ঐন্দ্রিলা শর্মা
সকাল থেকে ফোনের বন্যা। সংবাদমাধ্যমে ঐন্দ্রিলা শর্মা আজ আলোচনার কেন্দ্রে। কারণ? মণীষা কৈরালা, যুবরাজ সিংহের পরে বিশ্ব ক্যানসার দিবসে এই প্রজন্মের কাছে তিনিই লড়াইয়ের মুখ! একই সঙ্গে বাংলা এবং ইংরেজি প্রেম দিবসের নিরুচ্চারিত ‘যুগল মুখ’ সব্যসাচী চৌধুরী-ঐন্দ্রিলা। তাঁর লড়াইয়ের প্রধান সঙ্গী সব্যসাচী যথারীতি নেপথ্যে।
৫ ফেব্রুয়ারি, সরস্বতী পুজোর দিন ঐন্দ্রিলার জন্মদিন। দ্বিতীয় বার জন্ম তাঁর। যদিও উদযাপন রবিবার। শনিবার বাড়িতে বসন্ত পঞ্চমীর আবাহন। তাঁর শুভকামনায় নারায়ণ পুজো। সঙ্গে ভোগের খিচুড়ি, ফল-প্রসাদ। ইদানীং একটু একটু করে বাইরেও বেরোচ্ছেন। বৃহস্পতিবার তিনি সুন্দর সেজে গিয়েছিলেন এক বিয়েবাড়ি। তারও কয়েক দিন আগে নরম গোলাপি আভা ছড়ানো পোশাকে সেজে বেড়াতে বেরিয়ে পড়েছিলেন। এবং সব কিছু ছাপিয়ে ঐন্দ্রিলা আগামী মার্চে আবার কাজে ফিরছেন।
এ বার তাঁর প্রত্যাবর্তন ছোট পর্দায় নয়। চলতি হাওয়ার পন্থী অভিনেত্রীকে সম্ভবত দেখা যাবে ওয়েব সিরিজে! তার জন্য হালকা ডায়েট, অল্প শরীরচর্চা, ঘরোয়া রূপটান নিচ্ছেন নিয়মিত।
সব মিলিয়ে কেমন লাগছে তাঁর? এত দিনে বাইরের দুনিয়া কি খুব বদলে গিয়েছে?
আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করতেই ফোনে বরাবরের মতোই মিষ্টি হাসি দিয়ে অভ্যর্থনা ঐন্দ্রিলার। বোঝা গেল, টাটকা বাতাসে আবারও শ্বাস নিতে পেরে ভাল আছেন তিনি। তাঁর উত্তর, ‘‘প্রথম বার যখন মারণরোগ হয়েছিল তখন আমি খুবই ছোট। তাই বেশি ভেঙে পড়েছিলাম। বেশি কষ্টও পেয়েছিলাম। এ বার সব্যসাচী পাশে থাকায় কষ্টটাকে যেন কষ্ট বলেই মনে হয়নি। ওর ইতিবাচক স্পর্শে আমি অনেকটাই নিশ্চিন্ত ছিলাম। যা সাধারণত হওয়ার কথা নয়।’’তিনি এও জানিয়েছেন, এত গুলো দিনে বাইরের জগৎ অনেকটাই বদলে গিয়েছে। যেখানে তিনি রূপচর্চার জন্য যেতেন সেখানকার অনেক কর্মী বদলে গিয়েছেন। তাঁকে দেখার দৃষ্টিভঙ্গিও বদলেছে। আগে সবাই জানাতেন, তাঁর অভিনয় নিয়মিত দেখেন। ভাল লাগে। এখন বলেন, ‘‘তোমার লড়াই দেখেছি। অনেক কষ্ট করে জিতে ফিরলে। আমরা খুশি।’’
প্রেমিকের মতোই ঐন্দ্রিলা ভাল অভিনেতা। তাঁর অভিনীত ধারাবাহিক ‘জিয়ন কাঠি’ যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিল। সেই প্রতিভা কি একটু হলেও হার মেনেছে ক্যানসারের কাছে? অভিনেতার বদলে ঐন্দ্রিলা কি এখন শুধুই ক্যানসারজয়ী ‘মুখ’? এ বারেও স্বতঃস্ফূর্ত তিনি। আন্তরিক ভাবেই মেনে নিলেন, কিছুটা হলেও তাঁর অভিনয় প্রতিভা যেন স্তিমিত। সহজ ব্যাখ্যাও দিলেন তার, ‘‘প্রথম বারের ক্যানসারের খবর কেউ জানতে পারেনি। ফলে, প্রশ্ন বা আলোচনার কোনও সুযোগ তৈরি হয়নি। দ্বিতীয় বারের সমস্ত খুঁটিনাটি সব্যসাচী ফেসবুকে দিয়েছে। সবাই জেনেছে। আমার নিয়মিত খোঁজখবর নিয়েছে। জানার আগ্রহও তৈরি হয়েছে।’’
ঐন্দ্রিলার আরও যুক্তি, আজ প্রায় প্রতি ঘরে, প্রতি পরিবারে ক্যানসার থাবা বসিয়েছে। অনেকে তাঁদের প্রিয় জনকে ফিরিয়ে আনতে পেরেছেন। অনেকে পারেননি। এ রকম বহু মানুষ তাঁর জয়কে তাঁদের জয় মনে করে উদযাপনে সামিল হয়েছেন। বিয়েবাড়িতে এক বৃদ্ধা ঐন্দ্রিলার সঙ্গে কথা বলতে বলতে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি! অভিনেত্রী মতে, তাঁর লড়াই যদি অন্যদের অনুপ্রাণিত করে, সাহস জোগায়, সহমর্মিতা জানায়— ক্ষতি কী? তাঁকে দেখে বেশির ভাগ মানুষের চোখে এখন শ্রদ্ধা, সম্মান, ভালবাসা, আবেগ ভিড় জমায়।
সেখানে কোথাও অনুকম্পার ছায়া থাকে না? ফের হাসি। তার পরেই টানটান জবাব, ‘‘এমনও শুনতে হয়েছে, ও বাবা, ক্যানসার? তার মানে তো সব শেষ...! চুপচাপ শুনেছি। মা-বাবা-দিদি আর সব্যসাচীকে নিয়ে লড়ে জবাব দিয়েছি তাঁদের।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy