তাঁর রবীন্দ্র-অনুরাগী মা জামশেদপুরে কাটিয়েছেন একুশ বছর। রবিঠাকুরের শান্তিনিতেন গিয়েছেন বেশ কয়েক বার। ছোটবেলায় মায়ের কাছেই তাঁর বারবার রবীন্দ্রসংগীত শোনা।
এ বার সেই মা মধু চোপড়ার মেয়ে প্রিয়ঙ্কা চোপড়াই কিনা নামছেন রবিজীবনের ওপর একটি ছবি তৈরিতে। এখনও পর্যন্ত যার নাম ঠিক আছে ‘নলিনী’। মুম্বই থেকে ফোনে মধু বললেন, ‘‘প্রিয়ঙ্কা এই ছবিটি যৌথভাবে প্রযোজনা করবে অন্য একটি সংস্থার সঙ্গে। ও রাজি হওয়াতে আমি উত্তেজিত তো বটেই, তার সঙ্গে কোথায় যেন একটা তৃপ্তিবোধও হচ্ছে ভেতরে ভেতরে।’’
‘নলিনী’র পরিচালনায় ‘এস্কেপ ফ্রম তালিবান’ ছবির জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত নির্দেশক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়। কাহিনি সাজিয়েছেন সাগরিকা চট্টোপাধ্যায়। স্ক্রিপ্ট লেখার কাজে ভাল মাত্রায় নজরদারিতে থাকছেন স্বয়ং প্রিয়ঙ্কা।
কাহিনির গবেষণামূলক দিকটির সঙ্গে জড়িয়ে একাধিক রবীন্দ্র-বিশেষজ্ঞ ও সাংবাদিকের একটি দল। শোনা গেল, কাহিনি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়েছে প্রভাত মুখোপাধ্যায়, কৃষ্ণা কৃপালিনী, উইলিয়ম রাদিচে ও মিরিয়াড মাইন্ডেডের লেখা বই।
মধু চোপড়া
পরিচালক ফোনে জানালেন, ‘‘ছবির বিষয় রবীন্দ্রনাথের জীবনে প্রথম প্রেম। সে সময় কবির বয়স আঠেরো। দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের নির্দেশে তিনি তখন সত্যেন্দ্রনাথের সঙ্গে আমদাবাদে। সত্যেন্দ্রনাথ তাঁকে ইংরেজি শেখাতে নিয়ে যান শোলাপুরে, পান্ডুরাম থাড়কড়ের কাছে। পান্ডুরাম, কিশোর রবিকে পাঠ দেওয়ার জন্য মেয়ে অন্নপূর্ণাকে ভার দেন। মেয়ে তখন সবে কুড়ি। নীলনয়না। অক্সফোর্ড-উত্তীর্ণা। পোশাকে-স্বভাবে-কেতায় পুরো সাহেবি। মার্ক স্টিফেন নামের এক ইংরেজের সঙ্গে তাঁর প্রেম। কিন্তু দিন গ়ড়ালে রবীন্দ্রনাথ-অন্নপূর্ণা কী করে যেন পরস্পরের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন! কিন্তু সত্যেন্দ্রনাথ যখন তার আভাস পান বাবাকে বলে পাঠান, এখনই যাতে রবিকে বিলেতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।’’
এর মধ্যে নাকি প্রেমিকার ইচ্ছেতেই কবি মরাঠি কন্যা অন্নপূর্ণার নাম দেন ‘নলিনী’। তাঁকে নিয়ে গানও লেখেন, ‘শুনো নলিনী খোলো গো আঁখি...’। এ খবর তেমন কারও হয়তো’বা গোচরে ছিল না। প্রেম স্থায়ী হয়নি। রবীন্দ্রনাথকে চলে যেতে হয় বিলেত। অন্নপূর্ণার বিয়ে হয় হ্যারল্ড লিটলডেল নামের এক ব্রিটিশ অধ্যাপকের সঙ্গে। কিন্তু রবীন্দ্রনাথকে তিনি ভুলতে পারেননি। কিছু ঘটনাতে তা প্রকাশও পায়।
যেমন, সন্তানসম্ভবা হলেও যখন অন্নপূর্ণার গর্ভপাত হয়ে যায়, জানতে পারেন তাঁর বোন অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে। বোনকে তখন নাকি অনুরোধ করেন, ‘‘যদি ছেলে হয়, নাম রেখো রবীন্দ্রনাথ।’’ মাত্র ৩৩ বছর বয়সে নলিনীর মৃত্যু হয়।
ছবির কাহিনির শুরু, ২০১৭-য়। যখন এডিনবরা থেকে গবেষক জন হ্যাম নলিনীর উৎস-সন্ধানে ভারতে এলেন। এখান থেকেই ছবি কখনও চলে যাবে ফ্ল্যাশব্যাকে। কখনও ফিরে আসবে সমকালে। ছবির কাজ শুরু হতে নভেম্বর। পরিচালক এই মুহূর্তে অন্য একটি ছবির কাজে ব্যস্ত। সে কাজ শেষ হলেই হাত দেবেন ‘নলিনী’ তৈরিতে। তবে কাস্টিং নিয়ে ভাবনা চলছে। তাতেও মধুর সঙ্গে মাথা ঘামাচ্ছেন প্রিয়ঙ্কাও। শোনা যাচ্ছে, নলিনীর ভূমিকায় থাকবেন মরাঠি অভিনেত্রী সোনালি কুলকার্নি। সত্যেন্দ্রনাথ হবেন কুণাল কপূর। একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে ডাক পেতে পারেন যিশু সেনগুপ্ত!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy