জাহ্নবী
একটি ফ্যাশন শোয়ের জন্য বুধবার কলকাতায় এসেছিলেন জাহ্নবী কপূর। টানা তিন ঘণ্টা অপেক্ষার পরে তাঁকে পাওয়া গেল। এক গাল হেসে সাংবাদিকের নাম জানতে চাইলেন। শুরু হল বার্তালাপ।
সম্প্রতি ওয়েব প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পেয়েছে তাঁর ‘গোস্ট স্টোরিজ়’। আবার হাতে রয়েছে রাজকুমার রাওয়ের সঙ্গে হরর কমেডি ‘রুহি আফজ়ানা।’ সেই বিষয়ে কথা উঠতেই বললেন, ‘‘আমি হরর ফিল্মের ভীষণ ভক্ত। কিন্তু হরর ছবিতে অভিনয় করে ভূতের ছবি দেখার মজাই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কারণ ‘বিহাইন্ড দ্য সিন’ আসলে কী হয়, তা আমি এখন জানি। ছবিতে কিছু দেখালেই মনে হয়, এটা তো সিলিং থেকে ঝুলিয়ে রেখেছে, এ তো প্রস্থেটিক মেকআপ করেছে... ভয় লাগে না আর সে ভাবে। সেটাই যা দুঃখের।’’ পরপর হরর ছবি কেন? এটা কি জেনেবুঝেই সিদ্ধান্ত? ‘‘একেবারেই না। ভূতের ছবি ছাড়াও তো আমার হাতে গুঞ্জন সাক্সেনার বায়োপিক, ‘দোস্তানা টু’, ‘তখত’-এর মতো ছবিও তো রয়েছে।’’ বিভিন্ন ধরনের চরিত্রেই অভিনয় করছেন জাহ্নবী। প্রত্যেকটি চরিত্রই ব্যক্তি জাহ্নবীর চেয়ে অনেক আলাদা। একমাত্র ‘দোস্তানা টু’-এর চরিত্রটি অনেকটা তাঁরই মতো। ছবি প্রসঙ্গে বেশি কিছু যাতে বলে না ফেলেন, তাই আর খোলসা করলেন না। কিন্তু কেরিয়ারের শুরুতেই ওয়েব প্ল্যাটফর্ম বাছলেন কেন? স্পষ্ট উত্তর, ‘‘জ়োয়ার (আখতার) সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছে ছিল। তাই আর ভাবিনি এটা ওয়েব না বড় পর্দা।’’
কথা বলতে বলতেই তিনি খোঁজ নিলেন তাঁর ‘অর্জুন ভাইয়া’ হোটেলে পৌঁছেছেন কি না। এই ফ্যাশন শোয়ে জাহ্নবীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন অর্জুন কপূরও। দাদা-বোনের রসায়ন সম্পর্কে আগেই আভাস পাওয়া গিয়েছিল ‘কফি উইথ কর্ণ’ এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাঁদের একত্র উপস্থিতিতে। ইদানীং প্রায়শই অর্জুন, অংশুলা (কপূর), খুশি ও জাহ্নবীকে একসঙ্গে সময় কাটাতে দেখা যায়। অন্দরের রসায়নও কি ছবির মতোই? ‘‘অর্জুন ভাইয়া বেশির ভাগ সময়েই ট্রাভেল করে। তাই ও ফিরলে সপ্তাহে একবার অন্তত একসঙ্গে লাঞ্চ বা ডিনার করি। অংশুলা দিদির সঙ্গে আমি সবচেয়ে বেশি সময় কাটাই। আর খুশি তো আছেই। আমরা একসঙ্গে থাকলে কী যে করি, বলে বোঝাতে পারব না। আমাদের বাড়িটা একটা পাগলাগারদ, প্রত্যেকেই ক্রেজ়ি। আমার তো মনে হয়, আমাদের বাড়ি নিয়ে রিয়্যালিটি শো হতে পারে। এত এন্টারটেনিং আমাদের অন্দরমহল!’’
প্রাথমিক ভাবে ফ্যাশন ডিজ়াইনার হওয়ার ইচ্ছে থাকলেও, অভিনয় জগতেই হাতেখড়ি হয় জাহ্নবীর। তবে ফ্যাশন জগতের হাল-হকিকত সব হাতের মুঠোয় তাঁর। জাহ্নবীর পছন্দের ডিজ়াইনার অনামিকা খন্না সম্পর্কে তিনি বললেন, ‘‘যে ভাবে ভারতীয় ক্রাফ্টকে কনটেম্পোরারি স্টাইলে অনামিকা খন্না তুলে ধরেছেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয়।’’ তবে অভিনয়ই প্রিয় হয়ে উঠেছে শ্রীদেবী-কন্যার কাছে। নতুন ধরনের চরিত্র, সেই মতো প্রস্তুতি, নতুন শহরে যাওয়া... এই সব কিছুই উপভোগ করছেন তিনি। ঘুরতে ভীষণ ভালবাসেন। যেমন, শোয়ের জন্য কলকাতায় এসেছিলেন বলে তার পরের দিনটাও কী করে কাটাবেন, সেই পরিকল্পনা করে ফেলেছেন।
জাহ্নবী খেতেও খুব ভালবাসেন। তাঁর ইনস্টা অ্যাকাউন্ট ভরে পিৎজ়া, বিরিয়ানি, মিষ্টি আলুর পরোটা খাওয়ার ছবি-ভিডিয়ো। সত্যিই কি তিনি এ সব খান? না কি শুধু পোজ় দেন? হেসে বললেন, ‘‘কেন পোজ় দেব? আমি খেতে খুব ভালবাসি। কেউ আমার ডায়েট রেস্ট্রিক্ট করলে আমি খুব বিরক্ত হই। তাই আমি ওয়র্কআউট করি বেশি। রোজ জিম যাই। যাতে পছন্দের সব খাবার আমি খেতে পারি।’’ আর কলকাতার কোন খাবার পছন্দ? গুড়ের মতো মিষ্টি হেসে বললেন, ‘‘নলেন গুড়ের আইসক্রিম। ডিনারেই খাব।’’ কলকাতার শাড়িও খুব পছন্দের। বিশেষ করে ‘ধড়ক’ ছবিতেই একটি দৃশ্যের জন্য এখানকার শাড়ি পরতে হয়েছিল। তবে বাঙালিদের শাঁখা-পলাও তাঁর বেশ লাগে। নাম না বলতে পারলেও হাতে দেখিয়ে বুঝিয়ে দিলেন, ‘‘সাদা আর লাল চুড়ি দুটো খুব ভাল লাগে।’’ তবে তাঁর ‘ধড়ক’ কার জন্য, সে প্রসঙ্গে ব্লাশ করলেও উত্তর দিলেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy