কৌশিক সেন। গ্রাফিক্স: সনৎ সিংহ।
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ মিছিলে পথে নামলেন সপরিবার কৌশিক সেন। সোমবার বিকেলে কলেজ স্কোয়্যার থেকে এই মিছিল শুরু হয়। আনন্দবাজার অনলাইনকে কৌশিক জানিয়েছেন, মূলত তাঁর স্ত্রী রেশমির উদ্যোগেই মিছিলে যোগ দিচ্ছেন তিনি, ঋদ্ধি, সুরঙ্গনা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিনেতার কথায়, “মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়ারা যোগাযোগ করেছিলেন রেশমির সঙ্গে। অনুরোধ জানিয়েছিলেন মিছিলে শামিল হওয়ার জন্য। অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও মানবিকতার খাতিরে সঙ্গে সঙ্গে রেশমি রাজি হয়।” প্রসঙ্গত, দিন কয়েক ধরেই বাংলাদেশ-সহ একের পর এক ঘটনা ঘটছে। প্রতি বারের মতো এ বার কৌশিক-সহ অনেক বুদ্ধিজীবীই সরব নন কেন? এই প্রশ্ন উঠেছে সমাজমাধ্যমে। বাংলাদেশ প্রসঙ্গে নেটাগরিকদের সঙ্গে এই প্রশ্ন তুলেছেন রাজনীতিবিদ তথাগত রায়ও। এ প্রসঙ্গেও মুখ খুলেছেন অভিনেতা। জানিয়েছেন, ‘আমি আছি’ বোঝাতে গিয়ে তিনি কোনও ভুল দলের সঙ্গে থাকবেন না।
আনন্দবাজার অনলাইনকে রেশমি জানিয়েছেন, ছাত্ররা আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বলে তো বটেই, না জানালেও তিনি এ দিন মিছিলে পা মেলাতেন। তাঁর দাবি, সবার আগে তিনি এক জন নারী। তার পর তাঁর বাকি পরিচয়। সেই অনুভূতি থেকেই তিনি সপরিবার প্রতিবাদ জানাতেন। এর আগে নন্দীগ্রাম-সিঙ্গুর আন্দোলন-সহ একাধিক ঘটনায় প্রতিবাদের মুখ কৌশিক। পর পর দু’টি ঘটনায় চুপ তিনি। পুরোটাই সচেতন ভাবে? প্রশ্ন রাখতেই কৌশিক বললেন, “প্রথম কথা, আমি সমাজমাধ্যমে নেই। ফলে, বাকিদের মতো সেখানে প্রতিবাদী বার্তা ভাগ করে নিতে পারিনি। দ্বিতীয়ত, যাবতীয় পথে নামার পিছনে কোনও না কোনও রাজনৈতিক দল থাকে। আমি কোনও রাজনৈতিক দলের তকমা গায়ে পরতে রাজি নই।” তাঁর যুক্তি, এই মিছিলটি মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রেরা আয়োজন করেছেন। ২০২২-এও এঁদের ডাকা মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। এ বারেও তাই তিনি যোগ দিয়েছেন। তিনি জানেন, বাকি সমস্ত বুদ্ধিজীবী মঞ্চের নেপথ্যে কোনও না কোনও রাজনৈতিক দল থাকে। রাজনীতিকে বাদ দিয়ে কোনও মঞ্চ তৈরি হচ্ছে না। কৌশিকের দাবি, “এই মুহূর্তে সব কিছুতেই রাজনীতি জুড়ে যাচ্ছে। যত ক্ষণ না অরাজনৈতিক মঞ্চ তৈরি হচ্ছে, তত ক্ষণ আমার মতো আরও অনেককে আরওই পথে দেখা যাবে না।”
এই প্রতিবাদ মিছিলের পাশাপাশি ১৮ অগস্ট, রবীন্দ্রসদনে ‘হ্যামলেট’ নাটক মঞ্চস্থ হওয়ার আগে আবার তিনি প্রতিবাদ জানিয়ে অভিনয় শুরু করবেন। কৌশিকের কথায়, “হাউসফুল শো। এগারোশো-বারোশো লোক থাকবেন। ওঁদের কাছে নিজেদের মত তুলে ধরেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে।” এই প্রসঙ্গে তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মৃত স্বপ্নদীপ কুন্ডুর কথা মনে করান। ৯ অগস্ট স্বপ্নদীপের মৃত্যুর এক বছর পূর্তি ছিল। কৌশিকের ক্ষোভ, “বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে দেখি, সেখানকার ছাত্রদের মধ্যেই তেমন সাড়া নেই! বাংলাদেশ, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রয়াণ, তার পরেই আরজি কর-কাণ্ড। ঘটনাপ্রবাহে আগের ঘটনা চাপা পড়ে যাচ্ছে। অথচ এক বছর আগে এই স্বপ্নদীপের জন্যই উত্তাল হয়েছিল কলকাতা। সেই ছাত্রটিও কিন্তু অত্যাচারের শিকার হয়েই মারা গিয়েছিল।” কৌশিকের মতে, বুদ্ধিজীবীদের সমালোচনার আগে সমাজের সর্ব স্তরের দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন। এখনকার মানুষের হাতে সময় নেই। যখন একটি প্রতিবাদের ঢেউ ওঠে তখন সেই ঢেউয়ের হুজুগে অসংখ্য প্রতিবাদ দেখা যায়। কিন্তু পরে সেই ঘটনা নিয়ে আর কেউ খবর রাখেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy