পায়েল দে।
চলতি বছরের এপ্রিলেই খুশির বোল উঠেছিল অভিনেত্রী পায়েল দে এবং অভিনেতা দ্বৈপায়ন দাসের বাড়িতে। মাতৃত্বের আস্বাদ পেয়েছিলেন পায়েল। জন্ম হয়েছিল জনপ্রিয় ওই জুটির প্রথম সন্তান ‘মেরাক’-এর। সাময়িক বিরতি নিয়েই আবার কাজে ফিরেছেন পায়েল। কেমন কাটছে মাতৃত্ব-পরবর্তী জীবন? কেমন চলছে সংসার?
পায়েল বললেন, “মেরাক যখন সাড়ে ছয় মাস, তখন থেকে আবার ফুল ফ্লেজেড কাজ শুরু করছি। একটা কথা বলতে ইচ্ছে করছে জানেন, প্রেগন্যান্সির পর আবার যখন কাজ করব ভাবি, আশেপাশের অনেকেই ভুরু কুঁচকেছিল, ওই টুকু বাচ্চাকে রেখে কাজ করবে? ইত্যাদি নানা প্রশ্ন...। কিন্তু পরিবারকে সবসময় পাশে পেয়েছি। ওঁরা খুব সাপোর্টিভ। কারণ, যারা ওয়ার্কিং উওম্যান তাঁরা যদি অনেকদিন কাজের বাইরে থাকেন, তাঁদের কেমন যেন একটা অস্থিরতা তৈরি হতে থাকে। বাড়ির লোকেরা ভীষণভাবে ফিল করেছেন সেটা। আর সে জন্যই বোধহয় এত তাড়াতাড়ি আবার কাজের জগতে ফিরতে পেরেছি।”
সন্তান-কাজ ব্যালান্স করতে অসুবিধে হয়নি? পায়েলের ভাষায়, “আমি খুব লাকি যে প্রোডাকশন হাউজকে সবসময় পাশে পেয়েছি। আমি ওঁদের বলেছিলাম যে মিরাক যেহেতু খুব ছোট্ট, তাই লেট নাইট করা কিছুতেই আমার পক্ষে সম্ভব হবে না।”
এমনকি, কলকাতার বাইরে অর্থাৎ আউটডোর শুটও যে এই মুহূর্তে সম্ভব নয়, সে কথাও প্রযোজক সংস্থাকে স্পষ্ট করেই জানিয়ে দিয়েছিলেন পায়েল। আর সেই জন্যই এই মুহূর্তে কেন্দ্রীয় চরিত্রে দেখা যাচ্ছে না পায়েলকে। তবে তা নিয়ে একেবারেই আক্ষেপ নেই পায়েলের। পায়েল জানেন এখন যদি তিনি কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন, তাহলে মেরাকের জন্য রাখা সময়ে ঘাটতি হবে।
আরও পড়ুন-বিয়ের এক বছরের মধ্যেই বিচ্ছেদ হয়ে গেল এই বাঙালি অভিনেত্রীর
এ তো গেল আপনার কথা । কিন্তু মিয়াঁ-বিবি দু’জনেরই তো একই পেশা। সে ক্ষেত্রে দ্বৈপায়ন কতটা সময় দিতে পারেন সন্তানকে?
পায়েল বললেন, “দ্বৈপায়নের স্টুডিয়োটা আমাদের বাড়ির খুব কাছে। ও যখনই একটু সময় পায় বাড়ি চলে আসে। আমার বেলায় সেটা হয়না। আমার কাজের জায়গাটা একটু দূরে। ও ওই ব্যালান্সটা করে দিচ্ছে। সত্যি কথা বলতে কি বেবি, কেরিয়ার, সংসার এর মধ্যে ব্যালান্স করে চলার মধ্যে কিন্তু অদ্ভুত একটা মজা রয়েছে।”
তাহলে বলছেন স্বামী-স্ত্রীর এক পেশা হলে সুবিধেই হয়? বোঝাপড়াটা ভালই জমে?
দ্বৈপায়নের সঙ্গে পায়েল
পায়েলের কথায়, “আমার কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও অসুবিধে হয়নি।এটা নিয়েই অনেকের অনেক রকম বক্তব্য ছিল। কেউ বলেছিলেন, সেম প্রফেশন। অসুবিধে হবে। বিয়ে টিকবে কিনা! আমার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ উল্টো হয়েছে। আমার পরিস্থিতি দ্বৈপায়ন বুঝছে। আমি দ্বৈপায়নেরটা বুঝতে পারছি।”
আপনাদের জুটিটাকে কিন্তু ফ্যানেরা বেশ পছন্দ করেন? তা এই ‘সুখী দাম্পত্যের মন্ত্র’টা কী?
পায়েল হেসে বললেন, “একে অন্যের জীবনে হস্তক্ষেপ না করা। যেমন দ্বৈপায়ন খুব ভালবাসে সিনেমা দেখতে। আমার সেই মুহূর্তে হয়ত মনে হল যে এত খেটেখুটে এলাম। একটু গল্প করি। তায় আমি কিন্তু ওই সময় ওকে ডিস্টার্ব করিনা। কারণ, আমি জানি সিনেমা শেষ হয়ে গেলে ও নিজেই আমার সঙ্গে এসে কথা বলবে। একই জিনিস আমার ক্ষেত্রেও হয়। দু’জন দু’জনকে স্পেস দেওয়াটা খুব জরুরি।”
আরও পড়ুন- ‘ব্রেক আপের পর বাঁচার ইচ্ছে চলে গিয়েছিল’, বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি নেহার
কে বেশি রাগী দু’জনের মধ্যে? আপনি না দ্বৈপায়ন?
পায়েলের উত্তর, “আমরা দু’জনেই খুব ঠাণ্ডা মাথার। আমরা দু’জনেই যদি কোনও কারণে রেগে যাই সেটা মারাত্মক। সে ক্ষেত্রে দু’জনে দুটো আলাদা ঘরে বসে থাকি। আধ ঘন্টা বাদে সব ঠিক।ওই সময়টা তর্কে যাইনা।”
মা পায়েল এবং বাবা দ্বৈপায়নের সঙ্গে ছোট্ট মেরাক। ছবি-ফেসবুক।
তাহলে বলা যেতে পারে ভাবি মায়েদের কাছে পায়েল একটা গোল সেট করছে। যারা অন্তঃসত্ত্বা বা সদ্য মা হয়েছেন, তাঁদের জন্য কোনও বার্তা?
“অনেকে অনেক কিছু টিপস দেয়...এটা করবে না, ওটা করবে না। আমার মনে হয় ডাক্তার যা বলবে সেটাই ফলো করা উচিৎ। আমি কিন্তু প্রেগন্যান্সির সাড়ে সাত মাস পর্যন্ত কাজ করেছি।আমার ডাক্তার বলেছিলেন, যেটা ভাল লাগে সেটাই করবে। তাই করেছি। নেগেটিভ মন্তব্যগুলোকে জাস্ট পাত্তা দিইনি। আপানারাও তাই করবেন। খাবেন, দাবেন বিন্দাস থাকবেন। এপ্রিলে মেরাককে পেয়েছি। কাজ, সংসার, ছানা...এ সব নিয়েই দিব্যি কেটে যাচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy