প্রতীকী ছবি।
লাইট, সাউন্ড, অ্যাকশন... শব্দগুলো গুমরে ছিল এত দিন। আর কেবল কিছু দিনের অপেক্ষা! কিন্তু অন্তহীন অপেক্ষার শেষে হাসি ফুটবে কি সকলের মুখে! সিরিয়ালের শুটিং শুরুর নির্দেশিকায় পরিষ্কার বলা হয়েছে, ৩৫ জনের বেশি রাখা যাবে না ইউনিটে। এই নির্দেশিকা মেনে শুটিং শুরু হলে কোনও ভাবেই দরজা খুলবে না জুনিয়র আর্টিস্টদের জন্য। সঙ্গে পার্শ্বচরিত্রের শিল্পীরাও কোপে পড়বেন বলে আশঙ্কায় রয়েছেন। আগামী তিন-চার মাসের আগে এই অবস্থার কোনও উন্নতি হবে না বলেই টেলি মহলে গুঞ্জন।
সিরিয়ালে জুনিয়র শিল্পীদের প্রয়োজন পড়ে ভিড় বাড়াতে। যেমন, বিয়ে, মেলা, হাসপাতাল, গ্রাম-শহর রাস্তাঘাটের লোকজন দেখাতেই এদের প্রয়োজন। কিন্তু করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে শুটিংয়ে এই সব দৃশ্যের কাটছাঁট করা হবে বলেই জানালেন সুরিন্দর ফিল্মসের প্রযোজক নিসপাল সিংহ। তিনি বললেন, ‘‘রিয়্যালিস্টিক শুটিং করতে হবে। এখন অনেক বিয়েই ১০-১২ জন অতিথি নিয়ে সারা হয়, সিরিয়ালেও তা চালু হতে চলেছে।’’
সুতরাং, কাজ হারাতে পারেন অনেক জুনিয়র আর্টিস্টই। সহমত আর্টিস্ট ফোরামের কার্যকরী সভাপতি শঙ্কর চক্রবর্তী, ‘‘শুটিংয়ে নিজেদের সুরক্ষিত রাখা সবচেয়ে বড় কথা। এবার আলোচনা হবে, পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে, সবটাই চেনের মতো জড়িয়ে।’’
উত্তরণের পথ হিসেবে শিল্পী ও টেকনিশিয়ানদের মিলিয়ে মিশিয়ে কাজ করাতে চাইছেন প্রযোজক সুশান্ত দাস। ‘‘নিয়ম মেনে কাজ, সঙ্গে দর্শকের চাহিদা, গল্প বলার নতুন পদ্ধতি আয়ত্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে আমার ত্রিয়েটিভ টিম,’’ জানালেন ‘কৃষ্ণকলি’, ‘আলোছায়া’ ধারাবাহিকের প্রযোজক ।
লকডাউনের আগে ফ্লোরে মোটামুটি ৪০-৪২ জন টেকনিশিয়ানদের সাহায্য নিয়েই চলত এক-একটি ধারাবাহিকের শুটিং। তারপর চিত্রনাট্যের প্রয়োজন মতো শিল্পীর দল। শুটিংয়ের নির্দেশিকা মেনে এখন ফ্লোরে চার–পাঁচজনের বেশি শিল্পী না রাখার ভাবনাচিন্তা হচ্ছে বলেই খবর। ‘‘শুটিং শুরু হচ্ছে, এটা ভাল খবর। কিন্তু অনিশ্চয়তার মধ্যেই আমাকে থাকতে হচ্ছে। উপায় যখন আমার হাতে নেই, তার জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত থাকতেই হবে,’’ পজ়িটিভ অভিনেতা শুভ্রজিৎ দত্ত। এই পার্শ্বচরিত্রের শিল্পীরা বেশিরভাগ কাজ করেন, দৈনিক পারিশ্রমিকের ভিত্তিতে। কাজ ভাগ করলে সেখানে নিজের ট্র্যাক কতটা বজায় থাকবে, চিন্তান্বিত অভিনেতা দ্বৈপায়ন দাস।
কিছুটা স্বস্তির কথা শোনালেন আকাশ আট চ্যানেলের মুখপাত্র, ‘‘গল্পের ট্র্যাক কম-বেশি করার মতো সিদ্ধান্ত নিতে দেরি আছে।’’ তাতেও আগামী দু’ তিন-মাসের ধূসর ছবি দৈনিক পারিশ্রমিকের ভিত্তিতে কাজ করা পার্শ্বচরিত্রের শিল্পীদের কাছে বেশ স্পষ্ট।
আবার বর্ষীয়ান শিল্পীদেরও এই মুহূর্তে নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে না বলেই খবর। ছোট পর্দার বেশ কয়েকটি ধারাবাহিকে অভিনয় করেন ইন্ডাস্ট্রির বর্ষীয়ান শিল্পীরা। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে বয়স্কদের বাড়িতে থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কী করবেন, তাঁদের কথা কী ভাবা হয়েছে? ‘শ্রীময়ী’তে নায়িকার শাশুড়ির চরিত্রে অভিনয় করেন চিত্রা সেন। তিনি জানালেন, ‘‘অসুবিধের মধ্যেই আছি।
রোজগার তো অভিনয় থেকেই আসে। কিন্তু বয়সজনিত কারণে সুরক্ষার কথা ভেবেই শুটিংয়ে যাওয়া ঝুঁকির।’’
সুরক্ষাবিধি-সহ নানা বিষয় নিয়ে আগামিকাল ইমপা, ফেডারেশন অব সিনে টেকনিশিয়ানস অ্যান্ড ওয়র্কার্স অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া, আর্টিস্ট ফোরাম ও বাংলা বিনোদন চ্যানেলের প্রতিনিধিদের নেওয়া সিদ্ধান্ত সরকারের কাছে পেশ করা হবে। ৪ জুন হবে বৈঠক। সেই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে সকলেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy