সুশান্ত-রিয়া
পুলিশি তদন্তে এখনও পর্যন্ত সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যু আত্মহত্যা বলেই খবর। অন্য দিকে অভিনেতার পরিবারের কেউ েকউ এবং কঙ্গনা রানাউত, শেখর সুমনের মতো কয়েকজন শুরু থেকেই ঘটনাটিকে হত্যা বলে আসছেন। সেই জন্য সিবিআই তদন্তের দাবিও উঠেছিল। তবে মহারাষ্ট্র সরকার সিবিআই তদন্তের পক্ষে রাজি নয়। কিন্তু বিষয়টি যে ক্রমশ জটিল হয়ে উঠছে, তা স্পষ্ট। বিশেষত মঙ্গলবার রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে সুশান্তের বাবা কে কে সিংহ পটনায় এফআইআর দায়ের করার পরে। রিয়া-সহ তাঁর বাবা, মা, ভাই, সুশান্তের বিজ়নেস ম্যানেজার শ্রুতি মোদীর বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে।
সুশান্তের পরিবার রিয়াকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকটি অভিযোগ এবং সন্দেহের জায়গা তুলে ধরেছে— ২০১৯ সালের আগে সুশান্তের কোনও মানসিক সমস্যা ছিল বলে তাঁরা জানতেন না। রিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হওয়ার পরেই কি এই সমস্যা দেখা দিল? রিয়ার ঠিক করে দেওয়া ডাক্তারই সুশান্তের চিকিৎসা করছিলেন, তিনিও ষড়যন্ত্রে শামিল হতে পারেন। অভিনেতার চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্র কেন রিয়া নিজের কাছে রেখেছেন, সে প্রশ্নও তুলেছেন তাঁরা। অভিনেতাকে তাঁর বাড়ির লোকেদের কাছ থেকে দূরে রাখার চেষ্টাও নাকি রিয়া করেছিলেন। রয়েছে আর্থিক তছরুপের অভিযোগও। সুশান্তের একটি অ্যাকাউন্টের ১৭ কোটি টাকা থেকে ১৫ কোটি টাকা অন্য একটি অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার হয়। সেই অ্যাকাউন্টের সঙ্গে সুশান্তের কোনও যোগ নেই। বন্ধু মহেশ শেট্টির (যাঁকে মৃত্যুর দিনও সকালে ফোন করেছিলেন) সঙ্গে কুর্গে অর্গ্যানিক ফার্ম খোলার পরিকল্পনা করেছিলেন অভিনেতা। তাতে আপত্তি জানিয়ে রিয়া নাকি প্রচণ্ড অশান্তি করেন। কিন্তু সুশান্ত নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকায় রিয়া অভিনেতার ল্যাপটপ, চিকিৎসার কাগজপত্র, ক্যাশ ইত্যাদি নিজের বাড়িতে নিয়ে যান। কেন রিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হওয়ার পর থেকে সুশান্তের হাতে ছবির সংখ্যা কমতে থাকে, সে প্রশ্নও তুলেছেন অভিনেতার বাবা।
পটনা পুলিশের একটি দল এসে মুম্বই পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। সুশান্তের মৃত্যুর পর থেকে এ পর্যন্ত চল্লিশজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে মুম্বই পুলিশ। তার মধ্যে আদিত্য চোপড়া, সঞ্জয় লীলা ভন্সালী, শেখর কপূর, মহেশ ভট্টদের মতো প্রভাবশালী ব্যক্তিরাও আছেন। রিয়াকেও একাধিক বার জেরা করা হয়েছে। এফআইআর-এর জবাবে রিয়া বুধবার সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দাখিল করেছেন, সুশান্তের মৃত্যু মামলার তদন্ত যেন মুম্বইয়ে হয়। তাঁর পক্ষে পটনা যাওয়া সম্ভব নয়।
রিয়াকে যে তাঁরা ভাল চোখে দেখছেন না, তা ছেলের মৃত্যুর পরে পরেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন কে কে সিংহ। সম্প্রতি একটি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, গত ফেব্রুয়ারি নাগাদ তাঁরা বান্দ্রা পুলিশকে জানান, সুশান্ত ভুল সঙ্গে পড়েছে। এতে ওর জীবনের ক্ষতি হতে পারে। পাশাপাশি সুশান্তের প্রাক্তন ম্যানেজার দিশা সালিয়ানের মৃত্যুর সঙ্গে যোগ থাকার বিষয়টিও খতিয়ে দেখার অনুরোধ করা হয়েছে অভিনেতার পরিবার থেকে।
বুধবার অঙ্কিতা লোখণ্ডের একটি পোস্ট আলোড়ন তুলেছে। অঙ্কিতা তাঁর ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, ‘ট্রুথ উইনস’। অন্য দিকে এত বড় ঘটনায় কঙ্গনা রানাউত চুপ থাকবেন, এমনটা হয় না। টুইটারে রিয়াকে ‘গোল্ড ডিগার’ বলে উল্লেখ করেছেন কঙ্গনা। তার সঙ্গে মহেশ ভট্ট ও রিয়ার একটি পুরনো ছবি এবং সুশান্তের মৃত্যুর পরে ফারহান আখতারের বাড়িতে রিয়ার যাওয়ার ছবি পোস্ট করেছেন। লিখেছেন, ‘‘ওর কি সুশান্তকে হত্যা করার যথেষ্ট কারণ ছিল? না কি মুভি মাফিয়ারা ওকে ব্যবহার করেছে?’’ কী ভাবে রিয়ার মতো স্ট্রাগলিং অ্যাক্টর সলমন খান, সঞ্জয় দত্তর কেস লড়া আইনজীবীকে বহাল করল, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কঙ্গনা।
সুশান্তের মৃত্যু হত্যা, না কি আত্মহত্যা বা তাঁকে আত্মহত্যার পথে ঠেলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছিল... এমন হাজারো প্রশ্ন অনুরাগীদের মনে। নিরপেক্ষ তদন্তে সত্যিটা প্রমাণ হবে, সেই আশায় ভরসা সকলের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy