প্রত্যুষা পাল এবং ফারহান ইমরোজ
তিন বছর ধরে শরীরে প্রাক্তন প্রেমিক, অভিনেতা ফারহান ইমরোজের নাম বইছিলেন। ২২ বছরের জন্মদিনে অভিনেত্রী প্রত্যুষা পাল সেই নাম মুছে ফেলে নিজেকে নতুন জীবন উপহার দিলেন।
গত ২৮ জুলাই ২২ বছরে পা দিয়েছেন প্রত্যুষা। তার সপ্তাহ খানেক আগে থেকেই তাঁর পরিকল্পনা ছিল বুক থেকে ফারহানের নাম মুছে ফেলবেন। জন্মদিনের দু’দিন আগে সেই পরিকল্পনাকে রূপ দিলেন তিনি। ট্যাটু শিল্পীর কাছে গিয়ে বুকের বাঁদিকে নতুন ছবি আঁকালেন। সেই একই ট্যাটু শিল্পী, যিনি তিন বছর আগে প্রত্যুষার শরীরে ফারহানের নাম লিখে দিয়েছিলেন। যেখানে ফারহানের নাম ছিল, সেখানে এখন তিনটি গোলাপ। এই তিনটি প্রত্যুষার তিন সত্তার প্রতীক। প্রথম গোলাপটি হল বাস্তববাদিতা, দ্বিতীয়টি হল পুরনো মূল্যবোধ এবং তৃতীয়টির অর্থ শিল্প।
এর আগে আনন্দবাজার অনলাইনকে প্রত্যুষা জানিয়েছিলেন, বুকের বাঁদিকে ১২ ইঞ্চির ট্যাটু ছিল তাঁর। ইংরেজিতে ফারহানের নাম লেখা। ফারহানের সঙ্গেই গিয়েছিলেন করাতে। সে সময়ে খুব আনন্দ পেয়েছিলেন ফারহান। ২০১৮ সালের জুন মাসের কথা। কিন্তু সেপ্টেম্বরেই ফারহান তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করে হুট করে চলে গেলেন বলে জানিয়েছিলেন অভিনেত্রী। প্রত্যুষা বলেছিলেন, ‘‘বাইরে বেরোলে বা কোনও ডেটে গেলে গলা বন্ধ পোশাক পরি না আমি। নেটমাধ্যমে অনেক ছবি পোস্ট করেছি, যেখানে আমার বুকে ফারহানের নাম জ্বলজ্বল করছে। এটাই বাস্তব। কার কাছে মিথ্যে বলব? কেবল অভিনয়ের সময়ে মেকআপ দিয়ে ঢাকতে হয়।’’
নিজের জন্মদিনে সেই বাস্তবকে বদলে ফেলার প্রথম পদক্ষেপ করলেন প্রত্যুষা। ইনস্টাগ্রামে নিজের নতুন তিনটি ট্যাটুর ভিডিয়ো দিয়েছেন অভিনেত্রী। তাঁর চোখে মুখে শান্তি, আনন্দের ছাপ।
কেমন লাগছে এখন তাঁর? প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে প্রত্যুষাকে যোগাযোগ করল আনন্দবাজার অনলাইন। কিন্তু ইতিমধ্যে প্রত্যুষাকে নানা ব্যঙ্গ বিদ্রূপের শিকার হতে হয়েছে। সেই প্রসঙ্গেই প্রত্যুষা বললেন, ‘‘আনন্দবাজার অনলাইনে সাক্ষাৎকার দেওয়ার পর থেকেই লোকে নানা কথা বলছেন। তাঁদের ধারণা, আমি মিছিমিছি ফারহানের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমার সে রকম কোনও উদ্দেশ্য ছিল না। কেবল আমার সত্য এবং বাস্তবটুকু সকলকে জানাতে চেয়েছিলাম। যে মানুষ আমার অস্তিত্বকেই অস্বীকার করছে, সেই মানুষটির নাম বয়ে বেড়াব না বলেই ঠিক করেছিলাম। তিন বছর হয়ে গেল, আমার এই ২২ বছরের জন্মদিনের আগে স্থির করলাম নিজের জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যাব। কিন্তু বুকে ওই নামটি থাকলে আমি এগোতে পারতাম না। সর্বক্ষণ আমাকে এটি মনে করিয়ে দিচ্ছিল ফারহানের কথা।’’
এরই মধ্যে ফারহানের কিছু বক্তব্য তাঁর কানে এসেছে। যেখানে ফারহান বলেছেন যে, তিনি আগে থেকেই সব জানিয়ে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু প্রত্যুষা বলেছিলেন যে ফারহান তাঁর সঙ্গে কী কারণে সম্পর্ক রাখলেন না, তা আজও অভিনেত্রীর কাছে স্পষ্ট নয়। তার আগে ফারহান নাকি প্রত্যুষার অস্তিত্বকেও নস্যাৎ করে দিয়েছিলেন। সেই কথাগুলো মনে করে প্রত্যুষা জানালেন, তিনি এখন খুবই শান্তি পেয়েছেন। প্রথমত নিজের বক্তব্য রেখে, দ্বিতীয়ত ফারহানের নাম মুছে ফেলে। যদিও ট্যাটু মোছার দিন তিনি কেঁদে ফেলেছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি কিন্তু ফারহানের জন্য কাঁদিনি। নিজের জন্য কষ্ট হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল, এত ছোট বয়সে কী ভাবে এত বড় ভুল করে ফেললাম!’’
প্রত্যুষার কথায় জানা গেল, এর আগে একাধিক বার সেই ট্যাটু শিল্পীর কাছেই ট্যাটু করিয়েছিলেন তিনি। তাই ফারহান এবং প্রত্যুষাকে তিনি খুব ভাল ভাবে চিনতেন। ২০১৮ সালে যখন ফারহানের নাম লেখার জন্য তাঁর কাছে গিয়েছিলেন, সে বার নাকি তিনি অভিনেত্রীকে এমন ট্যাটু করতে বারণ করেছিলেন। এ বারও সেই শিল্পী প্রত্যুষা যাওয়ার পরেই তাঁকে বলেন, ‘‘বলেছিলাম তো, করো না।’’ ব্যস এতটুকুই। সেই ভুল শুধরোতে ব্যস্ত প্রত্যুষা এখন সম্পূর্ণ নতুন জীবনে পা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy