শিশুশ্রম আইন কেবল সংবিধানেই?
আইন রয়েছে। তাতে স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা রয়েছে— কোনও শিশু বা কিশোরকে দিনে পাঁচ ঘণ্টার বেশি কাজ করানো যাবে না। বিশ্রাম ছাড়া টানা তিন ঘণ্টার বেশি কাজ করতেও দেওয়া যাবে না। তবু সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এ দেশের বিনোদন জগতে ১৫ বছরের কম বয়সি শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের দিনে ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে কাজ করিয়ে চলেছে বিভিন্ন প্রযোজনা সংস্থা। কাস্টিং এজেন্সিগুলিও শিশু ও কিশোর শ্রম আইন লঙ্ঘন করছে।
সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০১৯ সালে দেশের গণমাধ্যম এবং বিনোদন শিল্পের মোট উপার্জন ছিল ১.৬৭ লক্ষ কোটি টাকা। যার ৩০ শতাংশই অনূর্ধ্ব ১৫ বছর বয়সিদের অবদান বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় শিল্প-বাণিজ্য মন্ত্রক।
কত সংখ্যক শিশুকে বেআইনি ভাবে খাটিয়ে নিচ্ছে বিভিন্ন বিনোদন সংস্থা, তার সঠিক হিসেব পাওয়া অবশ্য মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিছু বেসরকারি সংস্থা, যারা শিশু অধিকার এবং সুরক্ষা নিয়ে কাজ করে, তারাই এর খতিয়ান বার করে চলেছে। সাতটি কাস্টিং এজেন্সির অনলাইন নমুনা সংগ্রহ করে দেখা গিয়েছে, অভিনেতাদের মধ্যে ২৪.৯ শতাংশই শিশু (বয়স ১৫ বছরের নীচে)।
১৯৮৬ সালে শিশু-কিশোর শিল্পী শ্রম আইন বা সিএএলপিআরএ নির্দেশিকা জারি সত্ত্বেও তাদের লাগাতার কাজ করানোর অভিযোগ উঠছে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, প্রযোজনা সংস্থাগুলোতে সপ্তাহে ছ’দিন ১২- ১৩ ঘণ্টা করে শিশুশিল্পীদের দিয়ে কাজ করিয়ে নেওয়া হচ্ছে। অভিভাবকেরাও তাতে বাধা দিচ্ছেন না।
শুধু তা-ই নয়, আইন অনুযায়ী মুম্বইয়ের শিশুশিল্পীদের রোজগারের ২০ শতাংশ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে জমা পড়ার কথা। বাকি অংশ পরিবারের হাতে যায়, যত দিন না তারা সাবালক হচ্ছে। সেই নিয়মেরও হেরফের দেখা দিচ্ছে কার্যক্ষেত্রে। অধিকাংশ সময়েই পরিবারের লোক জবরদস্তি করে সব টাকা নিজেদের জিম্মায় নিয়ে নিচ্ছেন। হাড়ভাঙা খাটুনির পর শিশুটি শূন্য উপার্জনেই বড় হচ্ছে।
‘টিভি অ্যান্ড সিনে আর্টিস্টস অ্যাসোসিয়েশন’ নামের এক আধা সরকারি সংস্থার পক্ষ থেকে সম্প্রতি এক নয়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ১২ জুন, শিশুশ্রম দিবসে অভিভাবকদের বোঝানোর ভার নিয়েছিলেন সংস্থার আধিকারিকরা। বিশেষত যে সব পরিবারের লোকেরা ভাবছেন, তাঁদের সন্তান প্রতিভার জোরে যখন অল্প বয়স থেকেই করে খাচ্ছে, আর পড়াশোনার দরকার নেই। সে সব ক্ষেত্রে রোজগেরে শিশুশিল্পীদের স্কুলে ফিরিয়ে প্রথাগত শিক্ষার বন্দোবস্ত করার দিকে জোর দেবেন তাঁরা। না হলে অল্প বয়সেই নষ্ট হয়ে যাবে তাদের ভবিষ্যৎ। যা চিন্তার বিষয় বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy