মাদ্রাজ হাইকোর্ট অন্তর্বর্তী জামিন দিলেও মুম্বই তাঁকে রেহাই দিচ্ছে কই! খবর, শিবসেনা (শিন্দে) পদাধিকারীদের অভিযোগের ভিত্তিতে অতি সম্প্রতি খার পুলিশ কৌতুকাভিনেতা কুণাল কামরার বিরুদ্ধে আরও তিনটি মামলা দায়ের করেছে। আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, মুম্বই পুলিশ এই তিনটি মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করতে পারে। অথবা তাঁর বিরুদ্ধে নোটিশ জারি করতে পারে। কারণ, মাদ্রাজ হাইকোর্টের অন্তর্বর্তিকালীন জামিনের আদেশ নতুন মামলাগুলির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
বিষয়টি খোলসা করেছেন আইনজীবী সয়াজি নাংরে। তাঁর কথায়, “মাদ্রাজ হাইকোর্ট কুণালকে অন্তর্বর্তিকালীন জামিন দিয়েছে। এখন কৌতুকাভিনেতার কাছে দু’টি বিকল্প। এক, তিনি এক সপ্তাহের মধ্যে যে কোনও মামলায় আগাম জামিনের জন্য মুম্বই দায়রা আদালতে যেতে পারেন। দুই, তিনি কেবলমাত্র নতুন তিনটি মামলার জন্যও জামিনের আবেদন করতে পারেন। প্রসঙ্গত, মাদ্রাজ হাইকোর্ট থেকে প্রথম মামলায় অন্তর্বর্তিকালীন আগাম জামিন পাওয়ার অর্থ, প্রথম মামলার জন্য ৭ এপ্রিলের আগে মুম্বই পৌঁছোলেও কুণালকে মুম্বই পুলিশ গ্রেফতার করতে পারবে না।” আইনজীবীর আরও বক্তব্য, “তবে ২৮ মার্চ দায়ের করা নতুন তিনটি মামলার কারণে কুণাল গ্রেফতার হতে পারেন। দায়রা আদালত তাঁর জামিনের আবেদন প্রত্যাখ্যান করলে অভিযুক্ত হাইকোর্টে যেতে পারেন। একই ভাবে হাইকোর্টে আবেদন মঞ্জুর না হলে তাঁর জন্য সুপ্রিম কোর্টের দরজা খোলা রয়েছে।”
কুণাল কামরার বিষয়টি ক্রমশ জটিল থেকে জটিলতর হয়ে ওঠায় জনসাধারণের পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে চর্চা চলছে আইনজীবীদের মধ্যেও। অন্য এক আইনজীবী আভা সিংহের মতে “একই অপরাধের জন্য কুণাল কামরার বিরুদ্ধে একাধিক এফআইআর হলে অভিযুক্ত সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারেন। ‘বাবুভাই বনাম গুজরাত সরকার মামলা’র দৃষ্টান্ত দেখিয়ে সমস্ত এফআইআর একত্রিত করার অনুরোধও জানাতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী প্রতিটি পৃথক এফআইআরের জন্য কামরাকে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা-র ধারা ৪৮২-এর অধীনে নতুন করে আগাম জামিনের জন্য আবেদন করতে হবে। একাধিক এফআইআর একই ঘটনা থেকে হলে পরবর্তী কালে যখন তিনি আগাম জামিনের আবেদন করবেন, তখন তাঁর আগাম জামিনের দাবি আরও শক্তিশালী হবে।”
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত, ২৩ মার্চ, কুণাল সমাজমাধ্যমে তার ‘নয়া ভারত’ শীর্ষক বিশেষ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ, শিল্পপতি মুকেশ আম্বানী, তার ছেলে অনন্ত আম্বানী, আনন্দ মাহিন্দ্রা এবং মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্দে সম্পর্কে তির্যক মন্তব্য করেন। তার পরের দিনই শিবসেনা (শিন্দে গোষ্ঠী) বিধায়ক মুরজি পটেলের অভিযোগের ভিত্তিতে খার পুলিশ কামরার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করে। তড়িঘড়ি কুণাল মাদ্রাজ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। সেখানে তাঁকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত অন্তর্বর্তিকালীন জামিন দেওয়া হয়।