Advertisement
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
RG Kar Protest

পুরুষ যেন নারীকে না কাঁদায়, আরজি কর-কাণ্ডের পর ছেলেকে শেখাচ্ছেন রাজ-রূপাঞ্জনা-জয়জিৎ

তিন খ্যাতনামীর দাবি, মা-বাবা যদি সঠিক আচরণ করেন তাঁদের দেখে সন্তান ভালটাই শিখবে। আলাদা করে শেখানোর তখন আর দরকার পড়ে না।

Image of Raj Chakraborty, Rupanjana Mitra, Joyjit Banerjee

সন্তান মানুষ করার ক্ষেত্রে বদল আনছেন তারকারা? ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০২৪ ১৮:৫৪
Share: Save:

আরজি কর-কাণ্ড সব শ্রেণির মানুষকে প্রতিবাদে শামিল করেছে। আবার এই ঘটনা তুলে ধরেছে ভিন্ন ছবিও। যেমন, পেশার ক্ষেত্রে নাইট ডিউটিতে নারীর কম যোগদান। এই ঘটনাকে সামনে রেখে ‘মেয়েদের আরও আগলে রাখা, শাসন করা, সংযত থাকা’র মতো কথাও উঠে আসছে নানা মহল থেকে। কিন্তু এই নারকীয় ঘটনা সন্তান মানুষ করার ক্ষেত্রে পুত্রসন্তানের মা-বাবাকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছে কি? বিশেষ করে যাঁরা প্রায় প্রতি দিন মৃতা তরুণী চিকিৎসকের জন্য ন্যায়বিচার চেয়ে পথে নামছেন, তাঁদের মানসিকতা কতটা বদলাল?

এই দলে যেমন আছেন সাধারণ মানুষ তেমনই আছেন খ্যাতনামীরাও। পরিচালক থেকে অভিনেতা— বাংলা বিনোদন দুনিয়ার অনেকেরই পুত্রসন্তান রয়েছে। তারা কেউ একরত্তি। কেউ কিছুটা বড়। তাদের বড় করে তোলার মানসিকতায় কোনও কি বদল আনছেন তাঁরা? জানতে আনন্দবাজার অনলাইন কথা বলেছিল প্রযোজক-পরিচালক রাজ চক্রবর্তী, অভিনেত্রী রূপাঞ্জনা মিত্র, অভিনেতা জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে।

শুরুতেই রাজের দাবি, “বদলের কোনও প্রয়োজন নেই। কারণ, আমার বাড়িতে নারীরা সকলের আগে সম্মান পান। বাড়িতে তাঁদের শাসন চলে। এখনও বেরোনোর আগে মাকে বলে বেরোতে হয়, কোথায় যাচ্ছি, কখন ফিরব। ইউভানও কিন্তু তার মা-ঠাকুমাকে জানিয়ে যায়, স্কুলে পড়াশোনা করতে যাচ্ছে।” তাঁর যুক্তি, বাড়িতে যা যা দেখবে সেটাই শিখবে ছোটরা। তাই মা-বাবা যদি নিজেদের আচরণ ঠিক রাখেন, তা হলে সন্তান ছেলে হোক বা মেয়ে, সে-ও সঠিক আচরণই শিখবে। এই প্রসঙ্গে তিনি সমাজমাধ্যমে মেয়েদের কু-ইঙ্গিত, কুকথা ছড়িয়ে দেওয়ার প্রবণতার ধিক্কার জানিয়েছেন। বলেছেন, “এ রকম যাঁরা করছেন তাঁরা ভুলে যাচ্ছেন, পরের প্রজন্ম এঁদের দেখে এটাই শিখছে। এর পর কেউ কিছু করলে তখন দোষ পড়বে নতুন প্রজন্মের ঘাড়ে।”

রূপাঞ্জনার ছেলে রিয়ান সদ্য ষষ্ঠ শ্রেণিতে উঠেছে। এই প্রসঙ্গে কথা তুললেই অভিনেত্রী বললেন, “গত রাতেও কথা হয়েছে ছেলের সঙ্গে। ছেলে প্রথমেই জানতে চাইল, মৃতা বিচার পেয়েছেন? ওকে জানালাম, এখনও তা সুদূর।” এই জায়গা থেকে অভিনেত্রীর দাবি, ঘটনাপ্রবাহ তাঁর ছেলেকেও ছুঁয়ে গিয়েছে। তাই সকলের আগে তিনি ছেলের মূল্যবোধ গড়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। যাতে সেই মূল্যবোধ আগামীতেও রিয়ানের পাথেয় হয়। একই সঙ্গে তাঁর এ-ও দাবি, মায়ের সঙ্গে সন্তানের ঘনিষ্ঠতা সবচেয়ে বেশি। এই জায়গা থেকে ছেলেকে মানুষ করার ক্ষেত্রে মাকেও আরও সজাগ হতে হবে। তবে যদি পরিবর্তন আসে।

অভিনেতা জয়জিতের ছেলের সতেরোয় পা। যশোজিতের প্রতিবাদী সত্তা ইতিমধ্যেই তার লেখনীতে জায়গা করে নিয়েছে। নানা সময়ে কবিতার মাধ্যমে সে তার মনের ভাব প্রকাশ করেছে। বাবার সঙ্গে এক বারও কি তার আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে কথা হয়েছে? প্রশ্ন রাখতেই জয়জিৎ বললেন, “এই বয়সটা খুবই স্পর্শকাতর। সব বোঝে কিন্তু প্রকাশ কম করে। সেই জায়গা থেকেই সব কথা বলাও যায় না। তবে যতটা বলা যায়, বলেছি। বন্ধুর মতো করে বোঝানোর চেষ্টা করেছি।” অভিনেতা তাঁর ছেলেকে জানিয়েছেন, সমাজ বলে পুরুষকে কাঁদতে নেই। তবে তিনি শেখাচ্ছেন, আগামী দিনে পুরুষ (যশোজিৎ) যেন কখনও কোনও নারীর কান্নার কারণ না হয়!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE