ছবি: দেবর্ষি সরকার
এক জনের কেরিয়ারের তিরিশ বছর হয়ে গিয়েছে। অন্য জনের প্রথম ছবি মুক্তি পেয়েছিল চোদ্দো বছর আগে। কিন্তু তালেগোলে দু’জনের একসঙ্গে ছবি করা কিছুতেই হয়ে উঠছিল না। জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালকের সঙ্গে কাজ করতে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় যেমন উদগ্রীব ছিলেন, তেমনই কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ও চাইছিলেন প্রসেনজিৎকে এক্সপ্লোর করতে। ‘দৃষ্টিকোণ’ তাঁদের মিলিয়ে দিল। তার পর ঠিক এক বছরের মধ্যে আরও দুটো ছবি। ‘কিশোর কুমার জুনিয়র’ মুক্তি পাচ্ছে পুজোয়। তার পরেই ‘জ্যেষ্ঠপুত্র’। হ্যাটট্রিকের রাস্তায় কৌশিক-প্রসেনজিৎ...
কৌশিক যাঁকে গুরু মানেন সেই ঋতুপর্ণ ঘোষই বদলে দিয়েছিলেন প্রসেনজিতের অভিনয়ের ধারা। আর প্রসেনজিৎকে ডিরেক্ট করার খিদেটা কৌশিকের অনেক দিনের। সেই ঋতুপর্ণ-প্রসেনজিৎ-কৌশিক ত্রহ্যস্পর্শেই আসছে ‘জ্যেষ্ঠপুত্র’। যেখানে ঋতুপর্ণর গল্প নিয়েই ছবি হচ্ছে। পরিচালনায় কৌশিক এবং অভিনয়ে প্রসেনজিৎ। এ ছবির প্রযোজনাও প্রসেনজিতের। সঙ্গে রয়েছে সুরিন্দর ফিল্মস। প্রসেনজিৎ জানালেন, ঋতুপর্ণর ভাই ইন্দ্রনীল ঘোষ কোনও টাকা ছাড়াই ছবিটি করার অনুমতি দিয়েছেন। আসলে ‘জ্যেষ্ঠপুত্র’ ঋতুপর্ণর উদ্দেশে তাঁদের ট্রিবিউট। ঋতুপর্ণর ভাবনাকে আরও বিস্তৃত করেছেন কৌশিক। ছবির নামও তাঁরই দেওয়া।
কিছু দিন আগে ঋতুপর্ণর জন্মদিনে প্রসেনজিৎ একটি পোস্ট করেন। যেখানে কোনও কিছু খোলসা না করলেও তিনি আর কৌশিক মিলে যে ‘জ্যেষ্ঠপুত্র’ নামে একটি ছবি করতে চলেছেন সেটুকু বেশ বোঝা যাচ্ছিল। এখন জানা যাচ্ছে, সেই ছবির মূল ভাবনা ঋতুপর্ণর। ‘‘ঋতুদার ভাবনা মানে আপনার হাতে সোনার খনি। তার পরে সেই জিনিসটাকে আমি আরও সাজিয়েছি, বিস্তৃত করেছি,’’ বলছিলেন কৌশিক।
আট বছর আগে এই ছবি করার পরিকল্পনা করেছিলেন ঋতুপর্ণ। যেখানে মুখ্য চরিত্র করার কথা ছিল প্রসেনজিতের। কিন্তু সেই সময় অভিনেতা অন্য একটি ছবি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলেন। ‘‘ঋতু আমাকে গল্পটা শুনিয়েছিল। শুনে দারুণ লেগেছিল। কিন্তু তখন আমি সৃজিতের (মুখোপাধ্যায়) ‘অটোগ্রাফ’ করব ঠিক করে ফেলেছি। নতুন পরিচালকের প্রথম ছব়ি, তাই ঋতুকে বলেছিলাম, তোর ছবিটা পরে করব। কিন্তু সেই ‘পরে’ যে আর আসবে না, সেটা বুঝতে পারেনি,’’ বলছিলেন প্রসেনজিৎ। পুজোর পর থেকেই ছবির শুটিং শুরু হচ্ছে। চলছে অভিনেতা নির্বাচনের কাজ। একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অপরাজিতা আঢ্যর কাজ করার কথা।
এক বছরের মধ্যে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তিনটে ছবি সত্যিই ঈর্ষণীয়! ‘‘বুম্বাদার সঙ্গে কাজ করাটা একটা বাজে অভ্যেসের মতো। লোকটার ডে়ডিকেশন অবাক করে দেয়। কাজে কোনও ক্লান্তি নেই। শটের মাঝে ওকে কখনও ফোন নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করতে দেখিনি। আর ‘কিশোর কুমার জুনিয়র’-এর প্রচার তো অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছে। এর আগে আমি এত প্রচার করিওনি, দেখিওনি,’’ মন্তব্য কৌশিকের। এক জন অভিনেতার সঙ্গে পরপর ছবি করাটা পরিচালকের কাজের ধরন। আবীর চট্টোপাধ্যায়, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের কথা উদাহরণ হিসেবে ধরা যেতে পারে।
প্রসেনজিৎ যেখানে নতুন পরিচালকদের কাছে কাজের আবদার জানান সেখানে তিনি কৌশিকের মতো ছবি-করিয়েকে কিছু বলবেন না সেটা অস্বাভাবিক। ‘‘ভাল চরিত্র পাওয়ার জন্য বুম্বাদা কী না করতে পারে। আমাকে কত বার অপমান করেছে। কোনও অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে আমাকে উদ্দেশ্য করে বলেছে, ‘এই লোকটা মনে করে না আমি অভিনয় করতে পারি। তাই আমাকে কাস্ট করে না।’ ভাবুন কী অপমান,’’ মজার গলায় বললেন কৌশিক।
আর প্রসেনজিৎ কী বলছেন? ‘‘কৌশিকের ভাবনাগুলো আমার বরাবরই ভাল লাগত। কিন্তু কিছুতেই কাজ করা হচ্ছিল না। আর যখন হল, পরপর তিনটে কাজ। অভিনেতা হিসেবে সত্যিই স্যাটিসফায়েড হয়েছি।’’ তাঁদের হ্যাটট্রিকের পরেও আর একটা কিছুর সম্ভাবনা কিন্তু সত্যিই আছে...
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy