চুনি-পান্না ধারাবাহিকের একটি দৃশ্য।
পান্নার অনেক দিনের শখ, একটা হোম ডেলিভারির ব্যবসা করবে। সে রাঁধতে ভালবাসত। রকমারি রাঁধতেও পারত। কিন্তু, স্বামী পাত্তা দিলে তো!
বেঁচে থাকতে কতবার আবদার জানিয়েছিল স্বামীকে। স্বামীর এক স্তোকবাক্য, ওসব নাকি পান্না পারবে না। এত কাজ, হিসেব রাখা কি মেয়েমানুষের কাজ? অবশেষে চুনি সেই শখ মেটাচ্ছে। পান্নাকে তার হোম ডেলিভারির পার্টনার বানিয়েছে। ফলও হাতেনাতে পেয়েছে। একদিনে লাভ ১৮ হাজার টাকা!
দাঁড়ান দাঁড়ান, ব্যবসায় ভূত আর মানুষের পার্টনারশিপের কথা শুনে ব্যোমকে গেলেন?
যে হারে করোনায় লোক চলে যাচ্ছে, তাতে আর কিছুদিনের মধ্যে ভূত আর মানুষের সহাবস্থান যে অবশ্যম্ভাবী, সেটাও একেবারে উড়িয়ে দিতে পারছেন না বোধহয়?
এসব কিছুই নয়। স্টার জলসার ‘চুনি পান্না’ ধারাবাহিকে চুনির সঙ্গে শ্বশুরবাড়ির ভূত পান্নার ভাব হয়ে গেছে। ব্যবসায় পার্টনার হওয়ার পর থেকেই।
অতিমারি মানুষের হাসি কেড়েছে। সারাক্ষণ যেন প্রাণ হাতে করে মৃত্যুর দিন গোনা। এমন পরিস্থিতিতে মানুষ আর ভূতের পার্টনারশিপের মতো টক-মিষ্টি-ঝাল স্বাদের এই টুইস্ট কতটা মন ভাল করেছে দর্শকদের? জানতে আনন্দবাজার ডিজিটাল কথা বলেছিল ধারাবাহিকের মূল তিন চরিত্র চুনি, পান্না আর নির্ভীকের সঙ্গে।
আরও পড়ুন: হ্যাঁ, আমি প্রেম করছি, ক্রমাগত মিথ্যে গসিপের পরেও তাই এত খুশি: এনা
আরও পড়ুন: ‘প্রযোজক হলে রণবীর কপূরকে নিয়ে ছবি করব’, মুখোমুখি যিশু
মানুষের থেকে ভূত ভাল
অদ্ভুত ব্যাপার, ডাবল ইউনিটে কাজ করেও ক্লান্তি নেই তিন অভিনেতার। এই কৌতূহল দিয়েই আড্ডা শুরু, এত চাপেও ক্লান্তি উধাও কী করে? হাসতে হাসতে তুলিকা বসু, অন্বেষা হাজরা আর দিব্যজ্যোতি দত্তের উত্তর, এমন হরর কমেডিতে কাজ করলে ক্লান্তি পালাতে বাধ্য! এমন মজাদার গল্প মন ভাল করে দিচ্ছে নিমেষে।
ভূত আর মানুষের সহাবস্থান জমে গেছে তা হলে? একদম অন্যরকম কথা বললেন অন্বেষা ওরফে চুনি, ‘‘মানুষের থেকে ভূত অনেক ভাল। তাই পান্নার মতো এ রকম একাধিক ভূত পাশে থাকলে জীবন বদলে যাবে। আমি ভূত ভালবাসি।’’
পান্নাকে কী করে বশ করল চুনি? “ব্যবসার পার্টনার বানিয়ে। এই সম্মান তাকে তার স্বামীও দেয়নি। তাই চুনির কথায়,‘‘এই মাইয়্যাটা আমায় সেই সম্মান বা জায়গা দিচ্ছে”, হাসতে হাসতে জবাব দিলেন অন্বেষা।
ধারাবাহিকে ভূতের সঙ্গে নিত্য ওঠাবসা। বাস্তবে অন্বেষার ভূতে বিশ্বাস আছে? অন্বেষা ভূত নন, অতিলৌকিক শক্তিতে বিশ্বাসী। তিনি অনুভব করতে পারেন, একটা কিছু তো আছে। তবে আজও পর্যন্ত সেই শক্তি দেখে উঠতে পারেননি। তবে ভূতে ভয় নেই একটুও।
চুনির সঙ্গে পান্নার লড়াই লড়াই খেলা
ভূত নিয়ে, গল্প নিয়ে, মেগা নিয়ে, অভিনয় নিয়ে চুনি খুব এনার্জিটিক। পান্না ওরফে তুলিকা বসুও কি নিজের চরিত্র নিয়ে খুশি? আটপৌরে গলায় তুলিকার উত্তর, ‘‘ভূত কোনওদিন দেখিনি। ফলে, নিজেকে একটুও ভূত ভাবছি না। বরং আমি চুনির শ্বশুরবাড়ির একজন। জীবিত সময়ের কিছু মান-অভিমান নিয়ে চুনির সঙ্গে লড়াই লড়াই খেলা খেলছি।’’
ভূত না দেখেই ভূতের চরিত্রে এত স্বাভাবিক অভিনয়? তার মানে প্রচুর হোমওয়ার্ক? ‘একটুও না,’ মন্তব্য তুলিকার। তিনি পুরো কৃতিত্ব দিলন চিত্রনাট্যকার আর পরিচালককে। সঙ্গে মেকআপের গুণ তো আছেই। এই ত্র্যহস্পর্শেই নাকি পান্না এক বছর ধরে হিট।
‘পান্না’ তুলিকাকে পরিবার পছন্দ করে? হাসির সঙ্গে উত্তর, বাড়ির বাচ্চারা তাঁকে মেলাতে চেষ্টা করে। পর্দায় আর পাঁচজনের মতোই তুলিকা তাঁদের কাছে পান্না। শুধু বাড়ি ফেরার পর অবাক জিজ্ঞাসা, সাদা চুলটা কোথায় গেল?
করোনা আবহে মানুষ-ভূতের এমন হোম ডেলিভারি সার্ভিস সত্যি থাকলে কেমন হত? এ বার তুলিকা সিরিয়াস, ‘‘আমরা কিন্তু করোনা আবহ মনে রেখে এই গল্প দেখাচ্ছি না। তবে এখন মনে হচ্ছে, হলে বোধহয় মন্দ হত না।’’
দরজাটা বারবার খুলে গেল কী করে?
ভূতুড়ে মেগায় অভিনয় অথচ একজন অভিনেতাও ভূত দেখেননি, বিশ্বাস হয়? এই জায়গাটাই পূরণ করে দিলেন ধারাবাহিকের অন্যতম চরিত্র নির্ভীক ওরফে দিব্যজ্যোতি দত্ত। তার আগে প্রশ্ন ছিল, ‘জয়ী’ ধারাবাহিকে জয়ীর স্বামী থেকে চুনির স্বামী ‘নির্ভীক’। জার্নিটা কেমন? দিব্যজ্যোতি ভীষণ খুশি এই চরিত্র পেয়ে, “মানুষের সঙ্গে ভূতের থাকা সত্যিই দুর্লভ। গল্পটাও টিপিক্যাল শাশুড়ি-বউমা মার্কা নয়। আমিও একটু ভীতু আবার বউ পাশে থাকলে মাকেও কথা শোনাতে ছাড়ি না। সব মিলিয়ে বেশ মজার ব্যাপার। তাই তৃপ্তও এই ধারাবাহিকে কাজ করে”।
ভূতের সঙ্গে ব্যবসা কেমন হচ্ছে? ‘‘পুরো জমে গেছে। প্রথম দিনেই লাভ ১৮ হাজার টাকা! ভাবা যায়? পরের দিন যে পরিমাণে অর্ডার পেয়েছে চুনি-পান্না তাতেই লাভের টাকা ৫১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে’’, প্রচণ্ড হাসতে হাসতে জবাব দিলেন চুনির স্বামী।
পর্দায় ভূতের নিত্য আনাগোনা, বাস্তবে ভূত দেখেছে ‘নির্ভীক’? একটু থেমে দিব্যজ্যোতি জানালেন, ‘‘ভূত কিনা জানি না, তবে ঘটনার পেছনে যে অলৌকিক কিছু ছিল সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। দুর্গাপুর সিটি সেন্টারে শ্যালি বলে নামকরা নাচের স্কুল আছে। ওখানে স্যর মণীশ পলের কাছে আমরা ওয়ার্কশপ করতে গেছিলাম। রাতে থেকেছিলাম ওই স্কুলে। স্কুলের একতলার একটিই চাবি। সেটি ছিল বন্ধু রোহনের কাছে। আমরা দরকারে একাধিক বার ওপর-নীচ করেছি। আর প্রত্যেকবার দরজা আটকেছি। কিন্তু প্রত্যেকবার গিয়ে দেখেছি দরজা খোলা!
শেষে ওই ঘরের ভিতরের একটি ঘরের দরজাও খোলা দেখে আটকে এসেছিলাম সবাই। পরে বালিশ আনতে গিয়ে দেখি, সেটাও খোলা!
কী বলবেন একে? অদ্ভূতুড়ে কাণ্ড?’’
অনেক মাথা ঘামিয়েও দিব্যজ্যোতি বুদ্ধিতে এর ব্যাখ্যা খুঁজে পাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy