আরজি কর-কাণ্ডের তদন্ত নিয়ে মত জানালেন কাঞ্চন মল্লিক, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, রূপাঞ্জনা মিত্র, রুদ্রনীল ঘোষ। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনে সঞ্জয়কে শনিবার দোষী সাব্যস্ত করেছিল শিয়ালদহ কোর্ট। সোমবার আমৃত্যু কারাদণ্ড শুনিয়েছেন বিচারক অনির্বাণ দাস।
আরজি কর কলেজ ও হাসপাতালে কর্মরত অবস্থায় ধর্ষণ ও খুন হন তরুণী চিকিৎসক। প্রতিবাদে ১৪ অগস্ট থেকে সাধারণ মানুষের সঙ্গে পথে নেমেছিলেন খ্যাতনামীরাও। বিনোদন এবং শিল্প-সংস্কৃতির আঙিনার তারকারা দফায় দফায় প্রতিবাদ জানান। অভিযুক্ত (অভিযুক্তদের) কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তি চেয়েছিলেন প্রত্যেকে।
অবশেষে পাঁচ মাস পরে রায়দান। আদালতের রায় নিয়ে কী মত? প্রশ্ন রেখেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। জবাব দিয়েছেন কাঞ্চন মল্লিক, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, রুদ্রনীল ঘোষ, রূপাঞ্জনা মিত্র। কী বলছেন তাঁরা?
চার জনেই কয়েকটি বিষয়ে সহমত। এক, আদালতের রায়কে বিশ্লেষণ করার ধৃষ্টতা তাঁরা দেখাবেন না। দুই, অবশেষে অভিযুক্তের শাস্তি হয়েছে। তিন, বিচারব্যবস্থার উপরে এখনও আস্থা রাখছেন তাঁরা। তাকিয়ে রয়েছেন উচ্চ এবং শীর্ষ আদালতের দিকে। চার, দোষীর বিচার ও শাস্তি আগামীতে অপরাধ করার আগে দু’বার ভাবতে বাধ্য করবে।
কাঞ্চনের কথায়, “আমরা দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছিলাম। আমৃত্যু কারাদণ্ড শুনিয়েছে আদালত। এই শাস্তি আগামীতে অপরাধ করার আগে ভাবাবে।” তাঁর মতে, আদালতের রায়ের উপরে আর কিছু বলার থাকে না। প্রায় একই কথা বলেছেন পরমব্রতও। তাঁর মতে, “সমস্ত রকম তদন্তের ফলাফল, সঞ্জয় রায় দোষী। আদালতের নির্দেশ, তাই এটাই সকলকে মানতে হবে।” পরিচালক-অভিনেতা আশ্বস্ত এই ভেবে, অন্তত একটা বিচার তো হল! পাশাপাশি এ-ও জানিয়েছেন, সরকারি হাসপাতালে কী করে একজন কর্মরতা চিকিৎসক এমন নৃশংস ভাবে খুন হতে পারেন, সেটাও বিচার্য বিষয়। আগামীতে আর কখনও যাতে এমন ঘটনা না ঘটে, সে দিকেও নজর রাখতে হবে।
রুদ্রনীল বরাবর স্পষ্টবক্তা হিসাবে চর্চিত। এ বারেও স্বল্প ভাষণে আদালতের রায় নিয়ে নিজের মতামত জানাতে দ্বিধা করেননি। তিনি যে এই রায়ে খুশি নন, তাঁর বক্তব্যে তা স্পষ্ট। অভিনেতা-রাজনীতিবিদ পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন, “এমন ঘৃণ্য অপরাধীকে বিচারক কেন বাঁচিয়ে রাখতে চাইলেন? এখন এটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।” তাঁর দ্বিতীয় জিজ্ঞাসা, “তা হলে বাকিরা কোথায় গেল! কারা জড়িয়েছিল, কারা তথ্যপ্রমাণ লোপাট করেছিল, বাকি ৫০ জনের যে মতামত নেওয়া হয়েছিল— সে সব আদালতে কিছুই উঠল না।” রুদ্রনীলের অনুমান, মৃত্যুদণ্ড দিলে অপরাধী হয়তো ভয়ে মুখ খুলে দিতেন। সেই কারণেই কি আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়ে তাঁকে বাঁচিয়ে রাখা হল?
রূপাঞ্জনার সাফ কথা, “মনে হচ্ছিল, এই রায়ই দেবে আদালত। এর আগেও এই ধরনের একাধিক মামলায় আদালত দোষীদের আমৃত্যু কারাবাস দিয়েছে।” পাশাপাশি জানিয়েছেন, এই পদক্ষেপকে তিনি আন্দোলনের জয় হিসাবেই দেখতে চাইছেন। রূপাঞ্জনার মতে, এই মুহূর্তে বিচারব্যবস্থার যা অবস্থা তাতে আদালতের রায় যেন আশার আলো। কোনও কিছু না হওয়ার চেয়ে কিছু তো হল! কলকাতা সেই নজির গড়ল, এতেই খুশি তিনি।
“জেলে আমৃত্যু জীবন কাটানো খুব সহজ কথা নয়। অনেক দাগী আসামীও শুধরে যায়। সঞ্জয়ও হয়তো সেটাই হবে”, যোগ করলেন কাঞ্চন। বিষয়টি এখানেই শেষ নয়, এমনই মত রুদ্রনীলের। তিনি এ বার উচ্চ আদালতের রায়ের দিকে তাকিয়ে। আশা, সেখানে হয়তো সমস্ত বিষয়টির চুলচেরা বিশ্লেষণ হবে। সপাট বলেন, “এই রায়ে কেউ খুশি নন, আমিও না।” পরমব্রতের বক্তব্য, তিনি বরাবর দোষীদের কড়া শাস্তি চেয়েছেন। এমন কিছু শাস্তি, যা আগামী দিনে অপরাধীদের মনে ভয়ের সঞ্চার করবে। তবে এই শাস্তি কতটা ভয়ানক, সে বিষয়ে তাঁর কোনও বক্তব্য নেই।
মতামত জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগের চেষ্টা করেছিল শাসকদলের বিধায়ক-পরিচালক রাজ চক্রবর্তী, লাভলি মৈত্র, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। তাঁরা বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy