Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
The Sky Is Pink Movie Review: Priyanka Chopra and Farhan Akhtar

মুভি রিভিউ 'দ্য স্কাই ইজ পিঙ্ক': প্রিয়ঙ্কা লিখলেন গোলাপি আকাশ তৈরির গল্প

আয়েষা কিন্তু এই ছবির অনুঘটক, তাঁর জীবনের ওঠাপড়ার ইমোশনাল জার্নি নিয়েই ছবি। ছবির প্রাণভোমরা লুকিয়ে রয়েছে প্রিয়ঙ্কা চোপড়ার অসাধারণ অভিনয়শৈলীর মধ্যে।

'দ্য স্কাই ইজ পিঙ্ক'।

'দ্য স্কাই ইজ পিঙ্ক'।

বিহঙ্গী বিশ্বাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৯ ১৯:৪৯
Share: Save:

ছবি- দ্য স্কাই ইজ পিঙ্ক

অভিনয়- প্রিয়ঙ্কা চোপড়া, ফারহান আখতার, জাইরা ওয়াসিম, রোহিত শরফ

পরিচালনা- সোনালি বসু

আকাশের রঙ কী ? যদি বলা হয় গোলাপি।গোলমেলে ঠেকছে ? ছবিটা দেখার পর প্রশ্নটাকে আর অদ্ভুতুড়ে মনে হবে না। ছবির নাম ‘দ্য স্কাই ইজ পিঙ্ক’। দর্শকদের মধ্যে প্রত্যাশা ছিল প্রথম থেকেই। এক দিকে প্রিয়ঙ্কা চোপড়ার কামব্যাক সিনেমা, অন্যদিকে জাইরা ওয়াসিমের শেষ ছবি।

আয়েষা চৌধুরী (জাইরা ওয়াসিম) জন্ম থেকেই এমন এক বিরল রোগে আক্রান্ত যে অসুখে রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। অদিতি (প্রিয়ঙ্কা চোপড়া) এবং নীরেন (ফারহান আখতার) ওই একরত্তি মেয়েকে বাঁচিয়ে রাখার তাগিদে টাকা ধার করে লন্ডন নিয়ে আসেন চিকিৎসার জন্য। তার পর সে এক লম্বা লড়াই। মেয়েকে বাঁচানোর লড়াই, বেঁচে থাকার লড়াই। হয় কেমোথেরাপি নয় বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট, ছোট্ট আয়েষাকে বাঁচানোর এই দু’ই উপায়। ডোনার ম্যাচ না হওয়ায় অগত্যা আয়েষাকে বাঁচাতে বাবা-মা বেছে নেন কেমোথেরাপিকেই। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ভয়ানক,জানতেন ওঁরা। মেয়েটা তো প্রাণে বাঁচুক আগে। সেই মতোই আয়েষার চিকিৎসা শুরু হয় লন্ডনের নামী হাসপাতালে। দিল্লির চাঁদনী চকের যে ছেলেটা (ফারহান আখতার) বাবা মায়ের সঙ্গে গার্লফ্রেন্ডের পরিচয় করিয়ে দিতেই ভয়ে কুঁকড়ে যেত, পরিস্থিতির চাপে সেও অচেনা, অজানা দেশে মেয়েকে বাঁচানোর তাগিদে হঠাৎ করেই কেমন যেন ‘বড়’ হয়ে ওঠে, বা বলা ভাল ‘বাবা’ হয়ে ওঠে। আর অদিতি যেন সাক্ষাৎ দশভুজা। নীরেন আয়ের জন্য ভারত ফিরে গেলেও সম্পূর্ণ নিজের হাতে অসুস্থ মেয়ের যাবতীয় দায়-দায়িত্ব সামলায় সে। অফুরান প্রাণশক্তি, একরাশ সজীবতায় মাখা অদিতি (প্রিয়ঙ্কা চোপড়া) যেন এক মুঠো দমকা হাওয়া, যার জন্মই হয়েছে হার না মানার জন্য।

যে মেয়ের জন্মের এক বছরের মধ্যেই মারা যাওয়ার কথা ছিল সে ক্রমে ১৪টা বসন্ত পার করে দেয় বাবা-মার অদম্য মনের জোর, নিজের বেঁচে থাকার অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর সাহসের উপর ভর করে। দেশে ফিরে আসেন তাঁরা। আবারও ঝড় ওঠে চৌধুরী পরিবারে। সে ঝড় যে থামবার নয় তা গল্পের শুরুতেই আয়েষা বলেই দিয়েছিল। হ্যাঁ, গোটা ছবিটাই আয়েষা অর্থাৎ জাইরার ভয়েস ওভারের উপর ভর করে চলে।

ফারহান আখতার এবং প্রিয়ঙ্কা চোপড়া

আয়েষা কিন্তু এই ছবির অনুঘটক, তাঁর জীবনের ওঠাপড়ার ইমোশনাল জার্নি নিয়েই ছবি। ছবির প্রাণভোমরা লুকিয়ে রয়েছে প্রিয়ঙ্কা চোপড়ার অসাধারণ অভিনয়শৈলীর মধ্যে। মেয়ের জন্য জীবন বাজি রাখতে পারে সে, লড়তে পারে গোটা দুনিয়ার সঙ্গে। কিন্তু পাশাপাশি সে জানে যে আয়েষা আর বেশিদিন নেই। মন শক্ত করে নিজেকে বোঝায়, বোঝায় বাকিদেরও। ফারহান আখতারও যোগ্য সঙ্গত দিয়েছেন। তবে আলাদা করে বলতে হয় জাইরা ওয়াসিমের কথা। নিজের ‘ইমান’-এর জন্য তিনি অভিনয় ছেড়েছেন, পাশাপাশি বলিউড হারিয়েছে এক দক্ষ অভিনেত্রীকেও। সাবলীল অভিনয়, বডি ল্যাঙ্গুয়েজ। ছবির বেশ কিছু মুহূর্ত আপনাকে কাঁদাবে। আপনার গলার কাছে কষ্ট এসে আটকে যাবে। কিন্তু পরমুহূর্তেই তুখোড় সংলাপ সেই গুরুগম্ভীর ভাবকেও অনেকটাই হালকা করে দেবে। মৃত্যু বা অসুস্থতাকে কতটা স্বাভাবিক ভাবে যে দেখানো যায় তা এই ছবি প্রমাণ করে দিয়েছে। ‘দ্য স্কাই ইজ পিঙ্ক’ নতুন করে বাঁচার গল্প, হার না মানার গল্প, আমার আপনার পরিবারের গল্প। আয়েষার দাদার চরিত্রে রোহিত শরফও মন্দ নন। দাদা-বোনের মিষ্টি রসায়ন দাগ কাটবে নিঃসন্দেহে। বোন দাদাকে ডাকে ‘জিরাফ’ বলে।

আরও পড়ুন- মুভি রিভিউ ‘ওয়ার’: অ্যাকশনে ভরপুর, তবু স্টোরিলাইন জমল না

পরিচালক সোনালি বসু। তাঁর ‘মার্গারিটা উইদ আ স্ট্র’ সমালোচকদের কাছে বাহবা কুড়িয়েছিল বেশ। তাই প্রত্যাশাও তৈরি হয়েছিল বেশ খানিকটা। না, নিরাশ করেননি তিনি। দক্ষতায় বুনেছেন প্লট, সাজিয়েছেন স্টোরি লাইন। গানের বাড়াবাড়ি নেই ছবিতে। গুলজারের লেখা ‘পিঙ্ক গুলাবি’ শুনতে বেশ ভাল লাগে। দৃশ্যায়নও চমৎকার। তবে কী দ্য স্কাই ইজ পিঙ্ক পুরোটাই ফ্ললেস? না, তেমনটা নয়। এ ছবির গল্প বলার জন্য আড়াই ঘণ্টা অনেকটা বেশি সময়। আবার প্রিয়ঙ্কার চরিত্রকে যেখানে বছর পঞ্চাশের বলা হয়েছে সেখানে তাঁকে মেরে কেটে বছর পঁয়ত্রিশের দেখাচ্ছে। তাঁর একটি উনিশ বছরের মেয়ে রয়েছে, মাঝে মাঝে মেনে নিতে বেশ অসুবিধা হয়েছে।

তবে তা বাদ দিয়ে দ্য স্কাই ইজ পিঙ্ক এমন এক ছবি, যা দেখে হল থেকে বেরোনোর পরেও রেশ থেকে যাবে। ভাল লাগা এবং খারাপ লাগা দুই নিয়েই আপনি বাড়ি ফিরবেন। প্রত্যেকের একটি নিজস্ব আকাশ রয়েছে। নাই বা হল তার রঙ নীল, গোলাপি হলেই বা মন্দ কী?

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy