মার্চ মাসে আমার এবং অনুপমের বিবাহবার্ষিকী। আবার ওর জন্মদিনও এই মাসেই। অনুপমের জন্মদিনে কী লিখব, সেটাই ভাবছিলাম। অনেকগুলো বিষয় মাথায় রয়েছে। তাই শুরুতেই একটু না হয় পিছিয়ে যাওয়া যাক।
২০১১ সালে অনুপমের সঙ্গে আমার প্রথম আলাপ। তার পর আমরা সঙ্গীত জগতে সহকর্মী হয়ে গেলাম। আমাদের একটা হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপ আছে। সেখানে তখন ওর জন্মদিনে সকলেই শুভেচ্ছাবার্তা জানাতেন। আমিও জানাতাম। এখন আমি ওর স্ত্রী। জন্মদিনে ওকে নিয়ে আলাদা করে আমার বেশ কিছু পরিকল্পনাও থাকে।
আরও পড়ুন:
অনুপম জন্মদিন উদ্যাপন করে। কিন্তু সেখানে খুব জাঁকজমক থাকে না। হয়তো পরিবারের সকলের উপস্থিতিতে কেক কাটা হল। তার পর মা-বাবার সঙ্গে আমরা ডিনারে গেলাম। গত বছর তো সেটাই করেছিলাম। এ বারেও হয়তো সে রকমই কিছু করব। তবে জন্মদিনে অনুপম আলাদা করে অনুরাগীদের জন্য সময় বার করার চেষ্টা করে। কারণ ও জানে, অনুরাগীদের একটা আলাদা প্রত্যাশা থাকেই। তাই সে দিনই না হলেও কখনও হয়তো জন্মদিনের আগে বা পরে তাঁদের সঙ্গে দেখা করে কেক কাটে অনুপম।
এ বার জন্মদিনের প্রাক্কালে অনুপমের বেশ কয়েকটা গান মুক্তি পেয়েছে। ‘কিলবিল সোসাইটি’ এবং ‘আমার বস’ ছবিতে ওর গান রয়েছে। আমিও সেখানে (‘আমার বস’) একটা গান গেয়েছি। আজকে নতুন এই ছবিগুলোর প্রচারে অনুপম ব্যস্ত থাকবে। আর আমি তাতে বেশ খুশি। কারণ একজন শিল্পীর কাছে জন্মদিনটা কাজের মধ্যে দিয়ে কাটানোর একটা আলাদা গুরুত্ব থাকে। ওর জীবনের সবচেয়ে বড় সত্য হল ওর সঙ্গীতসত্তা। তাই আজ সেটাকেই যদি উদ্যাপন করা যায়, তার থেকে ভাল আর কী-ই বা হতে পারে!
আজ আমার বাবা-মা বাড়িতে আসবেন। প্রত্যেক বছরের মতো দুপুরে অনুপমের মা ওর জন্য পায়েস রান্না করবেন। আমার জন্মদিনেও তিনি পায়েস রান্না করেন। জন্মদিন উপলক্ষে দুপুরে বাড়িতে অল্প খাওয়াদাওয়ার আয়োজন করা হয়েছে। অনুপম মাছ খেতে পছন্দ করে। তাই মা মাছের কিছু পদ রান্না করবেন। সঙ্গে বিশেষ কিছু ভাজাও থাকবে। আমার নিজের হাতে কয়েকটা পদ রান্নার ইচ্ছাও রয়েছে।

তুরস্কে অনুপম এবং প্রস্মিতা। ছবি: সংগৃহীত।
আমরা দু’জনেই খুব ঘুরতে যেতে পছন্দ করি। বিয়ের পর একসঙ্গে তুরস্কে গিয়েছিলাম। চলতি বছরে বিবাহবার্ষিকীতে পুদুচেরিতে ঘুরতে গিয়েছিলাম। আমাদের দু’জনেরই কাজের ব্যস্ততা রয়েছে। এ বছর যদি আরও নতুন কয়েকটা জায়গায় যেতে পারি, তা হলে ভাল লাগবে। খুব শীঘ্র পরিকল্পনা করে ফেলব।
জন্মদিনে অনুপমের জন্য একটা মেটে রঙের পঞ্জাবি কিনেছি। এ বারের জন্মদিনে আমার তরফে ওর জন্য উপহার। অনুপম সম্পর্কে আরও কয়েকটা কথা আজকের বিশেষ দিনে জানিয়ে রাখতে চাই। ওকে নিয়ে আমার কোনও রকম অভিযোগ নেই। আমি ওর কোনও গুণ বদলাতে চাই না। ওর মধ্যে কোনও পরিবর্তন চাই না। ও যেমন আছে, সে রকমই যেন থাকে। অনুপমের সঙ্গে সংসার করে এটাই উপলব্ধি করেছি যে, হয়তো আমাদের দাম্পত্য জীবনের এক বছর সম্পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু আমার মনে হয়, আমরা বহু বছর একসঙ্গে রয়েছি। আমাদের সম্পর্কে এই অনুভূতিটা এখন খুব বেশি খুঁজে পাই।
আমার তরফে অনুপমের জন্য আজকের দিনে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। ও যেন গানে গানেই থাকে। আমরা যেন একসঙ্গে আরও বহু জন্মদিনের সাক্ষী থাকতে পারি।
(সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে অনুলিখিত।)