পাওলি ও পরমব্রত।
যাঁরা নিজেরা ভূতে ভয় পান, তাঁদের পক্ষে সুপারন্যাচারাল থ্রিলারে কাজ করাটা কি সহজ? না কি তাতে ভয় কমে যায়? পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় এবং পাওলি দাম দু’জনেই জোর গলায় জানালেন, ‘বুলবুল’-এ অভিনয় করার ফলে তাঁদের ভূতে ভয় এবং বিশ্বাস কমেনি।
আসলে তাঁরা ভূত-পেত্নী নিয়ে এখন আর ভাবছেন না। চারদিক থেকে আসা প্রশংসার ঢেউ সামলাতেই ব্যস্ত। পাওলি বলছিলেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ায়, ব্যক্তিগত ভাবে অসংখ্য বার্তা পাচ্ছি। ছবিটা যে মানুষকে কোথাও স্পর্শ করেছে, বুঝতে পারছি।’’ ওটিটি রিলিজ়ের ক্ষেত্রে প্রতিক্রিয়া খুব তাৎক্ষণিক হয়। ‘‘থিয়েট্রিকালের নিরিখে যদি মাপি, তা হলে পুজোর সময়ে ছবি বাম্পার ওপেনিং পেলে যেমন প্রতিক্রিয়া পায়, তেমনই পাচ্ছি। ফোন থামছে না, টুইটার খুললেই গুচ্ছের নোটিফিকেশন,’’ মন্তব্য পরমব্রতর।
অনুষ্কা শর্মার প্রযোজনায় আগে ‘পরি’তে কাজ করেছিলেন পরমব্রত। তখনই পরিচালক অন্বিতা দত্তর কাছ থেকে ‘বুলবুল’-এর গল্পটা শুনেছিলেন। পরমব্রতর কথায়, ‘‘অন্বিতাকে বলেছিলাম ছবিটা করার সময়ে আমাকে বলতে। ও বলত, ‘সুদীপ ছবির সবচেয়ে জোরালো আর পজ়িটিভ পুরুষ চরিত্র।’ কাজ করার পরে আমি তা বুঝতে পারছি।’’ তবে ছবির সবচেয়ে জটিল চরিত্র বোধহয় পাওলির। ‘‘এই সিরিজ়ে আমার কাস্টিং সবচেয়ে শেষে হয়েছিল। তাই অন্বিতার সঙ্গে সরাসরি সেটে গিয়েই আলাপ। চিত্রনাট্য পড়ে বিনোদিনীকে ম্যানিপুলেটিভ মনে হয়েছিল। অন্বিতার সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পারলাম, বিনোদিনীও পরিস্থিতির শিকার। মানসিক রোগীর সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়। ছোট থেকে বোঝানো হয়েছে, অত্যাচারিত হলেও মুখ বন্ধ রাখতে হয়। যে কারণে মেয়েটি লক্ষ্মণরেখা পার করার সাহস দেখাতে পারে না,’’ নিজের চরিত্রের ব্যাখ্যায় বললেন পাওলি।
পরমব্রতর যেমন ইউনিটের অনেকের সঙ্গে আগে থেকেই আলাপ ছিল, পাওলির তা ছিল না। তবে অভিনেত্রী অভিভূত হয়ে গিয়েছিলেন অন্বিতার মুখে ‘পাও’ ডাক শুনে। ‘‘আমাকে ‘পাও’ বলে মা-বাবা ছাড়া আর কেউই ডাকে না। প্রথম আলাপে অন্বিতার মুখে ওই নামটা শুনে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম,’’ বললেন পাওলি। ছবিতে বিধবার চরিত্রে নেড়া মাথার লুকটা অভিনেত্রীর কাছে চ্যালেঞ্জ ছিল। পাওলির কথায়, ‘‘ভোরের দিকে কলটাইম থাকলে আমাকে রাত আড়াইটে, তিনটেয় উঠে তৈরি হতে হত। প্রথম দিন চার ঘণ্টা লেগেছিল লুক সেট করতে। তার পর থেকে দু’-আড়াই ঘণ্টা মতো সময় লাগত।’’
সব বাঙালি বাড়িতেই ছোটদের রূপকথা, লোককথার গল্প শোনানো হয়। পাওলিকে যেমন ছোটবেলায় ভয় দেখানো হত, বাড়ির পিছনের শিমুল গাছে পেত্নী থাকে বলে। অভিনেত্রীর ভূতে বিশ্বাস, ভয় ষোলোআনা। কম যান না পরমব্রতও। ‘‘আমি যেমন ভূতে বিশ্বাস করি, তেমনই ভয় পেতেও ভাল লাগে। গা ছমছমে ব্যাপারটা উপভোগ করি,’’ হাসতে হাসতে বললেন অভিনেতা। পাওলি-পরমব্রত একসঙ্গে অনেক ছবিতেই অভিনয় করেছেন। গোয়ায় ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে গিয়ে হোটেলে ভূত আছে কি না, কী ভাবে খুঁজতেন সেই গল্পটা বলছিলেন পরমব্রত, ‘‘আমি আর পাওলি হোটেলে যেতাম আর এনার্জি বোঝার চেষ্টা করতাম। সন্দেহ হলেই অন্য হোটেল...’’
ভারতীয় ছবিতে সুপারন্যাচারাল ড্রামার মোড়কে জোরালো বার্তা দেওয়ার ঘটনা তেমন চোখে পড়ে না। ‘‘আমাদের এখানে হরর বা সুপারন্যাচারাল মুভির ঠিকঠাক মানদণ্ড নেই। সাধারণত অদ্ভুতুড়ে পরিস্থিতিতে নানা কাণ্ডকারখানা দেখানো হয়। ‘বুলবুল’ সে জায়গা থেকে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পেরেছে বলে মনে হয়,’’ মন্তব্য পরমব্রতর।
‘বুলবুল’এর প্রতিক্রিয়া মুম্বইয়ে কাজের ক্ষেত্রে দু’জনকেই সুবিধে দিচ্ছে। দু’জনের কাছেই নাকি বেশ কিছু প্রস্তাব আসতে শুরু করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy