Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Tapas Paul

ওরা আমার স্বামীকে মেরে ফেলল: নন্দিনী

৫০ হাজার টাকা জমা না করলে তাপসের চিকিৎসাও শুরু করা হবে না বলে নন্দিনীকে জানানো হয় বলে অভিযোগ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২০ ২৩:১০
Share: Save:

ঠিক ১৫ দিন আগেই স্বামীকে হারিয়েছেন তিনি। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি মুম্বইয়ের বান্দ্রার এক হাসপাতালে মারা যান অভিনেতা তথা প্রাক্তন সাংসদ তাপস পাল। বুধবার আনন্দবাজার ডিজিটালকে স্বামীর মৃত্যু প্রসঙ্গে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন তাঁর স্ত্রী নন্দিনী পাল। অভিযোগ করলেন, তাঁর স্বামীকে মেরে ফেলা হয়েছে। তিনি ন্যায়বিচার চান বলেও জানান নন্দিনী।

এই মুহূর্তে মুম্বইয়ে রয়েছেন তাপসের স্ত্রী। এ দিন সেখান থেকে ফোনে তিনি বলেন, “আমার স্বামীকে ওই হাসপাতাল মেরে ফেলেছে। আমি এর ন্যায়বিচার চাইতে মুম্বইয়ে এসেছি।”

নন্দিনীর দাবি, গত ১ ফেব্রুয়ারি অসুস্থ তাপসকে তিনি বান্দ্রার একটি হাসপাতালে ভর্তি করেন। অভিযোগ, তাপসের অসুস্থতার সম্পর্কে বলতে গেলে সেখানকার চিকিৎসক তা শুনতে রাজি হননি। উল্টে বলেন, রোগীর ‘পাস্ট হিস্ট্রি’ শুনতে তিনি উৎসাহী নন। অভিযোগ, অসুস্থ তাপস পালকে দেখে ওই চিকিৎসক নন্দিনীকে প্রশ্ন করেন, “আপনি কেন ওঁকে হাসপাতালে এনেছেন?” এমনকি ৫০ হাজার টাকা জমা না করলে তাপসের চিকিৎসা শুরু করা হবে না বলে হাসপাতালের তরফে জানানো হয় বলে নন্দিনীর অভিযোগ। কিন্তু মাঝরাতে তাঁর কাছে অত টাকা না থাকায় মেয়ের বাড়িওয়ালার সাহায্যে টাকার বন্দোবস্ত করে তাপসকে ভেন্টিলেশনে দিতে হয় বলে দাবি নন্দিনীর!

নন্দিনীর দাবি, ৭ ফেব্রুয়ারি তাপস পালের ভেন্টিলেশন খুলে দেওয়া হয়। তাপস তখন একেবারেই সুস্থ ছিলেন বলে দাবি করে তাঁর স্ত্রী এ দিন বলেন, “আমার দিকে তাকিয়ে ও হাসল। বলল, বাপরে তুমি যা করলে! আমি বলেছিলাম, তুমি একদম ঠিক আছো।”

এর পর থেকেই সমস্যা শুরু হয় বলে অভিযোগ করে নন্দিনী জানান, ঠিকমতো খেতে দেওয়া হত না তাপস পালকে। নার্সরা ক্যাফেটেরিয়া থেকে খাবার এনে খাওয়াতে বলত। এ নিয়ে তাঁর মেয়ের সঙ্গে এক দিন নার্সদের ঝামেলাও হয়ে বলে নন্দিনীর অভিযোগ। তাঁর আরও দাবি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় ফের অসুস্থ হয়ে যান তাপস পাল। আমার সম্মতিতেই ডায়ালিসিস শুরু হয়। নন্দিনী এ দিন বলেন, “হঠাৎ দেখি তাপসকে এক দিন বেঁধে রেখেছে। কেন জানতে চাওয়ায় ওঁরা বলেন, এখন শিফ্টিং চলছে। ওঁকে কারও নজরে রাখা সম্ভব নয়।”

শেষযাত্রায় তাপস পাল।ছবি: পিটিআই।

এ দিন নন্দিনী আরও অভিযোগ করেছেন, তাপস পালের প্রস্রাব স্বাভাবিক হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে ক্যাথিটার পরিয়ে রাখা হয়।

আরও পড়ুন: রিয়্যালিটি শোয়ের শিল্পীরা স্টেজের জন্য না ঝাঁপিয়ে রেওয়াজে মন দিন: কুমার শানু

নন্দিনী জানান, এই পরিস্থিতিতেই তাঁরা ঠিক করেন,১৭ ফেব্রুয়ারি তাপসকে নিয়ে কলকাতায় ফিরবেন। কিন্তু সে দিন রাতেই সব ওলটপালট হয়ে যায় বলে দাবি করেন তিনি। নন্দিনীর দাবি, ওই দিন হাসপাতাল থেকে ফোন করে জানানো হয় তাপস পালের হিমোগ্লোবিন কমে ৩.৫ হয়ে গিয়েছে। তাঁর কথায়, “ওই দিন সকালেই আমি দেখেছি তাপসের হিমোগ্লোবিন ৯। আশ্চর্য রকম ভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওকে রক্ত না দিয়ে আমাদের অনুমতির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এর পর কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট। পর পর। তখনও সিনিয়র কোনও ডাক্তার নেই। এক জন ট্রেনি আর অন্য এক ডাক্তার।”

আরও পড়ুন: বডি শেমিং থেকে নিজেকে বাঁচাতেই কি ওজন কমানো দরকার?

গোটা ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছেন নন্দিনী। তিনি বলেন, “তাপসের সম্পর্কে এত অন্যায়, এত ভুল কথা শুনতে হয়েছে যে, মেয়ে এবং আমি আর পেরে উঠছি না। তবে এই মৃত্যুর বিচার আমি চাইবই। ছাড়ব না।”

নন্দিনীর অভিযোগ নিয়ে হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে হাসপাতালের পিআরও কর্ণ দেলিমা বলেন, “এ বিষয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে যা জানানোর জানাব।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy