সায়নী ঘোষ। ছবি: সংগৃহীত।
২০২৪-এর আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের যাদবপুর কেন্দ্রের প্রার্থী তিনি। সায়নী ঘোষ। তৃণমূল ভবনে ঢুকেই আঁচ পাওয়া গেল তাঁর কণ্ঠস্বরের। অসংখ্য মানুষ তাঁর অপেক্ষায়। তাঁদের ঠান্ডা পানীয় দেওয়া হল না কেন? এই নিয়ে বেশ কড়া কথা বলে সহকর্মীদের এই বিষয়ে সজাগ করলেন।
সাদা ডুরে শাড়ি। নরম জমি। আঁচল গায়ে জড়ানো। জল খেতে খেতে সায়নী বললেন, “ঘাড়ে চুল এলে অসুবিধে হয়। তাই মাথায় উঁচু করে বাঁধি।” এখন তাঁর মাথায় শুধু একটাই নাম, যাদবপুর। নরম হয়ে বললেন, “মা যদি আমায় ভোট দিতে পারত!” দ্রুত আবেগ থেকে বেরিয়ে এলেন। বললেন, “মা চাইতেন মেয়ে সাংসদ হবে। তবে যাদবপুর হয় নেতা তৈরি করবে, নয় ছুড়ে ফেলবে।”
তিনি পুরোদস্তুর রাজনীতিক। জানেন, সাংসদ একটা বিশাল ব্যাপার। সাংসদ মানে বিনামূল্যে বিমানের টিকিট আর দিল্লির বাড়ি নয়। বরং তাঁর কাছে সাংসদ মানে গোটা দেশ। ফলে সাক্ষাৎকারে নিজেই লোকসভার উপস্থিতির প্রসঙ্গ তুলে বললেন, “লোকসভায় উপস্থিতি একান্ত জরুরি। আমি ও রকম মানুষ নই যে, প্রচুর শুটিং করেছি, সিনেমা করেছি, কিন্তু রাজনীতিতে সময় দিইনি।”
কাদের কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন সায়নী? টলিপাড়ার ঠিক কোন কোন সহকর্মীর কথা বলতে চাইলেন? এমন প্রশ্ন ওঠার আগেই তাঁর জবাব এল, “মিমি পদত্যাগ করে বলল ‘কাজ করতে পারছি না’, ওর স্পষ্টবাদিতাকে সাধুবাদ।” মিমির সমস্যা হয়েছিল দলের মানুষের সঙ্গেই, সায়নীর এমন হয়নি? “বাইরে থেকে দলের সমস্যার সমাধান হয় না। সমস্যা সব দলেই আছে। মিমির সমস্যা হয়েছে, মিমি বলেছে। আমি বাইরে দল নিয়ে অভিযোগ করব না। জানি কেউ গুছিয়ে দিয়ে যাবে না।”
নিজেই গুছিয়ে নিচ্ছেন তিনি। কোথাও গিয়ে মোমো তৈরি করছেন, তো কোথাও মানুষের ভিড়ে মিশে গিয়ে শুরু করেছেন প্রচার। মন্দিরে যাচ্ছেন জয়ের প্রার্থনা নিয়ে। অভিনেত্রীরা রাজনীতিতে নয়, টলিপাড়াতেই ভাল, এই কথা তাঁর কানেও আসে। তিনি কি তবে ব্যতিক্রম? নিজেকে তেমন মনে না করলেও আসানসোলে হেরে যাওয়া সায়নী সেখান থেকেই পেয়েছিলেন এগিয়ে যাওয়ার জোর। বললেন, “আসানসোলে হেরে যাওয়ার পরে মমতাদি বলেছিলেন, ‘আমি তোমায় চিনে নিয়েছি’। অভিষেক বলেছিল, ‘বড় সাংগঠনিক দায়িত্ব দেব।’” তিনি জানেন এই দুই মানুষ তাঁর উপর কতখানি নির্ভরশীল।
তাঁর সাত বিধানসভার মধ্যে রয়েছে টালিগঞ্জও। কী বলছে টলিপাড়া? সায়নী হেসে জানালেন, টলিপাড়ার সবাই খুশি। পরিচালক রাজ চক্রবর্তী চেয়েছিলেন সায়নী রাজনীতিতে বড় জায়গা জুড়ে থাকুন। তিনি রাজের কাছে কৃতজ্ঞ। যোগ করলেন, “রাজের জন্যই আমি আজ এখানে। রাজনীতিতে আসার নেপথ্যেও রাজ।”
কিন্তু অনীক দত্ত? সায়নী জানেন, তাঁর প্রিয় অনীকদা খুশি। তবে ফোনে কথা হয়নি। যেমন কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়। বললেন, “ত্রিপুরায় গ্রেফতার হওয়ার পর কমলেশ্বরদার ফোন এসেছিল। বলেছিলেন, ‘তৃণমূলকে পছন্দ না, তুমি ঠিক থেকো।’”
একদম সময় নেই তাঁর। পায়ে চটি আর হাতে বোনা তাঁত, যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী, প্রথম সাংসদ হওয়ার স্বপ্ন… ভিড়ে মিশে গেলেন সায়নী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy