Minissha Lamba Lost Her Fame and Stardom Very Soon in Bollywood dgtl
bollywood
দাম্পত্যে বিচ্ছেদ, জাতীয় পুরস্কারজয়ী ছবির ব্যর্থ নায়িকা আজ সফল অন্য পেশায়
ইন্ডাস্ট্রিতে অভিনয়ের সুযোগ মিনিষার কাছে আসা বন্ধ করেনি। কিন্তু প্রায় সব ছবিতেই তিনি হয়ে যাচ্ছিলেন ‘পাশের বাড়ির মেয়ে’। গ্ল্যামারাস নায়িকার ভূমিকায় তাঁর কথা ভাবছিলেন না পরিচালক-প্রযোজকরা।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০২০ ০৯:৩০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২৫
বহিরাগত হিসেবে এসেও নিজের জায়গা করে নিয়েছিলেন বলিউডে। প্রায় দেড় দশকের কেরিয়ারে কাজ করেছেন কুড়িটি ছবিতে। তার মধ্যে আছেন বড় পরিচালকরাও। কিন্তু এর পরেও বলিউড থেকে হারিয়ে গিয়েছেন মিনিষা লাম্বা।
০২২৫
বাবার ব্যবসার সূত্রে ভারতের বিভিন্ন শহরে কেটেছে মিনিষার শৈশব। ১৯৮৫ সালের ১৮ জানুয়ারি তাঁর জন্ম দিল্লিতে। এর পর শ্রীনগরের পাশাপাশি তিনি চেন্নাইয়েও ছিলেন বেশ কিছু বছর। পড়াশোনা করেছেন দেশের বিভিন্ন স্কুলে। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের মিরান্ডা হাউস কলেজ থেকে তিনি স্নাতক হন।
০৩২৫
চেন্নাইয়ে শৈশব কাটানোর সময় শিশুশিল্পী হিসেবে মিনিষার কাছে অভিনয়ের প্রস্তাব এসেছিল। কিন্তু সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তখন অভিনেত্রী হওয়ার কোনও ইচ্ছে ছিল না মিনিষার।
০৪২৫
মডেলিং বা অভিনয়ের ইচ্ছে মনে জাগে কলেজজীবনে। দিল্লির মিরান্ডা হাউস থেকে অনেকেই এসেছেন বলিউডে। কলেজেই হাতখরচের জন্য মডেলিং করতে শুরু করেন মিনিষা।
০৫২৫
ক্যাডবেরির বিজ্ঞাপনে তাঁকে দেখে পছন্দ হয় পরিচালক সুজিত সরকারের। তিনি তাঁকে ‘ইহাঁ’ ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ দেন। বিজ্ঞাপনটি তৈরি করছিলেন সুজিত-ই। তাঁর হাত ধরেই মডেল থেকে নায়িকা হন মিনিষা।
০৬২৫
‘ইহাঁ’ ছিল সুজিতের প্রথম ছবি। এই ছবিতে মিনিষার বিপরীতে নায়ক ছিলেন জিমি শেরগিল। তারকাদের তুলনায় নবাগত বা স্বল্প পরিচিত মুখদের নিয়েই ছবি করতে চেয়েছিলেন সুজিত। ছবির গান জনপ্রিয় হয়। নায়িকা হিসেবে নজর কাড়েন মিনিষাও।
০৭২৫
মিনিষা চেয়েছিলেন শুধু বড় পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করতে। এর পর তিনি মধুর ভান্ডারকরের ‘কর্পোরেট’ ছবিতে অভিনয় করেন। পরিচালক এবং চিত্রনাট্যের খাতিরে ছোট চরিত্রেও অভিনয় করতে রাজি হয়ে যান মিনিষা।
০৮২৫
এর পর ‘রকি’, ‘হনিমুন ট্রাভেলস প্রাইভেট লিমিটেড’, ‘অনামিকা’, ‘শৌর্য’, ‘দশ কহানিয়াঁ’-সহ বেশ কিছু ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই একক নায়িকার বদলে তিনি ছিলেন তারকাখচিত ছবির এক জন অভিনেত্রী।
০৯২৫
তাঁর কেরিয়ারে সবথেকে উল্লেখযোগ্য ছবি ‘বচনা অ্যায় হসীনোঁ’ মুক্তি পেয়েছিল ২০০৮-এ। রণবীর কপূর, বিপাশা বসু, দীপিকা পাড়ুকোনের সঙ্গে এই ছবিতে তিনি স্ক্রিন শেয়ার করেছিলেন।
১০২৫
ইন্ডাস্ট্রিতে অভিনয়ের সুযোগ মিনিষার কাছে আসা বন্ধ করেনি। কিন্তু প্রায় সব ছবিতেই তিনি হয়ে যাচ্ছিলেন ‘পাশের বাড়ির মেয়ে’। গ্ল্যামারাস নায়িকার ভূমিকায় তাঁর কথা ভাবছিলেন না পরিচালক-প্রযোজকরা।
১১২৫
মিনিষা ঠিক করেন নিজের লুক পরিবর্তন করবেন। তিনি প্লাস্টিক সার্জারি করে নাকের আকার পরিবর্তন করেন। পরের ছবি ‘কিডন্যাপ’-এ তিনি ধরা দেন বিকিনি-অবতারে। কিন্তু সাহসী সাজে তাঁকে নেয়নি দর্শক। প্রশংসার বদলে মিনিষা সমালোচিত হন তাঁর প্লাস্টিক সার্জারি নিয়ে।
১২২৫
অনুরাগীদের বক্তব্য ছিল, মিনিষার নাকের অস্ত্রোপচার ঠিকমতো করা হয়নি। ফলে তাঁর সৌন্দর্য বৃদ্ধির পরিবর্তে কমে গিয়েছে। এর পর মিনিষা তাঁর নাকে আবার অস্ত্রোপচার করান। কিন্তু ভক্তমহলে আগের জনপ্রিয়তা আর ফিরে পাননি।
১৩২৫
বাণিজ্যিক ধারার ছবিতে ক্রমে সুযোগ কমতে থাকে মিনিষার। তিনি ঠিক করেন এ বার শুধু সমান্তরাল ধারার ছবিতেই অভিনয় করবেন। শ্যাম বেনেগালের পরিচালনায় তিনি অভিনয় করলেন ‘ওয়েলডান আব্বা’-য়। সামাজিক সমস্যার উপর তৈরি এই ছবি জাতীয় পুরস্কার জয়ী হয়। এর পর তিনি কাজ করেন ‘ভেজা ফ্রাই টু’ ছবিতে।
১৪২৫
কিন্তু বড় ব্যানারের ছবিতে গ্ল্যামারাস নায়িকার ভূমিকায় অভিনয়ের সুযোগ ক্রমশ দূরেই সরে যাচ্ছিল তাঁর কাছ থেকে। এই সময় তাঁর ব্যক্তিগত জীবনও বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। তিনি কান চলচ্চিত্র উৎসবে গিয়েছিলেন উডি অ্যালেনের ছবি ‘মিডনাইট ইন প্যারিস’-এর প্রিমিয়ার উপলক্ষে।
১৫২৫
দেশে ফেরার সময় বিমানবন্দরে বিপাকে পড়েন মিনিষা। তাঁর কাছে ৫০ লাখ টাকার বেশি মূল্যের হিরে পাওয়া গিয়েছিল। যার কোনও বৈধ কাগজপত্র বা নথি পাওয়া যায়নি মিনিষার কাছে। ফলে টানা ষোলো ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পরে মিনিষা রেহাই পান।
১৬২৫
কেরিয়ারে ভগ্নদশা হলেও নিজের পারিশ্রমিক নিয়ে কোনও আপস করতেন না মিনিষা। ২০১১ সালে একটি ছবিতে মিনিষাকে অভিনয়ের অফার দেওয়া হয়। ‘মিলে না মিলে হম’ নামে সেই ছবি তৈরি করা হয়েছিল রামবিলাস পাসওয়ানের ছেলে চিরাগ পাসওয়ানকে ইন্ডাস্ট্রিতে লঞ্চ করার জন্য।
১৭২৫
কিন্তু মিনিষার সঙ্গে পারিশ্রমিক নিয়ে রফা করতে পারেননি নির্মাতারা। শেষ অবধি তাঁকে বাদ দিয়ে নেওয়া হয় কঙ্গনা রানাউতকে। যদিও ছবিটি শেষ অবধি চূড়ান্ত ব্যর্থ হয়।
১৮২৫
এর পর ‘হাম তুম শাবানা’, ‘জোকার’, ‘জিলা গাজিয়াবাদ’-এর মতো ছবিতে মিনিষা অভিনয় করেন। কিন্তু তাঁর কেরিয়ারের মতো এই ছবিগুলিও মুখ থুবড়ে পড়ে বক্স অফিসে।
১৯২৫
কেরিয়ারকে উদ্দীপ্ত করার জন্য ২০১৪ সালে মরিয়া চেষ্টা করেন মিনিষা। যোগ দেন বিগ বস-এ। সেখানে শোনা যায়, রাজ বব্বরের ছেলে আর্যর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক আছে। যদিও পরে এই সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেন মিনিষা।
২০২৫
অভিনেত্রীর দাবি ছিল, শো-এ তাঁদের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর জন্যই এই কথাগুলি বলা হয়েছিল। এর কোনও প্রকৃত ভিত্তি নেই। সে সময় আর্য এবং মিনিষার জুটিতে একটি পঞ্জাবি ছবি মুক্তি পেয়েছিল। নাম, ‘হীর অ্যান্ড হিরো’।
২১২৫
২০১৫ সালে মিনিষা বিয়ে করেন মুম্বইয়ের একটি নাইটক্লাবের মালিক রায়ানকে। রায়ান আবার অভিনেত্রী পূজা বেদীর আত্মীয়। বিয়ের পরে অভিনয় থেকে দূরে সরে যান মিনিষা। ‘ভূমি’-সহ কিছু ছবিতে তাঁকে দেখা গিয়েছিল পার্শ্বচরিত্রে।
২২২৫
রায়ান-মিনিষার পাঁচ বছরের দাম্পত্য সম্প্রতি ভেঙে গিয়েছে। এক সাক্ষাৎকারে মিনিষা জানিয়েছেন, যে তাঁরা যৌথ ভাবেই বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং তার আইনি প্রক্রিয়াও সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে।
২৩২৫
মিনিষা এখন প্রতিষ্ঠিত পোকার খেলোয়াড়। বিদেশের মতো দেশের বেশ কিছু পোকার টুর্নামেন্টেও অংশ নিয়েছেন। ইন্ডিয়ান পোকার টুর্নামেন্টে তিনি ছিলেন চতুর্থ স্থানে। ২০১৭ সালে লাস ভেগাসে প্রথম অংশ নেন পোকার-এর আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে। গত বছর সেই টুর্নামেন্টেই পেয়েছেন ৬৪ নম্বর স্থান।
২৪২৫
পোকার খেলার অর্থকরী দিকটিও বেশ লাগে মিনিষার। মনে হয়, সঙ্গে হাজির আস্ত একটা এটিএম। বা এ যেন বাবা মায়ের কাছ থেকে পকেটমানি পাওয়ার মতো কোনও বিষয়। পোকার-কে জুয়া বলতে নারাজ মিনিশা। তাঁর কাছে এটা ট্রেডিং বা প্লেয়িং স্পোর্টস। প্রত্যেক খেলাতেই খেলোয়াড়ের ভাল খারাপ দিন আছে। পোকারে খারাপ দিন হলে খেলোয়াড় নিজেই নিজের সবথেকে বড় শত্রু, মনে করেন মিনিশা।
২৫২৫
তবে নেশার জন্য অভিনয়ে সমস্যা হবে না বলেই মনে করেন মিনিষা। পছন্দসই রোল পেলে পোকার ভুলে অভিনয়ই হবে প্রথম পছন্দ, জানাতে ভোলেননি সুন্দরী।