Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪

আবীর এবং যিশুর জন্য টলিউডে বাকি নায়কেরা কোণঠাসা?

জমি ছাড়া তো দূর অস্ত, আবীর ও যিশুর দাপটে বাকি অভিনেতারা কতটা কোণঠাসা?অবশ্য এই চুক্তিই বলে দিচ্ছে, প্রযোজনা সংস্থার পক্ষপাতিত্ব কাদের দিকে। আর এমন জোরদার সমর্থন পেলে দুই অভিনেতা যে কাউকে জমি ছাড়বেন না, তা বলাই বাহুল্য! 

দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ
শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:২৪
Share: Save:

টলিউডে এক নম্বর নায়ক কে?

প্রশ্নের জবাবে একটা নাম বলা মুশকিল! কারণ এখানে ছবির অনেক রকম বিভাজন। বাণিজ্যিক-শহুরে। কেউ নিজেকে নায়ক বলেন, কেউ অভিনেতার সংজ্ঞায় বেশি খুশি। বদলে গিয়েছে এক নম্বরের তথাকথিত ধারণাও। তবে একটা নাম সকলে এক বাক্যে স্বীকার করবেন, আবীর চট্টোপাধ্যায়। যে ধারার ছবি টলিউডে এখন চলছে, সেখানে আবীরের নামই পরিচালক-প্রযোজকদের কাছে প্রথম বিবেচ্য। ঠিক তার পরেই আসে যিশু সেনগুপ্তর নাম।

এ বছরই আবীরের ‘বিজয়া’, ‘শাহজাহান রিজেন্সি’ মুক্তি পেয়েছে। ‘তৃতীয় অধ্যায়’ ফেব্রুয়ারিতে রিলিজ়। আসছে ‘দুর্গেশগড়ের গুপ্তধন’, ‘বর্ণপরিচয়’, ‘অপারেশন রাইটার্স’। ব্যোমকেশ বক্সীর একটি ছবিও হওয়ার কথা। আবীর কিন্তু এই তালিকাতে আপত্তি জানাচ্ছেন। তাঁর কথায়, ‘‘তালিকার প্রথম তিনটে ছবি গত বছরের। সে দিক থেকে হাতে তিনটে ছবিই রয়েছে। আর এ বছর ব্যোমকেশ হবে বলে মনে হয় না। হাতে ন’টা ছবি রয়েছে এমন অভিনেতাকেও আমি চিনি।’’

কিন্তু পরিসংখ্যানের বাইরেও অন্য অঙ্ক আছে। ইন্ডাস্ট্রির খবর, আবীরের সঙ্গে এসভিএফ পাঁচটি ছবির চুক্তি করেছে। চুক্তি হয়েছে যিশুর সঙ্গেও। মৈনাক ভৌমিকের ‘বর্ণপরিচয়’ করলেন যিশু। সৃজিতের সঙ্গে তাঁর শ্রীচৈতন্য করার কথা। তবে প্রযোজক আলাদা। ‘মণিকর্ণিকা’, ‘এনটিআর’ এবং ‘দেবীদাস ঠাকুর’ করার জন্য টলিউডে যিশুকে খুব বেশি দেখা না গেলেও, তাঁর আগামী দিন সুনিশ্চিত। এখন প্রশ্ন, এই দু’জনই যদি অধিকাংশ ছবির মুখ্য চরিত্রে থাকেন, তা হলে বাকিদের অবস্থা কেমন? নিন্দুকেরা তো অন্য কথাও বলছে। এঁরা যে ভাবে নিজেদের ‘প্রভাব’ বিস্তার করেছেন, তাতে বাকিরা ‘কোণঠাসা’। যেমনটা নাকি এক সময়ে হতে হয়েছিল ইন্দ্রনীল সেনগুপ্তকে। আনন্দ প্লাসের সাক্ষাৎকারেই ইন্দ্রনীল তা নিয়ে নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন।

কার হাতে ক’টা ছবি এবং কোন ব্যানারের, তার উপরে ইন্ডাস্ট্রির ভরকেন্দ্র অনেকটাই নির্ভর করে। এসভিএফ-এর পছন্দের অভিনেতা হতে পারলে বাড়তি মাইলেজ। আবীর-যিশুকে যে ধরনের ছবিতে দেখা যায়, সেখানে তাঁদের সবচেয়ে কাছের প্রতিযোগী পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, ঋত্বিক চক্রবর্তী এবং রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়।

পরমব্রত এই মুহূর্তে প্রযোজনা এবং পরিচালনা নিয়ে অনেক বেশি ব্যস্ত। তা ছাড়া বলিউডেও বেশ কিছু কাজ করছেন তিনি। ইন্ডাস্ট্রির অনেকের মতে, তিনি থাকলে সমীকরণ বদলাতেও পারত। ঋত্বিক নিজের মতো করে অনেক ছবিই করছেন। কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, অনীক দত্ত থেকে শুরু করে নতুন পরিচালকদের ছবিতেও তিনি রয়েছেন। কিন্তু ওই পিআর ভাল না হওয়ার কারণে অনেক জায়গায় পিছিয়েও পড়ছেন। একই বক্তব্য রাহুলকে নিয়েও।

ইন্ডাস্ট্রির অন্দরে যে এই ধরনের কথাবার্তা সঞ্চারিত হচ্ছে, তা নিয়ে ওয়াকিবহাল আবীর। ‘‘হাতে বেশি ছবি বলে এ ভাবে কাউকে সিঙ্গল আউট করে দেওয়াটা ভুল। এতে এক ধরনের নেগেটিভিটি তৈরি হয়। আমরা তো অন্যের ভাল দেখতে পারি না! আমরা যে টাকাটা পাই, তাতে বছরে অন্তত ছ’টা ছবি করা প্রয়োজন। আর এটা তো কেউ বলতে পারবে না, অন্য উপায়ে কাজ পাচ্ছি। ডিমান্ড-সাপ্লাইয়ের ব্যাপারও আছে। গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়েছে বলেই পরিচালক-প্রযোজকেরা কাস্ট করছেন।’’

কেরিয়ারের ব্যাডপ্যাচ কাটিয়ে যিশু এখন পুরোদস্তুর ফোরফ্রন্টে। তিনি যেমন মনে করেন, ‘‘ভাল কাজ করে গেলে ফল পাওয়া যাবেই।’’ তবে এই মুহূর্তে যিশুর ফোকাস বলিউড। জানালেন, বলিউডে কয়েকটি ছবির কথা চলছে। যে কারণে হাতে বাংলা ছবি নিচ্ছেন না। তবে এসভিএফ-এর সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে দুই অভিনেতাই মুখ খুলতে চাইলেন না। জানালেন, অন্য প্রযোজকের সঙ্গে কাজ করতে সমস্যা নেই।

অবশ্য এই চুক্তিই বলে দিচ্ছে, প্রযোজনা সংস্থার পক্ষপাতিত্ব কাদের দিকে। আর এমন জোরদার সমর্থন পেলে দুই অভিনেতা যে কাউকে জমি ছাড়বেন না, তা বলাই বাহুল্য!

অন্য বিষয়গুলি:

Abir Chatterjee Jisshu Sengupta Cinema
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy