলরেখায় চলা খারাপ মানুষ নয়। একই গল্পে সেই চরিত্র কখনও খারাপ, কখনও ভাল, কখনও দুঃখী মানুষ হয়ে ধরা দিতে পারে।
প্রশ্ন: পর্দায় সারা ক্ষণ আপনি খারাপ মানুষ। বাস্তবেও লোকে ‘দুষ্টু লোক’ ভাবে না তো?
রজতাভ: এ ব্যাপারটা বেশি করে বুঝতে পারি শহর ছাড়িয়ে একটু মফস্সল বা গ্রামের দিকে গেলে। সেখানে মানুষ এখনও চরিত্রকে একমাত্রিক হিসেবে ভাবতে ভালবাসেন। তাই পর্দার আমিটাই তাঁদের কাছে বাস্তবের আমি হয়ে ওঠা সম্ভব। কিন্তু এখানে আমার একটা বড় সুবিধা করে দিয়েছে দশ বছর ধরে এক কমেডি রিয়্যালিটি শো-তে বিচারক হিসেবে থাকা। লোকে বুঝতে পারেন পর্দার খারাপ মানুষটাও যেমন আমি, তেমনই কমেডি শোয়ে ঠাট্টা-তামাশা করা মানুষটাও আমি। তা ছাড়া, ওই অনুষ্ঠানে অনর্গল কথা বলতে বলতে ভিতরের আসল মানুষটাও একটু আধটু বেরিয়ে আসে। দর্শক আমার বাস্তব জীবনের একটা আঁচ পেয়েই যান। তিরিশ বছর ধরে থিয়েটার করছি, ২০০৯ পর্যন্ত মেগা সিরিয়াল করেছি, অন্তত তিরিশটা টেলিফিল্ম করেছি। তাতে ইতিবাচক বা কমেডি চরিত্রও করেছি। তাতেও মানুষ আমাকে চিনেছেন। ফলে আমার জন্য শুধু রাগ-ঘেন্না-ভয়ই জমা থাকে না, ভালবাসা বা গ্রহণযোগ্যতাও থাকে। এটা অভিনেতা হিসেবে আমার একটা বড় প্রাপ্তি।
প্রশ্ন: থিয়েটার করছেন বহু বছর। পর্দায় অভিনয়ও। কোনটা বেশি কাছের?
রজতাভ: দুটোর তুলনা করা মুশকিল। মায়ের কাছে দুই সন্তানের মতো অনেকটা। এটুকু বলতে পারি, থিয়েটারের জন্য ছবি বা ছবির জন্য থিয়েটার, কোনওটাই ছেড়ে দেব না। দুটোই আমায় করতে হবে।
প্রশ্ন: ধারাবাহিকে কাজ করতেন এক সময়ে। ছবির জন্যই কি ছেড়ে দিলেন?
রজতাভ: বড় পর্দায় আমি সেই ১৯৯৫ সাল থেকেই কাজ করছি। পাশাপাশি ধারাবাহিকও করতাম। কিন্তু একটা সময়ে দেখলাম, ধারাবাহিকে কাজের পরিমাণ বা তাতে ব্যস্ত থাকার সময়টা এত বাড়ছে যে ছবির শ্যুটিং করতে গিয়ে অসুবিধেয় পড়তে হবে। তাই সচেতন ভাবেই ধারাবাহিক করা বন্ধ করে দিই। পরবর্তীতে অল্প সময়ের কাজ বা ক্যামিও চরিত্রের ডাক এসেছে ছোট পর্দা থেকে। কিন্তু তত দিনে মনে হয়েছে, আমি যে ধরনের ধারাবাহিকে কাজ করে অভ্যস্ত, ছোট পর্দার ধরন তার চেয়ে অনেকটাই বদলে গিয়েছে। ফলে আগের মতো আনন্দ হয়তো আর পাব না। ছোট পর্দার কাজ কখনও করব না তো বলিনি। ভবিষ্যতে যদি মনে হয় ছবিতে আমার দিন ফুরিয়েছে, তা হলে গ্রাসাচ্ছদনের প্রয়োজনে হয়তো আবার ধারাবাহিকে কাজ করব। কারণ মেগা সিরিয়াল অনেক দিন ধরে চলে। নিরাপদ রোজগার। কিন্তু ফিরতে হলে এক্সক্লুসিভ হয়েই ফিরব। দু’জায়গায় একসঙ্গে কাজ করব না।
প্রশ্ন: আর গান? আপনাদের তো ব্যান্ডও ছিল।
রজতাভ: গানের সঙ্গে সম্পর্ক বহু যুগ হল শেষ। আমাদের ব্যান্ড ‘কুইনাইন’ সাড়ে তিন বছর টিকে ছিল। তার পরে আর গান লেখা, ভাবা কোনওটাই হয়ে ওঠেনি। ছড়ার গান লিখতাম, সে সবও আর হয়নি। আসলে থিয়েটার করতে গিয়ে উঁচু স্বরে সংলাপ বলা, বিভিন্ন চরিত্রে নানা ধরনের কণ্ঠস্বরে কথা বলা— বছরের পর বছর করতে গিয়ে ভোকাল কর্ডে চাপ পড়েছে যথেষ্টই। গান গাইতে হলে গলায় যে পেলবতা, যে মসৃণতা প্রয়োজন, সেটা আর সম্ভব হয় না। আমার গান তাই এখন ইতিহাস হয়ে গিয়েছে। এক সময়ে যে গান শিখেছি, নিয়মিত তালিম নিয়েছি, সে সব আর মনে পড়ে না!
প্রশ্ন: জনপ্রিয় রিয়্যালিটি শো-এর বিচারক ছিলেন। সে অভিজ্ঞতা কতটা আলাদা?
রজতাভ: ওই শো-টায় টানা দশ বছর বিচারক ছিলাম। এক-একটা সিজন মানে অনেকখানি অক্সিজেনের মতো। অপেক্ষা করে থাকতাম আমরা সকলেই। মজা করতাম, পাগলামি করতাম। কিন্তু আস্তে আস্তে শো-টার চরিত্র পাল্টে গেল। বাংলা চ্যানেলের অনুষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ চলে গেল মুম্বইয়ের হাতে। সেখানকার লোকেরা চাইলেন, হিন্দি শো-এর বাংলা সংস্করণ হয়ে উঠুক এখানকার শো-টা। বাংলার একটা নিজস্ব রসবোধ, নিজস্ব একটা মজা আছে। হিন্দির অনুকরণ করলে সেই স্বাদ কি আর আসে! তা ছাড়া, ইদানীং অনুষ্ঠানের বিষয়বস্তুতে, ছবির বিষয়বস্তুতে বিজ্ঞাপন জড়িয়ে ফেলার যে প্রবণতাটা হয়েছে, সেটাও খুব বিপজ্জনক। হিন্দি বিজ্ঞাপনের কুৎসিত অনুবাদের সব ট্যাগলাইন ভুলভাল বাংলায় আমাকেও বলতে হত। চ্যানেলের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী। শো-এর মান নেমে গেল তাতেও। কর্পোরেট-রাক্ষসের তা বোঝার দায় নেই। কিন্তু যে বাংলা নিয়ে নিজে চিরকাল হাসাহাসি করেছি, সেটা নিজেকেই অনিচ্ছা সত্ত্বেও বলতে হলে বেশি দিন ভাল লাগার কথা নয়। ইদানীং তো দেখি যা জনপ্রিয় হচ্ছে, তাকেই শিল্প ভেবে নেওয়া হচ্ছে। এটাও তো ক্রমশ সহ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে।
প্রশ্ন: এখানকার ইন্ডাস্ট্রি যদি ঘুরে দাঁড়িয়ে এই পরিস্থিতির প্রতিবাদ করে?
রজতাভ: কখনওই হবে না। এটা অলীক কল্পনা। আসলে কর্পোরেট পরিসর নিজে যদি সংস্কৃতির এই ক্ষতিটা উপলব্ধি না করে, শিল্পের ক্ষমতা নেই ঘুরে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করার। শিল্প অভিমান করতে পারে, দুঃখ পেতে পারে, কিন্তু কর্পোরেটের সঙ্গে যুদ্ধে নামতে পারে না।
প্রশ্ন: এতগুলো বছরে অজস্র ছবিতে অভিনয় করেছেন। পরিচালক হতে ইচ্ছে করেনি?
রজতাভ: ১৮০-র বেশি ছবিতে কাজ করেছি। কিন্তু পরিচালক হতে গেলে অনেক বেশি নির্মম হতে হয়। কম্যান্ড লাগে। আমি সেই তুলনায় নরম মানুষ। সবাইকে বকেঝকে এক জায়গায় নিয়ে আসা আমার দ্বারা হবে না! বলিউডে পরিচালক নিজের কাজ করেন আর বাকি সবটা সামলান ফ্লোর ডিরেক্টর। বাংলায় সীমিত বাজেটে সেই সুযোগ নেই। ফলে মাথা ঠিক রাখা শক্ত। তা ছাড়া শুধু ছবি বানানোই নয়, এখন ছবি বিক্রি বা প্রচারটাও পরিচালকের ঘাড়ে চেপে যায়। অভিনেতারও। যদিও তার কোনও যৌক্তিকতা খুঁজে পাই না। আমি অভিনেতা, চরিত্রটাকে রক্তমাংসের করে ফুটিয়ে তুলব। ছবিটা লোকে কেন দেখবে, কতটা আলাদা, সেটা বলা তো আমার কাজ হতে পারে না! অথচ সেই প্রশ্নগুলোরই উত্তর দিতে হয় সবচেয়ে বেশি। মনে হয় গুঁড়ো সাবান বেচছি! ভাল জিনিস তো লোকে এমনিই দেখবেন, সেটা কত ভাল সেটা আলাদা করে মাথায় ঢুকিয়ে দিতে হবে কেন! আজকাল আবার নেটমাধ্যমে ক’জন ফলোয়ার দেখে অভিনেতা বাছাই করা হয়। যাতে তাঁরা ছবির প্রচারে সাহায্য করতে পারেন! কিন্তু সেই জনপ্রিয়তা তো নানা ভাবে হতে পারে। কারও ছাতার তলায় থেকে, কারও নামে কুৎসার ঘটনায়, রাজনীতির ময়দানে— তার সঙ্গে অভিনয় ক্ষমতার যোগ কোথায়!
প্রশ্ন: আপনি নেটমাধ্যমে নেই?
রজতাভ: শুধুমাত্র হোয়াটসঅ্যাপ। তাতেই এত গুড মর্নিং, গুডনাইট, ফুল-পাতা-কবিতার পাহাড়ের নীচে জরুরি মেসেজ চাপা পড়ে যায় প্রায়ই! ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটারে থাকলে আরও কঠিন অবস্থা হবে! ফেসবুকে আমার নামে পেজ দেখা যায়, তবে সেগুলো সব ভুয়ো। তার উপর এটা একটা ফাঁদ। কারণ ফলোয়ার বেশি মানে টাকা রোজগারের সুযোগ। তখন মনে হবে রোজ নিজের কিছু না কিছু খবর তৈরি করি! এমনিই তো সোশ্যাল মিডিয়ায় কে কী পোস্ট করলেন, কে কার সম্পর্কে কী খারাপ কথা বললেন, কাকে কার সঙ্গে দেখা যাচ্ছে বা যাচ্ছে না, তা নিয়েই চর্চা বেশি। দর্শক নাকি সেটাই বেশি করে জানতে চান আজকাল। তা হলে কি যে কাজ করি, যার জন্য আমার পরিচয়, মানুষের আগ্রহ সেটা নিয়েই সবচেয়ে কম? অভিনেতা হিসেবে কীসে কাজ করেছি, কেমন কাজ করছি, কোন চরিত্রে অভিনয়ের ইচ্ছে, কত দিন অবধি কাজ করতে চাই, সেগুলো বোধ হয় কেউ জানতে চান না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy