প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ‘গুমনামী’র রূপটান শিল্পী সোমনাথ কুণ্ডু।
তিনি কি নেতাজি? নাকি তিনি প্রসেনজিৎ!
সোমবার এই প্রশ্নে তোলপাড় হয়ে গিয়েছিল গোটা দেশ। কারণ, তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র টুইট করেছিলেন, নেতাজির জন্মজয়ন্তীতে রাষ্ট্রপতি ভবনে নেতাজির যে ছবির আবরণ উন্মোচন করা হয়েছে, সেটি আদতে সৃজিত মুখোপাধ্যায় পরিচালিত বাংলা ছবি ‘গুমনামী’র চরিত্রাভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের। বিতর্ক এতটাই বাড়ে যে, কেন্দ্রীয় সরকার বিবৃতি দিয়ে জানায়, ছবিটি নেতাজির একটি ছবির আদলেই আঁকা। এঁকেছেন পরেশ মাইতি। এর সঙ্গে ‘গুমনামী’ বা প্রসেনজিতের কোনও সম্পর্ক নেই।
মহুয়া বুঝতে পারেন, ভুল হয়ে গিয়েছে। নিজের টুইট মুছে ফেলতে বাধ্য হন তিনি।
সত্যিই কি ‘গুমনামী’-র প্রসেনজিতের সঙ্গে নেতাজির অতটাই মিল? পুরোদস্তুর মিল না থাকলেও চোখের মিল আছে। অন্তত তেমনই দাবি করেছেন ওই ছবিতে প্রসেনজিতের রূপটান শিল্পী সোমনাথ কুণ্ডু। সোমবারের টুইট-বিতর্কের ধোঁয়াশা কাটাতে গিয়ে তাঁকেই পুরো কৃতিত্ব দিয়েছেন ‘গুমনামী’র পরিচালক সৃজিত।
কিন্তু সৃজিত-প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় সামাজিক মাধ্যমে তাঁর নাম জানিয়েছেন। গোটা দেশ তা দেখেছে। অর্থাৎ, গোটা বিতর্কে সোমনাথের ‘প্রস্থেটিক’ রূপটানের নৈপুণ্যই প্রমাণ হয়েছে। তবু খুশি নন সোমনাথ। কেন খুশি নন? মঙ্গলবার আনন্দবাজার ডিজিটালকে সোমনাথ বলেছেন, ‘‘মানুষ নাম জানতে পারছে। পরিচালক, অভিনেতারা আমায় কৃতিত্ব দিচ্ছেন। সেটা অবশ্যই ভাল লাগছে। কিন্তু এই পরিচিতি যদি এমন একটা বিতর্কের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়ে প্রকাশ্যে না আসত, মানুষ যদি আমার কাজ দেখে আমাকে জানতেন, তা হলে বেশি ভাল লাগত।’’
সোমনাথ আরও বলছেন, ‘‘যেটা ঘটেছে, আমার সত্যিই ভাল লাগেনি। যেহেতু এটা নেতাজিকে নিয়ে ঘটেছে। রাষ্ট্রপতি নেতাজির ছবির আবরণ উন্মোচন করেছেন। একজন বিখ্যাত শিল্পী ‘পদ্মশ্রী’ চিত্রকর পরেশ মাইতি ওই ছবি এঁকেছেন। আর তা নিয়ে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। লোকে ভুল বুঝেছে। এটা আমার ভাল লাগেনি। অনেকেই ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য করেছেন। প্রসেনজিৎ দাদাকে নিয়েও অনেক কথা বলছেন। সেগুলো আমার ভাল লাগেনি। যদি লোকে সিনেমাটা দেখে আমার কাজের প্রশংসা করত, তা হলে ভাল লাগত।’’
‘গুমনামী’-তে কাজ করার জন্য অনেক গবেষণা করতে হয়েছে সোমনাথকে। নেতাজির বিভিন্ন বয়সের ছবি দেখতে হয়েছে। বিতর্কের পর তিনি কি পরেশ মাইতির আঁকা ছবিটি দেখেছেন? সোমনাথের জবাব, ‘‘ছবিটা যে ছবি দেখে আঁকা হয়েছে, সেটা ১৯৪০ সালের কাছাকাছি কোনও একটা সময়ে তোলা। তখন নেতাজির বয়স বড়জোর ৪৩ কি ৪৪। খুবই ইয়ং দেখতে। হয়তো তুলির টানে কিছুটা চোখের সঙ্গে মিল এসেছে। কিন্তু সেটা পুরোপুরি শিল্পীর ভাবনা। শিল্পী তাঁর মতো করে ভেবেছেন। তা নিয়ে এতবড় একটা বিতর্ক! ভাবা যায় না।’’
প্রসেনজিতের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল? সোমনাথের জবাব, ‘‘বুম্বা’দার মেক আপ করতে গিয়ে আমার সবচেয়ে ভাল লেগেছিল, তা হল উনি ভীষণ সহযোগিতা করে চলেন। এপ্রিলের প্রবল গরমে শ্যুটিং করেছিলাম আমরা। প্রস্থেটিক মেক আপ করলেও আরও গরম হওয়ার কথা। কিন্তু উনি কখনও কিছু বলেননি। আমাদের কাজ করতে দিয়েছেন। আর ভাল লেগেছিল বুম্বা’দার চোখ। অসম্ভব ধারালো চোখ ওঁর। একটা গভীরতা আছে। নেতাজির ছবির সঙ্গে যদি ওঁর ছবি পাশাপাশি ফেলা হয়, তবে চোখেই অনেকটা মিল পাওয়া যাবে। আমার তো কাজ করতে গিয়ে তা-ই মনে হয়েছে। মনে হয়, পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ও নিশ্চয়ই বিষয়টা লক্ষ্য করেছিলেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy