অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের পালা জারি।
‘পরকীয়া’-র ঝোড়ো হাওয়ার তছনছ কাঞ্চন মল্লিক এবং পিঙ্কি বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাম্পত্য। ব্যক্তিগত বিবাদ গড়িয়েছে আইনের দিকে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একে অপরের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তাঁরা।
অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের পালা জারি। শ্রীময়ী চট্টরাজের সঙ্গে নাম জড়িয়ে কাঞ্চনের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন পিঙ্কি। আনন্দবাজার অনলাইনকে একাধিক বার এমনটাই জানিয়েছেন উত্তরপাড়ার নব নির্বাচিত বিধায়ক। কাঞ্চনের দাবি, প্রশাসনিক মহলেও ‘বন্ধু’ পাতিয়েছেন তাঁর স্ত্রী। নিজের সেই পরকীয়া আড়াল করতে তাই এই পন্থা অনুসরণ করেছেন তিনি। কাঞ্চনের এই অভিযোগ এক ফুৎকারে উড়িয়েছেন পিঙ্কি। তিনি সাফ জানিয়েছেন, “প্রশাসনিক মহলে আমার কোনও বন্ধু নেই। ‘বন্ধু’ বলতে কাঞ্চন ঠিক কী ভাবে, আমি জানি না। ইন্ডাস্ট্রিতে আজ পর্যন্ত কেউ আমাকে কারও সঙ্গে কোথাও ঘুরে বেড়াতে দেখেনি। ওরা এখন পরিকল্পনা করে পুরো বিষয়টাকে অন্য দিকে ঘোরানোর চেষ্টা করছে।”
শুধু পরকীয়ার প্রসঙ্গ টেনে পিঙ্কিকে আক্রমণেই থামেননি কাঞ্চন। গত শনিবার থানায় পিঙ্কির অভিযোগ দায়ের করার কথা প্রকাশ্যে আসতে প্রশ্ন তোলেন, ‘‘বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিকের উপর কেন এত রাগ পিঙ্কির?” স্বামীর এই প্রশ্নের উত্তরে পিঙ্কি বলেছেন, “শ্রীময়ী চট্টরাজের সঙ্গে ওর পরকীয়ার জন্য বা ওর ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য অভিযোগ আমি করিনি। রাস্তায় আমার এবং আমার ছেলের সঙ্গে যে ধরনের দুর্ব্যবহার ওরা করেছে, তার প্রতিবাদ করতে একজন মা হিসেবে যা করার করেছি।”
শুরু থেকেই পিঙ্কির এই অভিযোগের পাল্টা জবাব দিয়েছেন কাঞ্চন। জানিয়েছেন, তিনি বা শ্রীময়ী, কেউ কোনও রকম অভব্যতা করেননি পিঙ্কির সঙ্গে। বরং উত্তেজিত হয়ে পিঙ্কির দাদা তেড়ে এসেছিলেন তাঁদের দিকে। কাঞ্চনের দাবি, তাঁদের আট বছরের ছেলে শান্ত হয়ে গাড়িতে বসেছিল। পিঙ্কির বর্ণনা অনুযায়ী ‘কাটা ছাগল’-এর মতো ছটফট করতে দেখা যায়নি তাকে। আনন্দবাজার অনলাইন মারফত কাঞ্চনের বয়ান শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন পিঙ্কি। উত্তেজনার ছাপ পিঙ্কির গলায়, “বিশ্বাস করতে পারবেন না, গাড়ির ভিতরে আমার ছেলের কী অবস্থা হয়েছিল! আমি মা হয়ে সেটা দেখেছি। ওরা যখন গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেল, কাটা ছাগলের মতো কাঁপছিল ও। খুব কাঁদছিল। সেই কান্নার রেকর্ডও আমার কাছে আছে। কিন্তু আমি কাঞ্চন মল্লিককে টেনে নীচে নামাতে চাই না।”
পিঙ্কি জানিয়েছেন, নয় বছরের দাম্পত্য জীবনে ক্রমশ কাঞ্চনকে বদলে যেতে দেখেছেন তিনি। শুধুমাত্র পরিবারের দিকে তাকিয়ে কখনও কোনও পদক্ষেপ করেননি। কিন্তু কাঞ্চন মনে করেন, তিনি বিধায়ক হওয়ার পরেই পিঙ্কির সব রাগ আচমকা প্রকাশ পাচ্ছে। ‘অভিনেতা’ কাঞ্চন মল্লিককে নিয়ে এত ক্ষোভ এত বছর ধরে কেন জমিয়ে রেখেছিলেন তিনি? স্ত্রীকে কটাক্ষ করে জানতে চেয়েছিলেন কাঞ্চন। “কেন আমি আগে থেকেই ওকে নিয়ে খারাপ কথা বলব? একটা মেয়ে তো তার সংসার বাঁচাতে চাইবে! ওর বিধায়ক হওয়া নিয়ে আমার রাগ থাকলে, নির্বাচনের প্রচারের সময়েই অনেক কিছু বলতে পারতাম। কিন্তু এ সব অঙ্ক আমি বুঝি না,” শান্ত ভাবে উত্তর দেন পিঙ্কি।
কাঞ্চন-পিঙ্কি-শ্রীময়ী ত্রিভুজে পিঙ্কি ছাড়া বাকি দু’জনই রাজনৈতিক ক্ষমতাসম্পন্ন। এক জন বিধায়ক হলে, অন্য জন প্রচারের অন্যতম মুখ। কিন্তু পিঙ্কি এই সমীকরণের খানিক বাইরে। ব্যক্তিগত বিতণ্ডায় ‘রাজনৈতিক দাদাদিদি’-দের ডেকে আনার পক্ষপাতী নন বিধায়কের স্ত্রী। পিঙ্কি নিশ্চিত, শাসকদলের দুই কর্মীর সঙ্গে প্রকাশ্য বিবাদে জড়িয়েও সুরক্ষিত থাকবেন তিনি। ইতিমধ্যেই ইন্ডাস্ট্রির বহু শিল্পী তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। বাড়িয়েছেন সাহায্যের হাত। অভিনেত্রীর দাবি, আর্টিস্ট ফোরাম পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে তাঁকে।
ব্যক্তিগত জীবন রাতারাতি খবরের শিরোনামে। মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত পিঙ্কি। দোসর কাঞ্চনের আরও এক অভিযোগ। বিধায়ক বলেছিলেন, বিয়ের পর তাঁর সঙ্গে এক ছাদের তলায় সংসার করেননি পিঙ্কি। অভিনেত্রীর দাবি, বিতর্কের অভিমুখ ঘুরিয়ে দিতে ব্যক্তিগত জীবনের প্রসঙ্গ টানছেন কাঞ্চন। ছেলের রুটিন তৈরি করতে করতে নিজেকে খানিক গুছিয়ে নেন পিঙ্কি। কান্না ভেজা গলায় বলেন, “এ সব বলে ওকে কথা ঘোরাতে বারণ করুন। ওর এবং আমার দাম্পত্য কলহের জন্য অভিযোগ দায়ের করিনি। করেছি একজন মা হিসেবে।”
কথা শেষ হতেই ফের কান্নায় ভেঙে পড়েন অভিনেত্রী। কথা বন্ধ হয়ে আসে তাঁর। খানিক পর সামলে নিলেন নিজেকে। শান্ত গলায় বললেন, “আমি মা। আমি ভাঙব না। আরও শক্ত করব নিজেকে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy