Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Karar Oi Louho Kopat Controversy

গানের চুক্তিপত্র প্রকাশ্যে আনার দাবি জানিয়েছিলেন পৌত্রী, কী বললেন নজরুল-পৌত্র?

‘কারার ওই লৌহ কপাট’ গানটির স্বত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অনিন্দিতা কাজীর উদ্দেশে জবাব দিলেন কাজী অনির্বাণ।

Image of A R Rahman, Anindita Kazi and Kazi Anirban

(বাঁদিক থেকে) অনিন্দিতা কাজী, এ আর রহমান এবং কাজী অনির্বাণ। ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৩ ১৭:৪৮
Share: Save:

‘কারার ওই লৌহ কপাট’ বিতর্কে গানটির স্বত্ব হস্তান্তর কী ভাবে হয়েছিল, তা জানতে চেয়েছিলেন কাজী নজরুল ইসলামের পৌত্রী অনিন্দিতা কাজী। সমাজমাধ্যমে একটি পোস্টে অনিন্দিতা লেখেন, ‘‘২০২১ সালে কী এগ্রিমেন্ট হয়েছিল সেটা জানা খুব প্রয়োজন, তা হলে সব বিতর্কের অবসান হবে। এবং যাঁরা এগ্রিমেন্ট-এর বিপক্ষে গিয়ে এই কাজটি করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া যাবে।’’ এরই সঙ্গে অনিন্দিতা জানান, এই গানের চুক্তিপত্র রয়েছে তাঁর দাদা কাজী অনির্বাণের কাছে। ঠিক কী ভাবে এই গানটির স্বত্ব প্রযোজককে দেওয়া হয়েছিল? অনিন্দিতার দাবি কতটা সত্য? উত্তরের সন্ধানে আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে অনির্বাণের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।

২০২১ সালে ‘পিপ্পা’ ছবিতে ব্যবহারের জন্য কাজী নজরুলের পরিবারের তরফে গানটির স্বত্ব নেন প্রযোজক। আনন্দবাজার অনলাইনকে অনির্বাণ বললেন, ‘‘প্রথমে আমার মা-কে (কল্যাণী কাজী) ওঁরা ফোন করেন। তার পর আমার সঙ্গে কথা হয়। পুরো বিষয়টা জানার পর মা খুবই উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন। কারণ, এই ছবির সঙ্গীত পরিচালক এ আর রহমান।’’ অনির্বাণ জানালেন, ‘কারার ওই লৌহ কপাট’ গানটি ছবিতে আংশিক বা সম্পূর্ণ ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গানের সুর বা কথা পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়া হয়নি। অনির্বাণের কথায়, ‘‘মা কিন্তু ওঁদের কাছে গানের চূড়ান্ত সংস্করণটি শুনতে চেয়েছিলেন। তখন জানতাম, মাস ছয়েকের মধ্যে ছবিটা মুক্তি পাবে। পরে দু’বছর কেটে গেল। গানটাও আর ওঁর শোনা হয়ে ওঠেনি।’’ এর পর অতিমারির জন্য রাজাকৃষ্ণ মেনন পরিচালিত ছবিটির মুক্তি পিছিয়ে যায়। গত মে মাসে প্রয়াত হন কল্যাণী কাজী। সে কথা মনে করিয়ে অনির্বাণ বললেন, ‘‘আমরাও তার পর বিষয়টা ভুলে যাই। কিন্তু এখন যা দেখছি, সেটা মেনে নেওয়া কঠিন।’’

অনিন্দিতা জানান, চুক্তিপত্র রয়েছে তাঁর দাদা অনির্বাণের কাছে। অনির্বাণ ছাড়া পরিবারের বাকিরা কি এই গান ব্যবহারের বিষয়টি নিয়ে অবগত? আনন্দবাজার অনলাইনকে অনির্বাণ বললেন, ‘‘সবাই জানে। আমার ভাই অরিন্দমকেও চুক্তিপত্র দিয়েছি। মিথ্যে বললে আমি কী করতে পারি!’’ অনির্বাণের দাবি, বড় মাপের কাজ বলেই পরিবারের সকলে বিষয়টা জানতেন। তাই চুক্তিপত্র এখন প্রকাশ্যে আনার দাবি তাঁর কাছে বোধগম্য হচ্ছে না। কিন্তু অনিন্দিতা কি চুক্তিপত্রের প্রতিলিপি পেয়েছেন? অনির্বাণ বললেন, ‘‘আমি জানি, মা ওকে বিষয়টা জানিয়েছিলেন। তা হলে কি অনিন্দিতা বলতে চাইছে, বিগত দু’বছর মায়ের সঙ্গে ওর কোনও যোগাযোগ ছিল না? এখন এ সব অযৌক্তিক কথা বলার অর্থ কী, জানি না।’’

এই বিতর্ক বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক মহলেও ঝড় তুলেছে। তবে নজরুলের সৃষ্টি নিয়ে ‘ত্রুটি-বিচ্যুতি’ যে আগেও ঘটেছে, সে কথা মনে করিয়ে দিতে চাইলেন অনির্বাণ। গত বছর বাংলাদেশের ‘কোক স্টুডিয়ো’ অনুষ্ঠানে নজরুলের কবিতা অবলম্বনে ‘বুলবুলি’ গানটি তৈরি হয়। অনির্বাণ বললেন, ‘‘সে বারেও তো গানের শেষে দুটো লাইন নির্মাতারা জুড়ে দিয়েছিলেন। সেটা তো দাদুর লেখা নয়!’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE