‘কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’
অতিমারির সঙ্গে লড়াইয়ে ধ্বস্ত মানুষের কাছে বিনোদন এখন মুঠোফোন বা টেলিভিশন স্ক্রিনেই সীমাবদ্ধ। গত বছরের মতো এ বছরও সিনেমা হলের দরজা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ। হিন্দিতে একের পর এক ছবি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে এলেও, বাংলার ক্ষেত্রে ছবিটা আলাদা। এখানে ছোট-বড়-মাঝারি বাজেটের নানা ছবি তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে দীর্ঘ দিন ধরে। তবে ইন্ডাস্ট্রির অনেক প্রযোজক-পরিচালকই ছবির চেয়েও এই মুহূর্তে বেশি চিন্তিত অতিমারি মোকাবিলা নিয়ে। ব্যক্তিগত স্তরেও বিপর্যস্ত অনেকে। কেউ স্বজন হারিয়েছেন, কেউ আক্রান্তদের সাহায্যে ব্যস্ত। তাই ছবির ভবিষ্যৎ এই মূহূর্তে থমকে।
চলতি মাসে মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় পরিচালিত সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের বায়োপিক ‘অভিযান’। তিনি আপাতত ব্যস্ত কোভিড মোকাবিলায়। পরমব্রত বললেন, ‘‘পরিস্থিতি এখন এতটাই গম্ভীর যে, সেটা কাটিয়ে বেরিয়ে আসাই প্রাথমিক কাজ। আগামী ২৫ জুন ‘অভিযান’-এর স্ক্রিনিং হবে লন্ডন ইন্ডিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে। বাংলার দর্শকের কাছে ছবিটা কবে পৌঁছবে, তা এখনই বলা মুশকিল।’’
স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে এসভিএফ-এর ‘গোলন্দাজ’ এবং রাজ চক্রবর্তীর ‘ধর্মযুদ্ধ’-এর মুক্তির কথা ভাবা হয়েছিল। তবে অগস্ট পর্যন্ত অতিমারির জের চললে, সে সম্ভাবনা ক্ষীণ। সিনেমা হল খুললেও ভিড় হওয়ার সম্ভাবনা কম। তখন কোনও বড় বাজেটের ছবি না এনে ‘সাইকো’র মতো অপেক্ষাকৃত কম বাজেটের ছবি আনতে পারে এসভিএফ। সে ক্ষেত্রে ‘গোলন্দাজ’ পিছোতে পারে পুজোয়। অন্য দিকে ‘কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’ আসার কথা ছিল পুজোয়, সেটি তখন পিছিয়ে যাবে শীতের ছুটিতে।
সুরিন্দর ফিল্মস প্রযোজিত প্রায় ডজনখানেক ছবি রয়েছে, যা নিয়ে এখনও পাকাপোক্ত প্ল্যান করে উঠতে পারেনি তারা। সংস্থার প্রধান নিসপাল সিংহের কথায়, ‘‘পুজোয় ‘বনি’ রিলিজ় করতে চাই, ক্রিসমাসে ‘কাবেরী অন্তর্ধান’। কিন্তু পরিস্থিতি যা, তাতে প্ল্যান করলেও তা বদলে যেতে পারে। আমরা সকলেই এখন পরিবার, প্রিয়জনদের সুরক্ষা নিয়ে বেশি চিন্তিত।’’ ‘ভূতপরী’, ‘অর্ধাঙ্গিনী’, ‘টেনিদা’, অঙ্কুশ-শুভশ্রীর হরর কমেডি, হরনাথ চক্রবর্তীর থ্রিলার, সদ্য শেষ করা হিন্দি ছবি ‘মনোহর পাণ্ডে’-সহ অনেক ছবি জমেছে সুরিন্দর ফিল্মসের ঘরে। কম বাজেটের ছবি অনলাইনে ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবছেন না তারা। ‘‘অনেক ছবি জমলেও সব ক’টাই হল রিলিজ় হবে। ওটিটি-র কথা আমরা ভাবছি না,’’ বললেন নিসপাল।
পুজোয় মুক্তির পরিকল্পনা ছিল দেবের ‘কিশমিশ’। শুটিংই শুরু করা যায়নি, উপরন্তু ছবিতে অ্যানিমেশনের অনেকটা কাজ থাকায় তা ক্রিসমাসে পিছিয়েছে। দেব প্রযোজিত ‘হবুচন্দ্র রাজা গবুচন্দ্র মন্ত্রী’ও বড় বাজেটের। হলে ভিড় না হলে সে ছবিও মুক্তি পাবে না। রাজের ‘হাবজি গাবজি’ গ্রীষ্মের ছুটিতে রিলিজ়ের প্ল্যানও পিছিয়েছে। দেব এবং রাজ এখন অতিমারি মোকাবিলা নিয়ে ব্যস্ত থাকায়, ছবি নিয়ে এই মুহূর্তে ভাবছেন না। ডিস্ট্রিবিউটর শতদীপ সাহা বললেন, ‘‘আমার কাছে এ বছর ‘টনিক’, ‘আবার কাঞ্চনজঙ্ঘা’, ‘অন্তর্ধান’-এর মতো ছবি ছিল। কিন্তু এখন প্রযোজকরা পিছিয়ে যাচ্ছেন।’’
ছবিমুক্তির যাবতীয় পরিকল্পনা করোনার ঢেউয়ে ভেস্তে যাওয়ায় প্ল্যান করা একপ্রকার ছেড়েই দিয়েছেন বাংলার প্রযোজক-পরিচালকরা। ‘অচ্ছে দিন’-এর অপেক্ষায় দিন গুনছেন সকলেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy