লীনাকে ছবির প্রস্তাব দিয়েছিলেন কিশোর
বিনা রেওয়াজে সঙ্গীতের উপর তাঁর যে দখল, তা অনুশীলন করেও আয়ত্ত করতে পারেননি বহু সঙ্গীত- তারকা। বলিউডের কিংবদন্তি গায়ক কিশোরকুমার কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে আজও অমর। ৪ অগস্ট, ২০২২। শিল্পীর ৯৩তম জন্মবার্ষিকীতে স্মৃতিমেদুর হয়ে পড়লেন পুত্র অমিত কুমার। মুম্বইয়ের এক সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে জানালেন, শেষমেশ চতুর্থ বিবাহে লীনা চন্দভরকরের সঙ্গেই সুখী হয়েছিলেন কিশোর।
১৯২৯ সাল। মধ্যপ্রদেশের খান্ডোয়ায় এক বাঙালি ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্ম নিয়েছিলেন আভাসকুমার গঙ্গোপাধ্যায়। কর্মজীবনে তিনিই কিশোরকুমার হিসাবে পরিচিত হন। চার ভাইবোনের মধ্যে তিনিই ছিলেন সবচেয়ে ছোট। বাবা-মায়ের সবচেয়ে আদরের সন্তান।
অভিনেতা-গায়ক দাদা অশোক কুমার এক বার বলেছিলেন, "কিশোর গাইলে মাইক্রোফোনও ঠিক বুঝে যায়, কোন তন্ত্রীতে সুর বাজে ওর গলায়। তা বিধাতার দান। ওর সাফল্যের মূল কথাও এই।"
তবে ব্যক্তিজীবনে খামখেয়ালি, বিলাসী মানুষ ছিলেন কিশোর। শোনা যায়, টাকা জমানোর নেশা ছিল তাঁর। মাঝরাতে ঘুম ভেঙে টাকা গুনতেন। তাঁর জীবনে নারীর সংখ্যাও কম নয়।
‘মেরে সপনো কি রানি’-র গায়ক তাঁর মনের মানুষ পেতে একাধিক বিবাহ করেছিলেন। ১৯৫০ সালে পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের ভাইঝি রুমা দেবীর সঙ্গে সংসার পাতেন কিশোর। বিয়ে ভেঙে যায় ১৯৫৮ সালে। তার পর জীবনে আসেন মধুবালা। ১৯৬৯ সালে তাঁর অকালমৃত্যুর পর তৃতীয় বার বিয়ে করেন সঙ্গীততারকা। পাত্রী যোগিতা বালি। যদিও দু’বছরেই দাম্পত্যের অবসান। শেষমেশ কিশোরকে সুখের আশ্রয় দেন লীনা। তখন কিশোর মহীরুহ। কেবল গায়ক নন আর, তিনি তখন বলিউডের জনপ্রিয় সুরকার, প্রযোজক, পরিচালক তথা চিত্রনাট্যকার।
ছেলে অমিতের কথায়, ‘‘লীনার সঙ্গেই আনন্দের আকাশ পেয়েছিলেন বাবা। তাঁকে ‘মমতা কি ছাঁও মে’-ছবিতে একটি চরিত্রের প্রস্তাবও দিয়েছিলেন, যখন লীনা সদ্য তাঁর স্বামী হারিয়েছিলেন। বাবা তখন মুম্বইয়ে দু’টি ছবির কাজ করছিলেন। লীনাও স্বামীর শোক ভুলে জীবনছন্দে ফিরতে বাবার প্রস্তাবে রাজি হন। অবসাদ কেটে যায়। তবে বিয়ের প্রস্তাব যখন দিয়েছিলেন বাবা, শুরুতেই রাজি হননি তিনি। পরে অবশ্য রাজি হন।’’ ২০২২-এর শুরুতে লীনা নিজেও এক সাক্ষাৎকারে জানান, কিশোর তাঁকে দেখার পরপরই প্রেমপ্রস্তাব দেন। এক রিয়্যালিটি শো-র মঞ্চে বলেন, “আমি থিতু হতে চেয়েছিলাম। তাই কিশোরের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করি শুরুতে। পরে যখন স্পষ্ট করেন যে তিনি আমাকে বিয়ে করতে চান, আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। সেই প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করেছিলাম। তবে কয়েক সপ্তাহ পর, বাড়িতে তুমুল অশান্তি শুরু হয়। আমার বাবা আমায় ‘ঝঞ্ঝাট’ বলেছিলেন। আমি এতটাই রেগে গিয়েছিলাম যে আমি আমার বাড়ি ছেড়ে অন্য কাউকে বিয়ে করে আমার জীবনযাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমার এখনও মনে আছে, কার্টার রোডে (মুম্বইয়ে) গিয়ে কিশোরজিকে ফোন করার কথা। আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, এখনও আমায় চান কি না! যদি হ্যাঁ হয়, আমি তাঁকে বিয়ে করতে প্রস্তুত। এ ভাবেই আমাদের বিয়েটা হয়ে যায়।’’
আশির দশকের শুরুতে নতুন জীবন শুরু করেছিলেন কিশোর-লীনা। কিশোর-লীনার সন্তান সুমিত। কিশোর অসম্ভব ভালবাসতেন লীনা ও তাঁর সন্তান সুমিতকে। সুখী হয়েছিলেন জীবনে। তবে সে সুখও দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ১৯৮৭ সালের অক্টোবর মাসে পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে চলে যান সুর-তারকা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy