অভিনয় করতে গিয়ে পরিচয় হারিয়ে গেল শাবানার। বিধুবিনোদ তাঁর নাম পাল্টে দিলেন। ছবির চরিত্রের নাম ‘নেহা’-ই হল শাবানার নতুন পরিচয়। পরবর্তী সময়ে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘নেহা’ নামের সঙ্গে কোনওদিন একাত্ম হতে পারেননি তিনি।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৫:৫১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
বিধু বিনোদ চোপড়ার ছবি ‘করীব’ বক্স অফিসে সফল হয়নি। কিন্তু বলিউড তথা দর্শককে নতুন নায়িকা উপহার দিয়েছিল ছবিটি। কিন্তু তিনি অকালে হারিয়ে গিয়েছেন ইন্ডাস্ট্রি থেকে। বলিউড-বিস্মৃত নায়িকাদের মধ্যে অন্যতম এই ছবির নায়িকা নেহা।
০২২০
নেহার বিপরীতে ববি দেওলেরও এটা ছিল কেরিয়ারের প্রথম ছবি। স্টারকিড হওয়ার সুবাদে তিনি কিছুটা হলেও থাকেন ফিল্মি আলোচনায়। কিন্তু নায়িকা নেহা আজ বিস্মৃত। ববি দেওল ও নেহা, দু’জনের কেরিয়ারই থমকে গিয়েছে অসময়ে।
০৩২০
নেহার আসল নাম শাবানা রাজা। জন্ম ১৯৭৫ সালের ১৮ এপ্রিল। তাঁর বাবা ছিলেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। মা, গৃহবধূ। কোনওদিনই অভিনেত্রী হওয়ার ইচ্ছে ছিল না শাবানার। তিনি দিল্লিতে পড়াশোনা করছিলেন। সে সময় বিধুবিনোদ চোপড়ার ইউনিটের নজরে পড়ে যান।
০৪২০
পরিচালক বিধুবিনোদ এমন মুখ খুঁজছিলেন, যিনি ইন্ডাস্ট্রিতে এক ঝলক টাটকা বাতাস নিয়ে আসবেন। কিন্তু অভিনয়ের প্রস্তাবে একদমই রাজি ছিলেন না শাবানা। শেষে তাঁর বাবা মায়ের সঙ্গে কথা বলেন বিধুবিনোদ। তাঁদের সম্মতির পরে অবশেষে রাজি হন শাবানা।
০৫২০
কিন্তু অভিনয় করতে গিয়ে পরিচয় হারিয়ে গেল শাবানার। বিধুবিনোদ তাঁর নাম পাল্টে দিলেন। ছবির চরিত্রের নাম ‘নেহা’-ই হল শাবানার নতুন পরিচয়। পরবর্তী সময়ে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘নেহা’ নামের সঙ্গে কোনওদিন একাত্ম হতে পারেননি তিনি। বরং, ‘শাবানা’ নাম আড়ালে চলে যাওয়ায় অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়েছিলেন।
০৬২০
এরপর বলিউডে যত দিন অভিনয় করেছেন, পরিবর্তিত নামই ব্যবহার করেছিলেন তিনি। ১৯৯৯-এ ‘হোগি প্যায়ার কি জিত’ ছবিতে তিনি অভিনয় করেছিলেন অজয় দেবগণের বিপরীতে। ২০০০-এ নেহা জুটি বেঁধেছিলেন হৃতিক রোশনের সঙ্গে, ‘ফিজা’ ছবিতে।
০৭২০
২০০১-এ নেহা অভিনয় করেন ‘এহসাস: দ্য ফিলিং’, ‘রাহুল’ এবং একটি তামিল ছবিতে। ক্রমশ বলিউডে সুযোগ কমতে থাকায় তিনি দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রিতে পা রেখেছিলেন। কিন্তু সেখানেও তাঁর ভাগ্য অপ্রসন্নই থেকে যায়।
০৮২০
২০০৪ থেকে পরবর্তী তিন বছরে মাত্র তিনটি ছবিতে অভিনয় করেন নেহা। তার মধ্যে আছে ‘কোই মেরা দিল মেঁ হ্যায়ঁ’ এবং ‘আত্মা’-র মতো ভয়ের ছবিও। তার পর ইন্ডাস্ট্রি থেকে কার্যত বিদায়ই নেন নেহা।
০৯২০
২০০৬ সালে অভিনেতা মনোজ বাজপেয়ীকে বিয়ে করেন নেহা। পাঁচ বছর পরে জন্ম হয় তাঁদের একমাত্র সন্তান আভা নাইলাহ-র।
১০২০
মনোজের সঙ্গে নেহার আলাপ ১৯৯৮ সালে। সে বছর ‘করীব’ এবং ‘সত্য’ মুক্তি পেয়েছিল কয়েক দিনের ব্যবধানে। এক পার্টিতে নেহাকে প্রথম দেখেন মনোজ। পরে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন তেল জবজবে চুল আর ভারী চশমায় পার্টিতে বেমানান ছিলেন নেহা।
১১২০
কিন্তু নেহার ওই চেহারাই ভাল লেগেছিল মনোজের। ঠিক করেছিলেন বিয়ে করলে, এই মেয়েকেই করবেন। আট বছর প্রেমপর্বের পরে সাতপাকে বাঁধা পড়েন দু’জনে।
১২২০
তবে মনোজের এটা ছিল দ্বিতীয় বিয়ে। নব্বইয়ের দশকের গোড়ায় প্রথম বিয়ে করেছিলেন মনোজ। তাঁর কেরিয়ার তখনও তৈরি হয়নি। বলিউডে স্ট্রাগল করছেন তিনি।
১৩২০
তাছাড়া মনোজ সে সময় থাকতেন মুম্বই। তাঁর স্ত্রী থাকতেন বিহারে, তাঁদের পৈতৃক বাড়িতে। ফলে নানা বিষয় ঘিরে সমস্যা দেখা দিচ্ছিল। ১৯৯৫ সালে ভেঙে যায় মনোজের প্রথম বিয়ে।
১৪২০
মনোজকে বিয়ে করার পরে নেহা ফিরে যান তাঁর আসল নাম ‘শাবানা’-য়। এই পরিচয়েই ২০১১ সালে তিনি অভিনয় করেন ‘আলিবাগ’ ছবিতে। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর কামব্যাক সফল হয়নি।
১৫২০
তবে ‘ব্রেক’, ‘কামব্যাক’ শব্দগুলি নিয়ে আপত্তি আছে নেহার। তাঁর মতে, তিনি অন্যান্যদের তুলনায় বেছে বেছে কম কাজ করেছেন ঠিকই। কিন্তু বলিউড থেকে বিদায় নেননি।
১৬২০
এ কথাও স্বীকার করেন, বিয়ের পরে অভিনয় করা কমিয়ে দিয়েছেন। কারণ তিনি স্বামীর সঙ্গে বেশি সময় কাটাতে চান। যদিও মনোজ চান, তাঁর স্ত্রী আবার অভিনয়ে ফিরে আসুক।
১৭২০
শাবানা ওরফে নেহার অবশ্য আবার ইন্ডাস্ট্রিতে ফিরে আসার কোনও ইচ্ছে নেই। তিনি খুশি ‘মিসেস মনোজ বাজপেয়ী’ পরিচয়ে ঘর সংসারের ঘেরাটোপেই। তবে জানিয়েছেন, বিহারে শ্বশুরবাড়ির এলাকায় তিনি এখনও পরিচিত ‘নেহা’ নামে। সেখানে তাঁকে সবাই মনে রেখেছেন ‘ফিজা’, ‘হোগি প্যায়ার কে জিত’ ছবির নায়িকা হিসেবে।
১৮২০
মনোজ এবং শাবানা দু’জনেই পার্টিতে যেতে অপছন্দ করেন। বাড়ির ব্যালকনিতে চায়ের কাপ হাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গল্প করাই তাঁদের একান্ত ‘নিভৃত সময়’।
১৯২০
তারকাসুলভ আচরণকেও জীবন থেকে দূরেই রেখেছেন বাজপেয়ী দম্পতি। দরকার হলে শুটিংফেরত দোকানবাজার করে বাড়ি ফেরেন মনোজ। ছুটির দিনে মেয়েকে নিয়ে দু’জনে যান শপিং মলে। সাধারণ দম্পতির মতোই ভালবাসেন অবসর কাটাতে।
২০২০
কাজের দুনিয়াকে দু’জনে ঘরের চৌকাঠের ওপারেই রাখতে পছন্দ করেন এই দম্পতি। টিনসেল টাউনের রোশনাই থেকে দূরে নতুন জীবন উপভোগ করছেন ববি দেওল, হৃতিক রোশনের নায়িকা।