সংযমের অভাবই কি পল্লবীর মৃত্যুর জন্য দায়ী?
২০২০-র ১৪ জুন। সুশান্ত সিংহ রাজপুতের আত্মহত্যা। জোর ধাক্কায় কেঁপে উঠেছিল বলিউড, বাংলা বিনোদন দুনিয়া। সে দিনও রুপোলি পর্দার তারকাদের মনখারাপে সহানুভূতির হাত রেখেছিলেন শ্রীলেখা মিত্র। বলেছিলেন, ‘‘যে কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে এ প্রজন্ম যাচ্ছে, তাতে শরীরের থেকেও মনের যত্ন নেওয়া বেশি জরুরি।’’
দু’বছর পরেও সেই ছবির খুব বদল ঘটেনি। ২০২২-র ১৫ মে। ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা পল্লবী দে-র ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার তাঁর গড়ফার বাড়ি থেকে। হত্যা না আত্মহত্যা? জানা যায়নি। এ বার নড়ে বসেছে টলিউড। ঠিক তখনই ফের শ্রীলেখার ফেসবুক পোস্ট, ‘আমার প্রস্তাব, প্রত্যেক ইউনিট থেকে প্রতি মাসে সবার (অভিনেতা, অভিনেত্রী) মনস্তাত্ত্বিক মূল্যায়ন করা দরকার।’
রবিবার সকালটা অন্য রকম ভাবেই শুরু হয়েছিল অভিনেত্রীর। আন্তর্জাতিক মঞ্চ তাঁকে সেরা অভিনেত্রীর সম্মান জানিয়েছে আদিত্যবিক্রম সেনগুপ্তের ‘ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন কলকাতা’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য। সেই সুখবর, আনন্দ তিনি ভাগ করে নিচ্ছিলেন সবার সঙ্গে। আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে শ্রীলেখার বক্তব্য, ‘‘তার মধ্যেই পল্লবীর খবর শুনলাম। সমস্ত আনন্দ যেন থমকে গেল! ভীষণ বিষণ্ণ আমি। মাত্র ২৫-এই আরও একটি সম্ভাবনা ঝরে গেল। এবং আবারও প্রমাণিত, বিনোদন দুনিয়ায় নিরাপত্তাহীনতা, টক্কর, অবসন্নতার শিকড় গভীরে গেঁথে বসেছে। এর থেকে যেন মুক্তি নেই!’’
কেন বারে বারে আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছে এই প্রজন্ম? প্রশ্ন ছিল অভিনেত্রীর কাছে। শ্রীলেখার যুক্তি, ‘‘একাধিক কারণ রয়েছে। আমরা পরিণত হয়ে বিনোদন দুনিয়ায় পা রেখেছিলাম। ৩০০ টাকা দিয়ে উপার্জন শুরু। আস্তে আস্তে সেটা বেড়ে ৫০০, ৭০০ টাকা হয়েছে। এখনকার প্রজন্ম খুব ছোট বয়সে পা রাখছে ইন্ডাস্ট্রিতে। ভাল করে কিছু বুঝে ওঠার আগেই নাগালে যশ, অর্থ, খ্যাতি, প্রতিপত্তি। জীবন বদলে যাচ্ছে নিমেষে। কিন্তু সংযম নেই। এ বার সেই জীবন ধরে রাখতে গিয়ে লড়াইয়ে নামতে হচ্ছে। সহজে যা পাওয়া যায়, সহজেই আবার তা হারিয়েও যায়, এটা বোঝে না তারা। ফলে, হতাশা জন্ম নিচ্ছে। লড়াই করতেই শিখছে না কেউ। আগেভাগেই হার মানছে।’’
শ্রীলেখার আরও দাবি, পাশাপাশি রয়েছে কাজের মারাত্মক চাপ। ছোট পর্দার অভিনেতা-অভিনেত্রীরা দম ফেলার ফুরসত পান না। সেটাও একটা সময়ে মনের উপরে ছাপ এবং চাপ দুটোই ফেলে। এই কারণেই তিনি মনস্তাত্ত্বিক মূল্যায়নের কথা লিখেছেন। শ্রীলেখার মতে, এটি সব বয়সের জন্যই খুব জরুরি। পাশাপাশি এ-ও জানিয়েছেন, পেশার কারণে বাড়ি থেকে দূরে একা বা লিভ-ইন সঙ্গীর সঙ্গে দিন কাটান এই প্রজন্মের অনেক অভিনেতা। এই মানুষগুলোর মন বোঝা খুব দরকার। এঁদের মানসিক দিক থেকে সুস্থ থাকাটা বেশি জরুরি। সেটা এখনও কেউ বুঝে উঠতে না পারলে এই ধরনের দুর্ঘটনা আরও বাড়বে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy