মেয়ে নবন্যার সঙ্গে জিত।
করোনা, লকডাউন... এ সবের সঙ্গে সমঝোতা করে উঠতে উঠতেই আমপানের হানা। আবার সব কিছু লণ্ডভণ্ড। বিপর্যয় বোঝে না, কে সেলেব্রিটি কে সাধারণ! আমপান ক্ষত রেখে গিয়েছে আলিপুরে জিতের সাজানো বাড়িতেও। পর্দায় তিনি হিরো, অসম্ভবকে সম্ভব করেন। কিন্তু সাইক্লোনের রাতে জল ঢুকেছিল তাঁর বাড়িতেও। ফোনে বললেন, ‘‘সত্যিই ভীষণ ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। ভাবতে পারিনি এ রকম কিছু হতে পারে। গ্রাউন্ড ফ্লোরে লিফট, হোম থিয়েটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, এখন অবশ্য ঠিকও হয়েছে। তবে এ সব নিয়ে আমি ভাবছিও না। এটুকু ক্ষতি কিছুই না। সারা রাজ্যের যা অবস্থা, দেখে শিউরে উঠছি। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা, সব কিছু যেন তাড়াতাড়ি ঠিক হয়ে যায়।’’
ঝড়ের জন্য দিনদুয়েক জিতেরও রোজকার রুটিন এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল। তবে এখন আবার তা ছন্দে ফিরেছে। নিয়ম মেনে চলতে তিনি বরাবরই ভালবাসেন। প্রতিদিন এক্সারসাইজ়। একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া। এখনও যৌথ পরিবারেই থাকেন জিৎ। মা-বাবা, দুই ভাই, তাঁদের স্ত্রী ছেলেমেয়ে... সকলে মিলে। রোজ বিকেলে তাঁরা তিন ভাই ও ভাইপো মিলে চলে ফুটবল খেলা। ‘‘দিনের এই সময়টা আমি খুব এনজয় করি। তবে আপাতত খেলা বন্ধ। এক ভাইয়ের চোট লাগায়, আমাদের চারজনের টিম তিনজনের হয়ে গিয়েছে,’’ হেসে বললেন তিনি। তার পর সন্ধেবেলা জিম, কখনও ছাদে হাঁটা... এ ভাবেই সময় কেটে যাচ্ছে। তার মধ্যেই চেষ্টা চলছে, নিজেদের মন ভাল রাখারও। ‘‘পয়লা বৈশাখের দিনটা যেমন বাড়িতে নিজেদের মতো করে সেলিব্রেট করব বলে ঠিক করেছিলাম। ভাল রান্নাবান্না হয়েছিল। তার পর সবাই একসঙ্গে নতুন জামাকাপড় পরে খেতে বসলাম। ছোটখাটো একটা গেটটুগেদারের মতো,’’ বললেন এক আদ্যন্ত ফ্যামিলি ম্যান।
ব্যস্ত অভিনেতা পরিবারকে সময় দেওয়ার সুযোগ খুব একটা পান না। কিন্তু দীর্ঘ লকডাউনের কারণে এখন তিনি অনেক দিনই বাড়িতে। তাঁর সাত বছরের মেয়ে নবন্যা বাবাকে বানিয়েছে তার খেলার সাথী। ‘‘এখনও ও আমার পাশেই রয়েছে। এমনিতে নবন্যা অন্য চার কাজ়িনের সঙ্গে খেলতে বেশি ব্যস্ত থাকে। এখন আমিও ওর এক পার্টনার। নবন্যার সঙ্গে মাঝেমাঝেই বোর্ড গেম খেলি। তবে ওর তো অনলাইন পড়াশোনাও চলছে।’’ জিৎ যখন কথা বলছেন পাশ থেকে ভেসে আসছে তাঁর মেয়ের গলার আওয়াজ।
একান্নবর্তী পরিবারে কখনও একাকিত্ব বোধ করেননি জিৎ।
কথায় কথায় তারকা জানালেন, ঘরের কাজেও তিনি নাকি সাহায্য করছেন। তাঁর কথায় অবাক হয়েছি বুঝতে পেরে হেসে বললেন, ‘‘আমি যে হেল্প করছি, সেটা কিন্তু মিথ্যে নয়। আমার বউ তার একটা ভিডিয়ো বানিয়ে রেখেছে। আসলে ঘরের কিছু কিছু কাজ আমি অভিনয়ে আসার আগেও করতাম। এখনও করি। সিনেমায় আমাদের তো কত কাজ করতে হয়। আর আমার রান্নার ডিমান্ড রয়েছে বাড়িতে। আজও ভাবছিলাম কিছু একটা বানাই, কিন্তু এখনও সেটা হয়ে ওঠেনি।’’
স্ত্রী মোহনার সঙ্গে এতটা সময় আগে কখনও কাটাননি... ‘‘দু’জনে একসঙ্গে অনেক রাত অবধি বসে সিনেমা বা সিরিজ় দেখছি, যেটা আগে কখনওই হত না। সকালে নবন্যাকে স্কুলের জন্য তৈরি করতে হত, তাই মোহনাকে খুব ভোরে উঠতে হত। আমিও উঠে পড়তাম। এখন অবশ্য সে সব কোনও তাড়া নেই। ধীর গতিতে সময়ও কেটে যাচ্ছে।’’
একান্নবর্তী পরিবারে ভাই, মা-বাবা সকলের সঙ্গে থাকায় এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতেও কখনও একাকিত্ব বোধ করেননি জিৎ। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির ভবিষ্যৎই যেখানে অন্ধকার, সেখানে একজন অভিনেতা-প্রযোজক যে নিশ্চিন্তে থাকতে পারবেন না, তা অনুমান করা কঠিন নয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও জিৎ পজ়িটিভ আছেন, কারণ তাঁর পাশে আরও অনেকে রয়েছে। ‘‘জীবনে অনেক কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি। সেখান থেকেই শিখেছি কী ভাবে পজ়িটিভ থাকতে হয়। আর বিশ্বাস করি, অন্ধকার সময়টা কেটে যাবেই,’’ বিশ্বাস জিতের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy