বর্ণ পরিচয়
পরিচালনা: মৈনাক ভৌমিক
অভিনয়: আবীর, যিশু, প্রিয়ঙ্কা
৫/১০
একই ছবিতে যিশু সেনগুপ্তের বিপরীতে আবীর চট্টোপাধ্যায়কে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন পরিচালক মৈনাক ভৌমিক। প্রথম জন ক্রাইম ব্রাঞ্চের দক্ষ অফিসার। দ্বিতীয় জন সিরিয়াল কিলার। বঙ্গতনয়াদের জন্য টু মাচ অব ভিস্যুয়াল ডিলাইট! তবে পরিচালকের প্রথম থ্রিলার দেখে ততটাও আমোদ হল না।
ছবির প্রধান দুই স্তম্ভ ধনঞ্জয় (যিশু) ও অর্কর (আবীর) চরিত্র দেখতে দেখতে বার বার মনে পড়ে যায় হিট সিরিজ় ‘ব্রিদ’-এর অনুষঙ্গ। পেশাদার ও ব্যক্তি জীবনের ধাক্কায় অ্যালকোহলে ডুবে থাকে ধনঞ্জয়। ‘ব্রিদ’-এর কবীরের মতো। তা ছাড়া শহুরে ছবি ও সিরিজ়ে এই ধরনের চরিত্র ইতিমধ্যে স্টক ক্যারেক্টারে পরিণত হয়েছে। অন্য দিকে সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর মৃত্যুর পরে সুস্থ বিচারবুদ্ধি হারিয়েছে অর্ক। প্রতিশোধ স্পৃহায় সে একের পর এক খুন করে। ‘ব্রিদ’-এর ড্যানির সঙ্গে অর্কর তফাত রয়েছে। আবার খানিক মিলও আছে। দু’জনেই পরিস্থিতির শিকার।
ওই সিরিজ়ের আরও একটি পরত ছিল, থ্রিলারের আড়ালে বাবা ও সন্তানের সম্পর্কের চোরাস্রোত। ছবিতে ‘সুপারহিরো বাবার’ ইমেজ বাঁচানোর জন্য পেশাদার জীবনে ফিরে আসে ধনঞ্জয়। অর্কর মানসিক অস্থিরতার আরও একটি কারণ, তার সন্তানের অকাল মৃত্যু। মৈনাক এই সিরিজ় দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছেন, সেটা বলা উদ্দেশ্য নয়। তবে সাম্প্রতিক একটি সিরিজ়ের সঙ্গে ছবির এত সাযুজ্য চোখে লাগে।
অর্কর সঙ্গে ধনঞ্জয়ের প্রথম মুখোমুখি হওয়ার দৃশ্যটি ছাড়া আর কোনও দৃশ্যে থ্রিল নেই। ধনঞ্জয় একাই ধাঁধা সমাধান করে। আর তার বস শুধু তাকে বাহবা দেয়। কলকাতা পুলিশের এমন চরিত্র আর কত বার বাংলা ছবি দেখাবে? পঞ্চভূতের উল্লেখ শুনতে শুনতে মনে হয়, ছবির নামও ‘পঞ্চভূত’ হতে পারত। এমনিতেও ছবির নামের তাৎপর্য ছবি জুড়ে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা হলেও সেটা আরোপিত ঠেকে। ড্যান ব্রাউন পড়া ও থ্রিলার দেখা বাঙালি দর্শক এই রেফারেন্সের সঙ্গেও ভাল পরিচিত।
অভিনেতা যিশু ও আবীরের সঙ্গেও সিনেপ্রেমীদের পরিচয় অনেক দিনের। তাঁরা দু’জনেই ছবিতে চরিত্র হয়ে উঠেছেন। বিশেষত, আবীরের চরিত্রটির সঙ্গে ‘ভিঞ্চিদা’র আদি বোসের (ঋত্বিক চক্রবর্তী) তুলনা চলেই আসে। তবে সে কাজ দর্শকের জন্য তোলা থাক। ছোট চরিত্রে প্রিয়ঙ্কা সরকার ভাল। পুলিশের চরিত্রে সুদীপ মুখোপাধ্যায়, প্রান্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়ও মন্দ নন।
অনুপম রায়ের সঙ্গীত ভাল লাগে। তবে থ্রিলারে গান না থাকলেও ক্ষতি ছিল না। ছবির মূল সমস্যা, তার গল্প ও প্লটের লেখনী। ছবিতে এমন কিছু নেই, যা দর্শক আগে দেখেননি। যে খুনিকে ধরতে সাত বছর সময় লাগে পুলিশের, ধরা পড়ার আগের খুনে সে এত কাঁচা হাতের কাজ করে কেন? ছবির শেষ দৃশ্য অতিনাটকীয়। অর্কর মুখে ‘আকাশ’ শব্দটি শুনে দর্শক বুঝে যান, তার পরিণতি কী হতে চলেছে। অথচ অফিসার ধনঞ্জয়ের তা স্ট্রাইক করে না!
রোম্যান্টিক কমেডি, ইমোশনাল ড্রামা মৈনাকের চেনা ঘরানা। কিন্তু থ্রিলহীন থ্রিলারে এত বেশি ভাবনার সুযোগ করে দিলেন যে, চরিত্রের চেয়ে দর্শকই বেশি স্মার্ট প্রমাণিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy