পরিচালনা: বিকাশ বহেল
অভিনয়: হৃতিক রোশন, পঙ্কজ ত্রিপাঠী, ম্রুনাল ঠাকুর, বীরেন্দ্র সাকসেনা
‘রাজার ছেলে রাজা হবে’, এই ধারণাকে ভাঙতে চেয়েছিলেন সুপার তিরিশের ঋত্বিক। থুড়ি আনন্দ কুমার। চেয়েছিলেন, তাঁর গ্রামের গরিব ছাত্রেরা আইআইটি টপার হবে। মেধার সামনে হার মানবে পয়সা। তাঁর সফল না হওয়া স্বপ্ন, বাবার স্বপ্ন সবটাই সত্যি হবে তাঁদের মধ্য দিয়ে।
কিন্তু জীবন বড় বালাই। বারবার নাকানিচোবানি খেতে হয়েছে তাই আনন্দ কুমারকে। আর তাঁর চড়াই-উতরাইয়ের গল্পই শোনায় সুপার থার্টি। শোনায়, হেরে যাওয়াদের জেতার আখ্যান। বলে, পারবে তুমিও, যদি লাগাতার চেষ্টা থাকে।
এমন হেরে যাওয়া মেধাবী ছাত্রদের জেতার গল্প এর আগে কম বলা হয়নি বলিউডে। তা হলে সুপার থার্টি কেন দেখবেন? দেখবেন, কারণ আজ আপনার চারপাশে দিকে দিকে গজিয়ে উঠছে বেসরকারি পঠনপাঠনের ব্যবসাকেন্দ্র। এ ছবি সরাসরিআলো ফেলে সেই রাজনীতিতে। এই রাজনীতি নিয়ে আগে কথা হয়নি। বারবার টাকা দিয়ে প্রলোভন দেখানো হয় আনন্দ কুমারকে। এক সময় পাপড় বিক্রেতা আনন্দ সেই প্রলোভনে পা ফেলেওকিন্তু পরে আবার পিছু হটেন। কারণ, তাঁর আদর্শ। তাঁর জেদ। গ্রামের গরিব ছাত্রদের নিয়েই খোলেন পাঠশালা।
আরও পড়ুন, হৃতিকের ‘সুপার থার্টি’র প্রথম রিভিউ দিলেন সুজান!
কেন এ ছবি দেখবেন?
এ ছবি দেখবেন, কারণ, এখানে দেখা যায় পটনার এক মলিন গ্রাম। যেখান থেকে সামান্য লাইব্রেরির বই নিতে গিয়ে কথা শোনেন ঋত্বিক। কেম্ব্রিজে পড়ার সুযোগ পাওয়ার পরেও শুনতে হয় রাজনীতির লোকেদের ভাষণ। টাকার সাহায্যের জন্য ঘুরতে হয় দরজায় দরজায়। প্রেমিকাকে অন্যের বউ হিসেবে দেখতে হয়। কেউ কথা রাখেনা। কেউ কথা রাখেনি। তবু ঘুরে দাঁড়ান জেদি, অনন্য এক অঙ্কের মাস্টারমশাই। ঘুরে দাঁড়ান টাকার সামনে মেধা জিতবে—এই আদর্শে স্থির থেকেই। ঘুরে দাঁড়াতে শেখান তাঁর ছাত্রদের।
‘সুপার থার্টি’ ছবির একটি দৃশ্য।
পরিচালক বিকাশ বেহেলকে ধন্যবাদ দিতে হয় এমন একটা ছবির জন্য। ধন্যবাদ দিতে হয়, ঋত্বিকের আনন্দ কুমারকে প্রাণ দেওয়ার জন্য। গোটা আখ্যান দেখতে দেখতে মন পটনার গ্রামেই চলে যায়। বাইরে তখন ঝড়জল। বাইরে তখন বিশ্বকাপ। কিন্তু মন চায়, বারবার জিতুক আনন্দ কুমার। জিতুক তাঁর ছাত্ররা। জিতে যাক তাঁদের লড়াই। এভাবেই এক সময় ঘুরে দাঁড়ান আনন্দ ও তাঁর ছাত্রেরা।
ছবির সম্পাদনা ভাল লাগে। আবহ নিয়ে কি আর একটু ভাবা যেত না, প্রশ্ন করে মন। অভিনয়, আখ্যান এক কথায় অন্যবদ্য। ভাল লাগেপঙ্কজ ত্রিপাঠি, আদিত্য শ্রীবাস্তবের অভিনয়। সবশেষে এটাও মনে হয়, ছবির সম্পাদনা কি আর একটু করা যেত না? তিন ঘণ্টার বদলে আড়াই ঘণ্টায় আরও টানটান হত এ ছবি। তবু কোথাও এ ছবি মনে থেকে যায়।
আরও পড়ুন, বনি-কৌশানির নতুন ছবি ‘জানবাজ’, মুক্তি পেল ট্রেলার
আনন্দ কুমারের স্ট্রাগল, তাঁর পড়ে যাওয়া, ওঠা হয়ে যায় আমার লড়াই। সেখানেই এ ছবি পিছুডাকে। শেষ হয়েও শেষ হয় না। মনে হয়, এ তো আমার আয়না! সেখানেই বারবার পিছু ডেকে যান আনন্দকুমার। আমার আমি!
আনন্দ কুমার কি সত্য না রূপক? এমন কত চরিত্রই তো রেখে গিয়েছেন মতি নন্দী। এঁকেছেন শীর্ষেন্দু। এ ছবি দেখতে দেখতে মনে পড়ে তাঁদের কথা। এ ছবির চমক এখানেইযে, আখ্যান আর বাস্তবতার মাঝ বরাবর হাঁটে এ ছবি। তাই আনন্দকুমারকে বড় বেশি কাছের মনে হয়। মনে হয়, গল্প নয়, এ ছবি সত্য, ভীষণ রকম সত্য!
( সিনেমার প্রথম ঝলক থেকে টাটকা ফিল্ম সমালোচনা - রুপোলি পর্দার বাছাই করা বাংলা খবর জানতে পড়ুন আমাদের বিনোদনের সব খবর বিভাগ।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy